
ছাত্র জনতার সফল আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ৮ আগস্ট শপথ নেন নোবেলজয়ী ডক্টর মোহাম্মাদ ইউনুস। দেশের কৃতি সন্তান। নানা কারণে তিনি আলোচিত। সেই থেকে নন্দিত এই তারকা আজ অবধি ক্ষমতায় আছেন। ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে নতুন সরকারের কাছে ক্ষমতা দিয়ে তার চলে যাবার কথা। জানুয়ারির আজ ৩১ তারিখ, সরকারের মেয়াদ পাচ মাস পার হয়ে ছয় মাস ছুই ছুই। আসছে ৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে সরকারের মেয়াদ ৬ মাস পূর্ণ হবে।
এই ছয় মাসেই কি তিনি টায়ার্ড। কি করবেন তিনি? চারিদিকে এটা নিয়ে আলোচনা। নানান গুঞ্জন। রকমারি ফিসফাস। তিনি থাকছেন না, পদত্যাগ করে চলে যাবেন, এমন গুঞ্জন বহুবা শোনা গেলেও কার্যত সেটা বাস্তবে রুপ নেয় নি। ডক্টর ইউনুস অবশ্য অবলীলায় স্বীকার করেছেন তার দুর্বলতার কথা। ব্যর্থতার কথা। তিনি নিজ থেকেই স্বভাব সুলভ কণ্ঠে বলেছেন, তিনি রাজনীতির কিছুই বুঝেন না। রাজনীতিতে তিনি যথেষ্ট অনভিজ্ঞ। তবে, তিনি চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সফল হলে ভালো, না হলে তিনি চলে যাবেন।
জনস্রুতি আছে, এর আগেও তিনি নানান ঘটনায় বিরক্ত হয়ে পদত্যাগ করেছিলেন। এমেরিকান রাষ্ট্রদূত অনুনয় বিনয় করে পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নেন। এসব গুঞ্জন তাকে ঘিরে সব সময়েই আছে। ইউনুস পদত্যাগ করলে ২৪ এর গন অভ্যুত্থানের সমস্ত অর্জন শেষ, এমন চিন্তায় উদ্বিগ্ন দেশের রাজনৈতিক মহল। ছাত্র- জনতা যারা আন্দোলনে ছিলেন।
আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে, আবারও ক্ষমতাসীন হলে পরিনতি কি হবে এমন দুশ্চিন্তায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও। গত পাচ মাসে এমন শংকা- উদ্বিগ্ন- উৎকণ্ঠা- আতংক বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ পেয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় পক্ষে বিপক্ষে এই জাতীয় খবর সব সময়েই চলমান।
অন্যদিকে, রাজধানীতে ৫ আগস্ট থেকে আজ পর্যন্ত ১৭৭ দিনে আন্দোলন হয়েছে ১৩৮ টি। নানা সংগঠন ও গোষ্ঠীর ব্যানারে হচ্ছে আন্দোলন। যার বেশিরভাগই অচেনা। আন্দোলনকারীরা নিজেদের বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার দাবি করে আন্দোলনে নামছেন।
দাবি আদায়ে আন্দোলনকারীরা অবরোধ করেন রাস্তা। ঘেরাও করেন সচিবালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। ১ দিনে ১৭ টি স্পটে অবরোধের ঘটনাও ঘটেছে এই সরকারের আমলে। এতে যানজট, সময়ের অপচয়সহ নানা ভোগান্তি পোহাচ্ছে ঢাকার আমজনতা।
রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, এতদিন এক পক্ষ সব সুবিধা নিয়ে এসেছে, যারা পাননি তারা বেশিরভাগই আন্দোলনে নেমেছেন। এদের মধ্যে সরকারকে কেউ কেউ নাজুক ভাবছেন। অনেকেই দ্রুত দাবি আদায়ের চেষ্টায় নেমেছেন।
সচিবালয় ঘেরাও করে ১৯ আগস্টের আন্দোলন ছিল ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় স্থগিত এইচএসসি পরিক্ষাগুলো না দিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে ফল প্রকাশের দাবিতে। এর বিপরীতে পরিক্ষা নেওয়ার দাবিতেও আন্দোলন হয়৷ পরে যারা পাশ করেননি, তারাও নামে আন্দোলনে, ঘেরাও করেন শিক্ষাবোর্ড।
এই ১৯ আগস্টই রাজধানীর ১৭ টি পয়েন্টে চলে নানা দাবিতে অবরোধ, আন্দোলন। কারো দাবি চাকুরী স্থায়ীকরণ, কেউ চায়, বদলি, নিয়োগসহ নানা ইস্যু।
