
অনলাইন ডেস্কঃ
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে গত সাত দিনে (১৯ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল) নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের মোট ৫৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অভিযানের লক্ষ্য ছিল ঝটিকা মিছিল ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড দমন করা।
ডিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় নাশকতার চেষ্টা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিনষ্ট ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংসের একাধিক মামলা রয়েছে। অভিযানে অংশগ্রহণকারী ডিবির বিভিন্ন টিম রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর, বংশাল, শেরেবাংলা নগর, রমনা, হাতিরঝিল, মিরপুর, উত্তরা, যাত্রাবাড়ী, কলাবাগান, মোহাম্মদপুরসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।
গ্রেপ্তার হওয়া নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- শেরে বাংলা নগর থানা ২৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আব্দুর রব পাটোয়ারী (৫০), শুকতাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবেদ আলী শেখ (৫২), উত্তরা থানা আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী মনিরুল ইসলাম (৩৮), বংশাল থানা ৩৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী যুবলীগের সহ-সভাপতি আসাদুল্লাহ শিপলু (৪৫), ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাকিল আহমেদ (৫৬), ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য মো. হাবিবুর রহমান হাবিব (৪৫), কেরাণীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাজী আলাউদ্দীন, চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন মিয়াজী (৬৩), কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ থানার আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ (৪৭), বংশাল থানা ৩২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বাবু আহাম্মেদ (৫৫), ২২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল খালেক (৫৫), মোহাম্মদপুর থানা ২৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ওহিদ এম আর রহমান (৫০)।
কামরাঙ্গীরচর থানা ৫৭নং ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ শহিদ, বংশাল থানা ৩৩নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মো. জিয়া মিয়া (৪৫), শেরে বাংলা নগর থানা ২৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি মো. কবির হোসেন ওরফে পানি কবির (৩৫) শেরেবাংলা নগর থানা ৯৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক মো. রেজাউল করিম (রানা), ৭১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি মোস্তাক ফকির ওরফে বাঘা (৩৮), ঢাকা মহানগর উত্তর ২৭নং ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুল হাসান রতন (৩৪), বংশাল ইউনিট ৩৩নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন মাছুম (৫৮), মহানগর উত্তর যুবলীগের কর্মী মোহাম্মদ জাকির হোসেন সাগর (৪৩)।
মিরপুর থানা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এম আর বাদল (৫০), ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আসলাম চৌধুরী ইমন (২৪), যাত্রাবাড়ী থানা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মো. তাওহিদুল ইসলাম (২৯), ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক মো. ফয়সাল হোসেন রকি (১৯), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ হল শাখার ছাত্রলীগের নাট্য ও বিতর্ক বিষয়ক সম্পাদক দীপম সাহা (২৬), ডেমরা শাখার ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী ইসমাইল হোসেন (৪২), ছাত্রলীগ কর্মী মো. মুহতাসিন ফুয়াদ ওরফে পিয়াল, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. সাব্বির আহমদ নির্ঝর (২৮), মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক উপ-সম্পাদক কামরুল আহসান নিশাদ (২৮), শাহবাগ থানা ২০নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল ওরফে কালু (২৫), ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল হোসেন ওরফে জীবন (৩০), উত্তর বাড্ডা এলাকার ছাত্রলীগ কর্মী রবিন দেওয়ান (২৯), বংশাল থানা ৩৩নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক মো. বাপ্পি (৩০)।
তুরাগ থানা কৃষক লীগের নেতা মো. দেলোয়ার হোসেন (৪২), ঢাকা মহানগর উত্তর কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মো. আবু হানিফ (৪৫), কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী হক (৫১), ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কৃষক লীগের সদস্য সচিব আব্দুল মতিন মাস্টার (৫২), মিরপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মো. শাহজালাল (৪৫), আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি শামীম শাহরিয়ার (৫৮), ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬১নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি রবিন শিকদার (৩০), উত্তরা পশ্চিম থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল (৫৫), বাংলাদেশ স্থল বন্দর শ্রমিক লীগের সম্পাদক মো. আজাদ হোসেন (৫২), কলাবাগান থানা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. কবির হোসেন (৪৮), বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রায়হান আহমেদ (৪৩), উত্তরখান থানা মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক জয়দেব চন্দ্র দাস (৫০), গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মো. কামাল হোসেন শেখ (৬২), যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগ নেতা, অর্থ সরবরাহকারী মোবাশ্বের রহমান (৫৫), বংশাল থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. চাঁন মিয়া (৬০), ডেমরা থানার পাইটি ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইলিয়াস কাঞ্চন (৬৪)।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মো. আবেদ আলী শেখ গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর গাড়ি পোড়ানোর মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। অন্যদিকে মোহাম্মদ জাকির হোসেন সাগর ২০১৫ সালে বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত।
ডিবি সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ইমনের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে। অনেক গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে নাশকতার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ধ্বংসের অভিযোগও রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত সকলের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। তারা সংঘবদ্ধ হয়ে আইনশৃঙ্খলা বিনষ্টের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থালে ঝটিকা মিছিল করার মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঝটিকা মিছিলসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের অপতৎপরতা রোধে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল কারীদের বিরুদ্ধে ডিবির চলমান অভিযান অব্যাহত রয়েছে।