
অনলাইন ডেস্কঃ
ভারত থেকে জাহাজে ছাই (ফ্লাইঅ্যাশ) বাংলাদেশে আনার অনুমোদন পাওয়ার কাগজপত্রে জাল এলসি জমা দিয়ে শাস্তির মুখে পড়েছে অপারেটর প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স সোহাগ ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড’। ওই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্থগিত করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানান, এ ধরনের অপরাধ একবার করলে সাধারণত সতর্ক করা হয়। বার বার জালিয়াতি করায় এ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। এর ফলে এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নৌপথে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম আপাতত বন্ধ থাকবে। বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা বলেন, এলসি জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ায় ওই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। এ ধরনের কার্যক্রম ভারতে ধরা পড়লে তা আমাদের জন্য অমর্যাদাকর হতো এবং দুই দেশের নৌবাণিজ্যে প্রভাব পড়তে পাড়ত।
মেসার্স সোহাগ ট্রেডিং কোম্পানির অন্যতম মালিক নাজমুল হোসাইন (হামদু)। তিনি কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন। পণ্যবাহী নৌযান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি। সোহাগ ট্রেডিং কোম্পানি ছাড়াও মেসার্স তনয় শিপিং লাইন্স নামক প্রতিষ্ঠানেরও মালিক।
এলসি জালিয়াতি করে পণ্য আমদানির অনুমতি চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নাজমুল হোসাইন (হামদু) বলেন, আমার একজন স্টাফ ভুলে কাজটি করেছে। এজন্য তাকে তাৎক্ষণিক চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছি। আমার প্রতিষ্ঠানের ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারে আবেদন করেছি।
এ ধরনের ঘটনায় বাংলাদেশ-ভারত নৌবাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে জানিয়ে বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাঈদ আহমেদ বলেন, বিষয়টি জানার পর আমরা পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছি। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকেও ওই প্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। অন্যরাও যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটায় সেজন্য সতর্ক করেছি।
গোল্ডেন অব সান নামক জাহাজে ভারত থেকে ফ্লাইঅ্যাশ আনার অনুমতি চেয়ে ১৬ জুন বিআইডব্লিউটিএ’তে আবেদন করে সোহাগ ট্রেডিং কোম্পানি। ওই জাহাজের নথিপত্র পর্যালোচনা করতে গিয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে এলসি জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। বিষয়টি জানিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যাখ্যা চাইলে এর দায় কর্মচারীর ওপর ফেলার চেষ্টা করে অপারেটর প্রতিষ্ঠান। ওই ঘটনায় নৌপ্রটোকল চুক্তির আওতায় এ প্রতিষ্ঠানকে সব ধরনের কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
স্থগিতাদেশ দেওয়া চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এর আগে এ প্রতিষ্ঠানটি জালিয়াতি করেছিল। ডুবে যাওয়া জাহাজ এমভি তোফা অ্যান্ড তারিফ-৪ নামক জাহাজের সার্ভে সনদ, রেজিস্ট্রেশন সনদ ও অ্যান্ডোর্সমেন্ট জালিয়াতি করে জাহাজ চলাচলের অনুমতি নেওয়ার সময় ধরা পড়ে। ওই ঘটনায় ২০২২ সালে এ প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করেছিল বিআইডব্লিউটিএ।