প্যাডেল চালিত রিকশাচালকদের আন্দোলন চলে টানা ৯ দিন। দিনের বিভিন্ন সময় সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট অবরোধ করেন। অন্তর্বর্তী সরকারের শুরুর দিকেই আন্দোলনে নামে আনসারের সদস্যরা। ২৫ আগস্ট সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ করে রাখে সচিবালয়।
রাজপথের আন্দোলনই নয়, এতদিনের বঞ্চিত বলে দাবি-দাওয়া আদায়ে অবস্থান, অনশন হয় সচিবালয়সহ সরকারি অফিসেও। বাদ যায়নি ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তারাও। নতুন বছরের শুরুর ২৮ দিনেই আন্দোলন হয়েছে ৪০ টি। আন্দোলন হয় ৪৩ বিসিএসে বাদ পড়াদের। ৪০ তম এসআই ব্যাচের অব্যাহতিপ্রাপ্তদের।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের দাবিতে, পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসী শব্দকে ঘিরে আন্দোলন সংঘর্ষ হয় ৪ দিন। বিডিআর সদস্যদের পরিবার, ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের আন্দোলনও হয়েছে এই মাসেই। এছাড়াও মঙ্গলবার সারাদেশের ট্রেন যোগাযোগই বন্ধ করে দেয় রানিং স্টাফরা। এই সব বিষয় নিয়ে যখন লিখছি, তখন তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে আমরন অনশনে।
অদ্ভুত এক দেশ বাংলাদেশ। কেউ কেউ বলেন, সব সম্ভবের দেশ বাংলাদেশ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ছয় ঋতুর দেশ বাংলাদেশে সবচেয়ে হিট ছবি বেদের মেয়ে জোসনা। দেশ স্বাধীনের পরে কয়েক হাজার ছবি মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল ছবি বেদের মেয়ে জোসনা।
এই ছবি কোন ক্যাটাগরিতে দর্শক প্রিয়তা পেয়েছে তা আজও দেশবাসীর অজানা। ছবি দেখতে না পেরে মানুষ আত্মহত্যাও করেছে। গ্রামগঞ্জ থেকে মানুষ গরুগাড়ি চড়ে শহরে এসে এই ছবি দেখেছে। এমনকি নাইট স্টে করে পরের দিন আবারও ছবি দেখে তারপর গ্রামে ফিরে গেছে।
একই ছবি বছরের পর বছর ধরে একই হলে চলেছে। প্রতিটি শোই ছিলো হাউজফুল। এমন ঘটনা দেশের চলচিত্র ব্যবসায় নজিরবিহীন। নায়িকা জোসনার নামে হাতের চুরি, ফিতা বিক্রি হয়েছে সেই সময়ে। হলে ছবি চলাকালীন সময়ে হলের সামনে নায়িকার নামে চুরি, ফিতা, লেজ বিক্রি হয়েছে মাসের পরে মাস।
ছবির নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন আমার সাথে আলাপকালে এক দিন বলেছিলেন, ছবি হিটের রহস্য তিনি নিজেও জানেন না। স্রেফ সাধারণ ছবি। একটি ফোক ছবি। খুব কম বাজেটের ছবি। সেই ছবিই হয়ে গেলো অসাধারণ ছবি। ব্যবসার এমন রেকর্ড আর কোন ছবি করতে পারবে কিনা, সন্দেহ আছে।
বেদের মেয়ে জোসনা শুধু দেশে নয়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও এই ছবি হিট হয়েছে। এমনকি সেখানে এই ছবি রিমেকও হয়েছে। এ দেশের আম জনতা কখন কি চায়, তা বোধ করি নিজেরাও জানে না। তা না হলে, একটি শাড়ি- লুংগি বা ৫০০ টাকার একটা নোট পেয়ে ভোটের রাত্রে সিদ্ধান্ত পাল্টে ভোট দেন ৫০০ টাকা দাতাকে। এমন ঘটনা দেশে হরহামেশাই ঘটে।
কথাগুলি এই জন্যই লিখলাম, দেশের মানুষ খুব শিঘ্রি অতীতের কথা ভুলে যায়। ৯০ এ স্বৈরাচার পতনের পর তাদের দুঃশাসনের কথা ভুলে গেছে। তাদের নির্যাতনের কথা ভুলে গেছে। আজও তিনজোটের রুপরেখা বাস্তবায়ন হয় নি।
