
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সতের বছর বাড়ির বাইরে ছিলাম, হামলা- মামলায় জর্জরিত ছিলাম, ডিবির হারুন উত্তরার বাসিন্দা হওয়ায় ভয়াবহ সমস্যা ও আতংকে ছিলাম। শুধু আমি না, আমার পরিবারও আমার কারনে তটস্থ থাকতো। হারুন ও তার লোকজনের কারনে আতংকে থাকতো। শকুনের মত আমার বাড়ি ও পরিবারের দিকে নজর রাখত, পলাতক থাকা অবস্থায় কোন সময়ে বাড়ি আসি কিনা?
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনুস সজ্জন ব্যক্তি, সারা দুনিয়ায় তার নাম, যশ, খ্যাতি আছে। দেশ ও জাতি আশা করে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই রাষ্ট্র, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, ব্যাংক সেক্টর, জনপ্রশাস মন্ত্রণালয়, পুলিশ সংস্কার করে যত দ্রুত সম্ভব অবাধ, সুন্দর, নিরপেক্ষ নির্বাচন করে বিজয়ী সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে তিনি বিদায় নেবেন। এমন কথা বলছিলেন ঢাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সাবেক ছাত্রদল নেতা, রাজধানীর উত্তরার সন্তান কফিল উদ্দিন আহমেদ। উত্তরার নিজ অফিসে আলাপকালে ঢাকা- ১৮ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশি কফিলíউদ্দিন দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, চলমান রাজনীতি, দেশের অর্থনীতি, শেখ হাসিনা সরকারের পতন, ইউনুস সরকারের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মকাণ্ড, আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, দল ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক গন্তব্য নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন।
আলাপকালে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, রশিদ গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান কফিল জানান, দেশের অর্থনীতি আজ বিধ্বস্ত, হাসিনা সরকার নজির বিহীন দুর্নীতি করে দেশকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছেন। দেশে মেগা উন্নয়নের নামে মেগা লুটপাট হয়েছে। শেখ হাসিনার পরিবার ও গুটিকয়েক ব্যবসায়ী ব্যাংকে সেক্টরকে শেষ করে দিয়ে গেছেন, লক্ষ হাজার কোটি টাকা তারা পাচার করেছে। ব্যাংকে আজ টাকা নেই, দেশের ডলার সংকট বিদ্যমান, এলসি খোলা যাচ্ছে না, মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে গিয়েছে।
সাবেক সরকারের আমলে গুটি কয়েক ব্যবসায়ীর হাতে দেশ অর্থনীতি- ব্যাংক সেক্টর জিম্মি ছিল। আওয়ামী লীগ বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন, সচিবালয়, ক্যান্টমেন্ট সব কিছুকেই দলীয়করন করে শেষ করে দিয়েছে।
দলের লাখ লাখ নেতাকর্মীদের নামে মামলা করে দেশকে দানবের রাষ্ট্রে পরিনত করেছিল। গুম- খুন করে হাজার হাজার পরিবারকে পথে বসিয়ে দিয়েছে। কফিল আরোও জানান, গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন এবং ছাত্র জনতার জুলাই আগস্টের আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এই সরকারের পতন হয়েছে। একপর্যায়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে।
আওয়ামী লীগ আর কোন দিন এই দেশে রাজনীতি করতে পারবে না। জনগণ তাদের ঘৃণার সাথে প্রত্যাখ্যান করেছে। কফিল বলেন, তিন তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী, গনতান্ত্রিক আন্দোলনের আপোষহীন নেত্রী বেগম জিয়াকে দুই কোটি টাকার সাজানো, কল্পিত দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনা ক্ষমতার জোরে তাকে কারাবন্দী করে রেখেছিলেন, যে টাকা বেগম জিয়া কোন দিন টাচও করেননি। ফরমায়েশি রায়ে বেগম জিয়াকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তাকে রীতিমত অসুস্থ বানিয়ে ফেলা হয়েছে।
চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনার সরকার তাকে বিদেশ পর্যন্ত যেতে দেয়নি। কফিল বলেন, তারেক রহমানের দিক নির্দেশনায় বিএনপি এই জাতিকে মুক্তির পথ দেখিয়েছে। জিয়া পরিবারের যোগ্য উত্তরসূরী তারেক রহমান এই প্রজন্মের জনপ্রিয় নেতা। তিনি জানান, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি জনগনের রায় নিয়ে আবারও ক্ষমতায় আসবেন। দলের মনোনয়ন নিয়ে ঢাকা- ১৮ তে নির্বাচন করার ইচ্ছা আছে, সে লক্ষে তিনি উত্তরাতে কাজ করে যাচ্ছেন।