
অনলাইন ডেস্কঃ
খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ফুঁসে উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষার্থীরাও।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকেই কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাসুদকে অবরুদ্ধ করে রাখে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হবে।
এর একপর্যায়ে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাসুদ অসুস্থ হয়ে পরায় তাকে মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে অনড়।
এর আগে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধসহ পাঁচটি দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে সংঘর্ষের সময় যারা তাদের ওপর হামলা করেছে তাদের শাস্তি এবং উপাচার্য, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর এবং ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) একটি প্রেস বিবৃতি দিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এসব দাবি তুলে ধরেন।
প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একটি অধ্যাদেশ জারি করা উচিত যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো রাজনীতিতে জড়িত হতে পারবে না এবং তা করতে ব্যর্থ হলে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং শিক্ষার্থীদের ছাত্রের মর্যাদা বাতিল করা হবে।
এতে বলা হয়, দ্বিতীয় দাবি হলো মঙ্গলবার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ যাদের বিরুদ্ধে কুয়েট প্রশাসন হত্যাচেষ্টা ও নাশকতার মামলা দায়ের করেছে। হামলার সাথে জড়িতদের বহিষ্কার করতে হবে এবং তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নিজেরাই এর সঙ্গে জড়িতদের তালিকা দেবে।
২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য ক্যাম্পাসে সামরিক বাহিনী মোতায়েনেরও দাবি জানান তারা।
এছাড়া হামলায় আহত সকলের চিকিৎসার খরচ কুয়েট প্রশাসনকে বহন করার দাবি জানান তারা। আহতদের তালিকা শিক্ষার্থীরা দেবে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১টার মধ্যে দাবি পূরণের আল্টিমেটাম দেন তারা। তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনো ক্লাস বা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে না বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ক্যাম্পাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের শুরু হয় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে ক্যাম্পাসের আশপাশের এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় এ সংঘর্ষ চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরে সেখানে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।