
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসীদের দূরত্বে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে রাজধানীর রাজারবাগ এলাকার ৫ নং ওয়ার্ড এলাকাবাসি । সম্প্রতি রাজার বাগ পাম্পের গলিতে বসবাসকারী বাংলাদেশ আইনজীবী সহকারী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজারবাগ জনকল্যাণ সমিতির সদস্য সচিব মো. খোরশেদ আলমকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে, সবুজবাগ থানার ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি আশরাফুজ্জামান খান লিটনের বিরুদ্ধে।
গত ৮ মার্চ রাজধানীর ১০/১ রাজারবাগের নিজ বাসার সামনেই বিএনপি নেতা লিটন ও তার সহযোগী যুবদল নেতা রয়েল, পলাশ, মামুন, সোভাসহ অন্তত ৩০-৪০ জন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে খোরশেদ আলমকে মারধর করে বলে অভিযোগ করেছেন ভিকটিমের স্ত্রী রুবি আলম। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, কিছুদিন আগে এলাকাবাসী স্বাক্ষর করে পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপপুলিশ কমিশনারকে রাজারবাগ এলাকার রাস্তায় ভ্যান না বসানোর জন্য আবেদন করেন। এতে আমার স্বামীরও স্বাক্ষর ছিল।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৮ মার্চ ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি লিটন দলবল নিয়ে আমার স্বামী ও ছেলেকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে মারধর করে। এখন আমার স্বামীর বুকের পাশের একটি হাড় ভেঙে গেছে, ওমাথায় মারাত্মক ভাবে আহত হয়ে বিছানায় পড়িত আছে, বিছানা থেকে উঠতে পারে না। আমি এই জঘন্য ও বর্বর হামলার বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী খোরশেদ আলম বলেন, লিটন ও তার লোকজন আমাকে ডাকলে আমি বাড়ির বাহিরে আসি। বাহিরে আসা মাত্রই ওদের মধ্যে থেকে কেউ একজন আমাকে দেখি বলে এই যে খোরশেদ আলম। আর সাথে সাথেই লিটন খান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর আট দশ জন আমার উপরে আয়নার মতো হামলে পড়ে। এবং কিল ঘুষি লাথি মারতে মারতে আমাকে পাশে রাখা একটি হোন্ডার উপর ফেলে দেয়। যার ফলে আমি মারাত্মকভাবে আহত হই। এখনো সন্ত্রাসী লিটন ও তার কিশোরগঞ্জ বাহিনীর হামলার আতঙ্কে নিরাপত্তাহীনতায় দিন পার করার অভিযোগ করেছে ভূক্তভোগী পরিবারটি।
খোরশেদ আলম আর বলেন, রাজাবাগ সবুজ বাগ এলাকার রাস্তাগুলো ছোট ছোট এই ছোট রাস্তার উপরে ভ্যান বসিয়ে সবজি বিক্রি করায় বিএনপি নেতা লিটন খান ও তার সহযোগীরা বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে চাঁদা হিসেবে দৈনিক মাসোয়ারা আদায় করেন, এলাকাবাসী এ বিষয়ে মতিঝিল পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়।
এদিকে একই দিন বিএনপি নেতা লিটনের প্রধান সহযোগী পলাশের বিরুদ্ধে স্থানীয় যুবদলকর্মী আরিফুল ইসলামকে গুলিতে হত্যার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ নিয়ে আরিফুল ইসলাম সবুজবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। যার নম্বর ৫২২। তারিখ ০৮/০৩/২০২৫ ইং।
জানা গেছে, রাজারবাগ এলাকায় রাস্তার মধ্যে ভ্যান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে । এছাড়াও ৫ আগস্ট পরবর্তী এলাকার বিভিন্ন মানুষ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়েও হামলা ভাঙচুর ও চাঁদাবাজির ঘটনাল অভিযোগ রয়েছে বিএনপি নেতা লিটনের বিরুদ্ধে।
সবুজবাগ থানা পুলিশের সহযোগিতায় রাজারবাগ এলাকার রাস্তায় ভ্যান বসানো বন্ধ করে দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে লিটন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজারবাগ জনকল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের এলাকায় রাস্তাগুলো প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটা সরু এরপর যদি রাস্তার দুপাশে ভ্যান বসিয়ে তরকারি বা অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি করে তাহলে মানুষ যাতায়াতের জন্য মারাত্মক যানজট সৃষ্টি হয়ে যায়।
এ থেকে পরিত্রান পেতে এলাকাবাসী ১৭০ জন বাড়িওয়ালা ও বসবাসকারী স্বাক্ষরিত অবৈধ ভ্যান অপসারণ ও রাস্তা উচ্ছেদের আবেদন করে একটি দরখাস্ত মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বরাবর জমা দেই। পুলিশ বিভাগ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং অবৈধ রাস্তা দখলকারীদের কে উচ্ছেদ করেন। এর ফলে বিএনপি নেতা লিটন খান বারবার আমাদের কাছে আসে এবং তাদেরকে পুনরায় বসার ব্যবস্থা করতে বলে।
আমরা তাকে সম্মতি না দিলে তিনি উত্তেজিত হয়ে লোকজন নিয়ে আমাদের জনকল্যাণ সমিতির সদস্য সচিব খোরশেদ আলমের বাসার সামনে গিয়ে তাকে ডেকে বের করে এবং তারপর অতিরিক্ত হামলা করে যে হামলায় তিনি মারাত্মক আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। আমরা জনকল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে এ ঘটনাটি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং এমন জঘন্য হামলার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে বিএনপি নেতা লিটনের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।