
অনলাইন ডেস্কঃ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) জুলাই অভ্যুত্থানের বিরোধিতার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি ১৯ জন শিক্ষক, ১১ জন কর্মকর্তা ও ৩১ জন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধি অনুযায়ী অভিযুক্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে শিক্ষক ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ১০ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে কর্মকর্তাদের শোকজ নোটিশ এখনো দেওয়া হয়নি।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রত্যক্ষদর্শী কর্তৃক লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ, ভিডিও ও পত্রিকার খবরের ভিত্তিতে যেসব শিক্ষকের জুলাই বিপ্লববিরোধী কার্যকলাপে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, তাঁরা হলেন—বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বাকি বিল্লাহ, অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এইচ এম আক্তারুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. রাসিদুজ্জামান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. আফরোজা বানু।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরেফিন, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিনা নাসরিন, অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, সিএসই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন ও ইইই বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান।
আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার, অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহজাহান মণ্ডল, অধ্যাপক ড. বেরা মণ্ডল, আল ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আমজাদ হোসেন। ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মেহেদী হাসান, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম ও মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাজেদুল হক।
এদিকে কর্মকর্তাদের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সংহতি জানানো শিক্ষকদের বিপক্ষে গিয়ে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ষড়যন্ত্র করেন। তাঁরা আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের মিছিলে যোগ দিয়ে আন্দোলনবিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্য দেন।
তাঁরা হলেন উপরেজিস্ট্রার আলমগীর খান, আব্দুল হান্নান, আব্দুস সালাম সেলিম, ড. ইব্রাহীম সোনা ও শেখ আবু সিদ্দিক রোকন; সহকারী রেজিস্ট্রার ওয়ালিদ হাসান মুকুট, মাসুদুর রহমান, শাখা কর্মকর্তা তোফাজ্জেল হোসেন, উকিল উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম শিমুল ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা জে এম ইলিয়াস।
এ ছাড়া প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনে নানা অপকর্ম চালায়। আন্দোলনকারীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, হলে হলে নির্যাতন, অস্ত্র মজুত, ককটেল বিস্ফোরণ, জোরপূর্বক মিছিলে অংশগ্রহণ করানোসহ নানা কর্মকাণ্ডে তারা জড়িত ছিল।
জড়িত ব্যক্তিরা হলেন—শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়, সহসভাপতি রতন রায়, মুন্সি কামরুল, হুসাইন মজুমদার, শিমুল খান, মৃদুল রাব্বী, ফজলে রাব্বী ও মাসুদ রানা; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হাফিয, শাহীন আলম, তারিকুল ইসলাম, লিয়াফত ইসলাম রাকিব; সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সোহাগ, মেজবাউল ইসলাম, রাফিদ হাসান ও আইন সম্পাদক সাকিল।
দপ্তর সম্পাদক কামাল হোসেন, সাহিত্য সম্পাদক আব্দুল আলিম, ক্রীড়া সম্পাদক বিজন রায়, প্রচার সম্পাদক নাবিল আহমেদ ইমন, গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক সাদিদ খান সাদি, উপসংস্কৃতি সম্পাদক অনিক কুমার, উপকারিগরি শিক্ষা সম্পাদক ফারহান লাবিব ধ্রুব, উপপাঠাগার সম্পাদক প্রাঞ্জল, উপআপ্যায়ন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম ও সদস্য পিয়াস মোস্তাকিন।
এ ছাড়া ছাত্রলীগকর্মী বিপুল খান, ইমামুল শিমুল, মনিরুল ইসলাম আসিফ, শাওন, মারুফ ইসলাম, আদনান আলি পাটোয়ারি ও তানভীর।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল হক বলেন, ‘প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী ইতিমধ্যে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী ও শিক্ষকদের শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তাদের শোকজের বিষয়ে প্রশাসন থেকে অফিশিয়ালি কোনো নির্দেশনা পাইনি। তাই স্বাভাবিকভাবে তাদেরটা দেওয়া হয়নি।’