রাজনীতি করা দলগুলি ২০০৬ এর ওয়ান ইলেভেন থেকে শিক্ষা নেননি। যে যখন ক্ষমতায় গেছেন, তিনিই তখন নিজেকে সর্বোচ্চ ক্ষমতায় নিয়ে গেছেন। ফলে নিজের অজান্তে ফ্যাসিস্ট সরকারের পরিণত হয়েছেন। ২০১৪ তে অগ্নি সন্ত্রাসের কথা মানুষ ভুলে গেছেন। ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার কথাও ভুলে গেছেন। ২১ শে আগস্ট চাঞ্চল্যকর গ্রেনেড হত্যা মামলা, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সব আসামিরাই আজ মুক্ত। রায় দিয়েছিলেন যে বিচারক, তিনিও ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়েছেন।
২০২৪ এ শেখ হাসিনাকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসেন ডক্টর ইউনুস। দেশের ৯৯ ভাগ মানুষ তখন ইউনুসের সরকারকে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়েছিল। ছাত্র- জনতার রাজপথের অদম্য শক্তিই ছিলো ইউনুসের বড় শক্তি। ইউনুস নিজেও একাধিকবার বলেছেন, ছাত্ররাই তার নিয়োকর্তা। বলতে দ্বিধা নেই জনমানুষের সেই ভালবাসা আজ হারিয়ে গেছে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা, সাবেক বিশেষ সহকারি মাহফুজ আলমকে তিনি এমেরিকাতে জুলাই- আগস্ট আন্দোলনের মাস্টার মাইন্ড হিসাবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। দেশবাসী তথা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ঘোর ভাংগে, যখন ইউনুস প্রথম তার সরকারে উপদেষ্টা পরিষদের ঘোষনা দেয়।
১৭ জন উপদেষ্টাদের মধ্যে ১১ জনই ছিলেন চট্রগ্রামের বাসিন্দা। ইউনুস সরকারকে অনেকেই তখন চট্রগ্রাম সমিতি বলে উল্লেখ করেন। আড়ালে আবডালে হাসিঠাট্টা করেন। চট্রগ্রামের ১১ জনের উপদেষ্টা হওয়া নিয়ে নাগরিক কমিটির মুখ্য সচিব সারজিস আলম পঞ্চগড় থেকে উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে বৈষম্যের প্রশ্ন তুললেও পরে তাকে এই নিয়ে আর কথা বলতে দেখা যায় নি।
সুত্র বলছে, উপদেষ্টাদের মধ্যে অন্তত চার থেকে পাচ জনার কোন পলিটিকাল ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। ইউনুসের মালিকানাধীন গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা থাকার সুবাদে তারা উপদেষ্টা হয়েছেন। এই জন্য অনেকেই এই সরকারকে এনজিও সরকার বলেও অভিহিত করে। ইউনুস সরকারে যারা আছেন তারা কোন কোঠায় উপদেষ্টা হয়েছেন, কি তাদের যোগ্যতা, সেটা নিয়ে বিশদ গবেষণা হতেই পারে।
জনপ্রিয় নাট্য পরিচালক মোস্তফা সারোয়ার ফারুকি, বশির আহমেদরা উপদেষ্টা হলে তাদেরকে নেয়া নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে। ডক্টর ইউনুস বা তার সরকার কেউই আজ পর্যন্ত জবাব দেন নি। এই দুই উপদেষ্টাকে নামানোর জন্য বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কঠোর কর্মসূচি এমনকি আল্টিমেটাম পর্যন্ত দিয়েছিল। কোন কাজ হয় নি। তারা বহাল তবিয়তেই আছেন।
অন্য দিকে, ইউনুসের কাছে পরাজয় মেনে নিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ঘরে উঠে যায়। ইউনুসের ব্যক্তিত্বের কারনে ছাত্ররা পিছটান দিলেও ইউনুসের সরকারের দুর্বলতা ফুটে উঠে। ইউনুসের চট্রগ্রাম প্রীতি বা এনজিও প্রীতি কেউই মেনে নিতে পারে নি। এসব কারনে সম্ভবনা থাকা স্বত্বেও ইউনুস সরকার তখন অনেকের জন্য বিরক্তের কারন হয়ে দাড়ায়। কচ্ছপের গতির আকার ধারন করে তখন ইউনুসের সরকার।
এর পরে সরকারে এসেই ৬৬৬ কোটি গ্রামীণ ব্যাংকের সুদ মাফ করে নেওয়া, ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে কটাক্ষ করে রিসেট বাটন চেপে দিয়ে ওসব তো সব ডিলিট হয়ে গেছে, এমন মন্তব্য করে তিনি দেশ বিদেশে যথেষ্ট সমালোচনার শিকার হন। মহানবী সা: এর স্ত্রীকে প্রথম ব্যবসায়ী মহিলা বলেও তিনি যথেষ্ট সমালোচনার শিকার হন। ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের আবেগের জায়গায় আঘাত করে তিনি মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরাগভাজন হন।৷ ভারত সরকারের বিরুদ্ধেও তিনি বেশ সোচ্চার থাকলেও ইদানিং চুপচাপ আছেন। ভারতকে তিনি সাইজ করতে গিয়ে পাকিস্তানমুখী হয়েছেন সম্প্রতি।
