
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নারীর প্রতি সহিংসতা একটি সামাজিক ব্যাধি বলে আখ্যায়িত করেছেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নেত্রীরা। এ ব্যাধি চিরতরে বন্ধ করতে সমবেত আন্দোলনের বিকল্প নেই।
সোমবার বিকালে সংগঠনটির উদ্যোগে ‘পারিবারিক আইনে সমতা আনি, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ করি’-এই স্লোগানের আলোকে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস-২০২৪ পালন উপলক্ষ্যে এক র্যালিতে নেত্রীরা একথা বলেন।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে পুরনো পল্টন মোড় পর্যন্ত র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, জেন্ডার সমতাপূর্ণ মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা একটি বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে। সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতা, শারীরিক-মানসিক নির্যাতন, বাল্যবিবাহ, যৌতুক, বহুবিবাহ, যৌন হয়রানি, খুন, ধর্ষণ, নারীর প্রতি অধস্তন ও পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি, নারীবান্ধব আইনগুলোর যথাযথ প্রয়োগ না করতে পারা, বিচারিক কাজে দীর্ঘসূত্রিতার ফলে নারী উন্নয়ন তথা দেশের উন্নয়ন ব্যহত হচ্ছে। নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা নির্মূলে বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, সম্পত্তির অধিকার, সন্তানের অভিভাবকত্ব- এসব ক্ষেত্রে নারীর সমঅধিকার নিশ্চিত করা, অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়ন করা, নারী নির্যাতনে বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন ও যথাযথ প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব দেওয়াসহ সব শ্রেণির নাগরিক এবং তরুণ প্রজন্ম বিশেষত- ছাত্র সমাজের ভূমিকা শক্তিশালী করে গড়ে তোলার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা একটি সামাজিক ব্যাধি। সহিংসতার ঘটনা কেবল নারীর জীবনকেই বিপন্ন করে না বরং রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক অগ্রগতিতে বাধা প্রদান করে। তিনি নারীর প্রতি সহিংসতা নির্মূলে রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা নিশ্চিতের পাশাপাশি সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
র্যালিতে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস-২০২৪ পালন উপলক্ষ্যে গৃহীত স্লোগানের পাশাপাশি ‘নারীর অধিকার, মানবাধিকার; নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করো, করতে হবে’, ‘সম্পদ সম্পত্তিতে সমঅধিকার দিতে হবে, দিতে হবে’, ‘আদিবাসীদের স্বীকৃতি সংবিধানে দিতে হবে’, ‘মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার’, ‘নির্যাতনকারীর কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, হারিয়ে যেতে দেব না’, ‘মৌলবাদের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়।
এর আগে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সবার সমবেতভাবে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে র্যালির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় ।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতা, সম্পাদক, বেলাবো-টঙ্গী-নারায়ণগঞ্জ-সাভার জেলা শাখার সংগঠক, পাড়া কমিটির সদস্য, শ্রমিক নারী সংগঠনের প্রতিনিধি, গার্লস গাইড প্রতিনিধি, ঢাকা ওয়াইডব্লিউ সিএ’র শিক্ষার্থী, গণসাক্ষরতা অভিযানের প্রতিনিধি, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক এবং সংগঠনের কর্মকর্তারা র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা।