
অনলাইন ডেস্কঃ
প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাস পর্যন্ত যেসব কর্মকর্তার চাকরির বয়স থাকবে না, তাদেরকে উন্নয়ন প্রকল্পে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া যাবে না। পরিকল্পনা কমিশনের এমন নীতিমালাকে পাত্তাই দেয়নি স্থানীয় সরকার বিভাগ। বিশ্বব্যাংকের ঋণের ছয় হাজার কোটি টাকার ছয় বছর মেয়াদের প্রকল্পে পরিচালক করা হয়েছে এমন এক কর্মকর্তাকে। যার চাকরীর বয়স আর মাত্র ছয় মাস। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরও যাকে অনিয়মের বড় উদাহরণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল নগরীর শীর্ষ তালিকায় রাজধানী ঢাকা। যেখানে নানা অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনা নিত্যসঙ্গী। তাই নগরীর ওপর মানুষের চাপ কমাতে নেয়া হয় অন্য শহরগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ। কিন্তু গলদ একেবারে গোড়াতে।
প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নেয়া হয়েছে নগর উন্নয়নের প্রকল্প। যা বাস্তবায়ন করছে এলজিইডি। রিজিলিয়েন্ট আরবান অ্যান্ড টেরিটরিয়াল ডেভেলপমেন্ট নামে এক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এলজিআরডি। যার সিংহভাগ ঋণ নেয়া হচ্ছে বিশ্বব্যাংক থেকে (ঋণ ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা)। দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে আধুনিক সুযোগসুবিধাসহ পরিকল্পিত নগরায়নের ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণে এই প্রকল্পটা শুরুই হয়েছে অনিয়মের মাধ্যমে। দেয়া হয়েছে নীতিমালা ভঙ্গ করে পিডি নিয়োগ।
সাবেক সচিব আবদুল আউয়াল মজুমদার বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাস পর্যন্ত যেসব কর্মকর্তার চাকরির বয়স থাকবে না, তাদেরকে উন্নয়ন প্রকল্পে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া সরকারের জন্য এবং রাষ্ট্রের জন্য বুদ্ধিমত্তার কাজ হয়নি।
নীতিমালা বলছে, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাস পর্যন্ত চাকরির মেয়াদ না থাকলে, তাদেরকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া যাবে না। অথচ আরইউটিডিপি প্রকল্পে নিয়োগপ্রাপ্ত পরিচালক মো. মঞ্জুর আলীর চাকরি আছে মাত্র ছয় মাস। বিষয়টি বড় ধরনের অনিয়ম হলেও প্রকল্প পরিচালকের বয়সসীমা লুকিয়ে মঞ্জুর আলীকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করে সংশ্লিষ্ট কমিটি।
প্রকল্প পরিচালক মঞ্জুর আলী বলেন, যাদি কারও প্রয়োজন থাকে, তাহলে তাকে যেকোনো সময়ের জন্য নিয়োগ দেয়া যেতে পারে।
যাকে সুশাসন নিশ্চিতের বড় অন্তরায় হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নিয়ম লঙ্ঘন করে এই নিয়োগের সাথে যারা জড়িত এবং যারা অনুমোদন দিয়েছেন তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা দরকার।
এ বিষয়ে কয়েক দফায় যোগাযোগ করা হলেও কথা বলতে চাননি পিডি নিয়োগ কমিটির সভাপতি স্থানীয় সরকার সচিব নিজাম উদ্দিন এবং এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী আবদুর রশিদ।