দেশে আজ রিজার্ভ নেমে এসেছে ২০ বিলিয়ন ডলারেরও কমে। ব্যবসা বানিজ্যে চরম অস্থিরতা। শতাধিক গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে গেছে, আরও অসংখ্য গার্মেন্টস বন্ধ হবার পথে। নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতিতে দম বন্ধ হয়ে আসছে মানুষের। লাখো শ্রমিক বেকার। ব্যাংক গুলিতে নগদ টাকার সংকট। দ্রব্য মুল্যে স্থিরতা নেই।
সারা দেশেই মানুষ আজ নিরাপত্তাহীন। পুলিশ বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও ক্ষেত্রবিশেষ আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন খারাপির শিকার হচ্ছে। নীরব চাদাবাজিতে দেশ আজ তটস্থ।
নির্দিষ্ট অংকের টাকা চাঁদা না পেয়ে বাড়ি থেকে নারীদেরকে তুলে নেয়াও হচ্ছে। মেয়েকে তুলে নিয়ে যাবার সময়ে মা নিজে এগিয়ে বলেছে, বাবা, ও ছোট মেয়ে, ওর বদলে আমাকে নিয়ে যাও এমন ঘটনা দেশের পত্রিকাতেও খবর বেরিয়েছে। ৫ আগস্টের আগে পরে থানা পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্রের একটি বড় অংশ এখনও উদ্ধার হয় নি।
এদিকে, অর্থনীতি নিয়ে গঠিত সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রতিনিয়ত অভিযোগ জরছেন, অর্থনীতি নিয়ে সরকারের কোন বিশেষ এটেনশন নেই, অথচ এটাতে সবচেয়ে বেশি নজর দেয়ার দরকার ছিলো। এমন একটি বিধ্বংসী পরিস্থিতিতে ডঃ ইউনুস কবে ভোট দেবেন, কিভাবে ভোট দেবেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
ইউনুস নিজেও বলেছেন, তিনি ভোট দিয়ে বিদায় নিতে চান। তবে, তার সরকারের কেউ কেউ কেউ দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে চায়। একটু কঠিন হলেও লিখছি, কেউই স্বাভাবিক পথে, স্বাভাবিক ভাব পদত্যাগ করতে চায় না, অতীতেও এমনটি বারবার ঘটেছে। সময়মতো কেউই পদত্যাগ করে বিদায় নিতে চাননি।
এই ইতিহাস বড় কঠিন। কেউই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না। ইতিহাস বড় নির্মম। বড়ই করুন। ৯০ তে এরশাদ পদত্যাগ করতে চাননি। ৯৬ তে বেগম জিয়াও পদত্যাগ করতে চান নি।
২০০১ এ আওয়ামী লীগও পদত্যাগ করে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চাননি। ২০০৬ এ বিএনপিও সহজে পদত্যাগ করতে চায় নি। পরের ইতিহাস সবার জানা। দলটি ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে। ২০০৯ এ ক্ষমতাসীন হয়ে নানামুখী ম্যাকানিজম করে ২০২৪ পর্যন্ত ক্ষমতা আকড়ে রেখেছিলেন শেখ হাসিনা। তাসের ঘরের মতো মুহুর্তেই উড়ে গেছে শেখ হাসিনার সাজানো বাগান। মাত্র ১৬ দিনে আন্দোলন। বাকিটা ইতিহাস।
পাদটীকা: পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে এমন অজুহাতে আগামীকাল থেকে সেন্টমার্টিন বন্ধ, এমন কঠোর নির্দেশনা যদি পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বুড়িগঙ্গা নদীর ব্যাপারে কিংবা ঢাকার রাজপথে চলমান টাউন সার্ভিস বা ধোয়ায় ভরা ফিটনেসবিহীন গাড়ির ব্যাপারে নিতেন
লেখক: শাহীন রহমান, সম্পাদক, অন লাইন নিউজ পোর্টাল প্রথম সময় নিউজ ডটকম, সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্ট