
অনলাইন ডেস্কঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের কিরণগঞ্জ সীমান্তে নোম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার এক পর্যায়ে ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। শনিবার বেলা বারোটার দিকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ বেলা তিনটা পর্যন্ত চলে। এ ঘটনায় দুই বাংলাদেশি আহত হয়েছে। কিরণগঞ্জ সীমান্ত থেকে এ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকে কেন্দ্র করে আলোচিত সেই চৌকা সীমান্তেও। এর বিস্তৃতি ঘটে সীমান্ত এলাকার তিন কিলোমিটার পর্যন্ত। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত ভারতীয়রা বাংলাদেশের জনগণকে লক্ষ্য করে হাতবোমা ছুড়েছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের সীমান্তবাসীরা লাঠিসোটা ও হাঁসোয়া নিয়ে সীমান্তে অবস্থান করছে। আহত বাংলাদেশি দু’জন হলেন-বিনোদপুর ইউনিয়নের ঘন্টোলা বিশ্বনাথপুর গ্রামের জিয়ারুল ইসলামের ছেলে রনি ও কারিগঞ্জ গ্রামের সেরাজুল ইসলামের ছেলে ফারুক। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ ছিল।
বিজিবি জানিয়েছে, এ ঘটনায় বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে বলেছে বিএসএফ। বিজিবির তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে ভারতীয়রা পিছু হটে এবং বিকেল ৪টার দিকে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে গাছ কাটার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ঘটা ঘটনায় ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে বলেছে বিএসএফ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, চৌকা সীমান্ত এলাকায় ৩০টি আমগাছ ও শতাধিক বরই গাছ ভারতীয়রা বাংলাদেশের ভূখ-ে ঢুকে কেটে ফেলেছে। দুজন বাংলাদেশি আহত হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে কালিগঞ্জ ঘুমটোলা গ্রামের রবু জানান, ফারুক মোটরসাইকেল যোগে সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি দেখার জন্য অবস্থান করার সময় ভারতীয়দের ছোঁড়া পাথরে মাথায় গুরুতর আহত হন।
আর মিঠুন নামের একজন জানান, রনি সীমান্তে বাঁশ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার সময় ১০-১২ জন ভারতীয় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে তার উপর আক্রমণ করে। এতে আহত হন রনি।
বিনোদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিজিবির সহযোগিতায় মাইকিং শুনে বিজিবিকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসি। এ সময় বিএসএফ ও ভারতীয় নাগরিকরা সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল, ককটেল ও পাথর নিক্ষেপ করে। এছাড়া ভারতীয়রা জয় শ্রীরাম সেøাগান দেয় এবং বাংলাদেশের নাগরিকরা নারে তাকবির, আল্লাহু আকবার সেøাগান দেয়। পরে আমাদের পাল্টা ধাওয়ায় তারা কাটা গাছ ফেলে পালিয়ে যায়।
৫৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তের মধ্যে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকাবাসীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সৃষ্টি হয়। পরে বিজিবির তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে ভারতীয়রা পিছু হটে এবং বিকেল ৪টার দিকে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে গাছ কাটার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ঘটা ঘটনায় ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে বলেছে বিএসএফ। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
সূত্রঃ দৈনিক ইনকিলাব