
অনলাইন ডেস্কঃ
হাইকোর্টের নির্দেশে খুলনার চাঞ্চল্যকর চঞ্চল হত্যা মামলার গায়েব হওয়া নথি পুনর্গঠন করা হয়েছে। আগামী ২২ অক্টোবর মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ মামলার চার্জ গঠনের দিন ধার্য রয়েছে।
১৯৯৮ সালের ১৮ অক্টোবর খুন হন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও জেলা সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান চঞ্চল। নিহতের মা বেগম বদরুনেসা পরের দিন ১৯ অক্টোবর ৫ জনকে আসামি করে খুলনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি একাধিক দপ্তর ও বেশ কয়েকজন অফিসার তদন্ত করার পর সর্বশেষ কেএমপি ডিবি’র পুলিশ পরিদর্শক এস এম এ রুমী ২০০১ সালের ১২ এপ্রিল ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযুক্ত সাত আসামি হচ্ছেন আক্তার জাহান রুকু, মঈন জমাদ্দার, রওশন জামিল মিঠু, আব্দুর রাজ্জাক, জাহিদুল ইসলাম লাভলু ওরফে বাবু, একলাস আলী মোহন ও ইমতিয়াজ হোসেন।
এরপর ২০০৩ সালে জেলা জজ আদালতে ২৪৩/২০০৩ একটি রিভিউ মামলা হয়। ওই মামলা নিষ্পত্তি করে ২০০৬ সালে মামলার মূল নথি খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়। নথিটি গ্রহণ করেন তৎকালীন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের পিএ কাজী শামীম হোসেন। তার হেফাজত থেকে নথিটি গায়েব হয়ে যায়। এ সময়ে সিএমএম’র পিএ কাজী শামীম হোসেন, তৎকালীন জিআরওকে নথি হারানোর জন্য দায়ী করা হয়। গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। তবে ওই তদন্ত রিপোর্ট আজও আলোর মুখ দেখেনি। পরবর্তীতে নানাভাবে চেষ্টার পরেও কোনভাবেই ওই মূল নথি পাওয়া যায়নি।
অবশেষ ২০১৪ সালের ৮ মে খুলনা অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকারিয়া হোসেন ১৮৫৩ নম্বর স্মারকে চঞ্চল হত্যা মামলার নথি পুনর্গঠন চেয়ে হাইকোর্টের রেজিস্টার বরাবর চিঠি পাঠান। ওই চিঠির আলোকে হাইকোর্টের নির্দেশে পুনরায় নথি তৈরির কাজ শুরু করে খুলনা সিএমএম আদালত। সিএমএম আদালত পুলিশ, বাদি, স্বাক্ষী এমনকি আসামি পক্ষের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। ইতিমধ্যে চার্জশিটভুক্ত দু’আসামি ইফতিকার আহমেদ এবং একলাস আলী মৃত্যুবরণ করেন। বাদি বেগম বদরুনেসাও মারা গেছেন।
সর্বশেষ গতবছর ২২ ডিসেম্বর খুলনা অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আনিছুর রহমান পুলিশের তৈরি চার্জশিট গ্রহণ করেন। বর্তমানে চঞ্চল হত্যা মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে ১৩৭/২৫ নম্বর দায়রা মামলা হিসেবে আছে। যার জিআর নম্বর ছিল ১৩১৪/৯৮, আর খুলনা থানায় মামলা নম্বর ছিলো ৩৩, তারিখ ১৯-১০-৯৮। মামলার ধারা ৩০২/৩৪ দন্ড বিধি হতে উদ্ভুত।
মহানগর দায়রা জজ আদালত সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার এ চাঞ্চল্যকর চঞ্চল হত্যা মামলাটির চার্জ গঠনের দিন ধার্য ছিলো। মহানগর দায়রা জজ সরকারি কাজে ঢাকায় থাকায় আগামী ২২ অক্টোবর চার্জ গঠনের দিন ধার্য করা হয়েছে। দুই জন মারা যাওয়ায় বর্তমানে এ মামলায় আসামি ৫ জন।
এদিকে ২০০৬ সালে নথি গ্রহণকারী কাজী শামীম হোসেন বলেন, চাকরির সুবাদে ওই পদে থাকলে নথিতো গ্রহণ করতেই হবে। তবে নথি হারানো বা গায়েব হওয়ার ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। ২০২১ সালে তিনি অবসরে গেছেন দাবি করে বলেন, চাকরি জীবনে এ হত্যা মামলার নথি হারানো নিয়ে আমাকে কোন চিঠি দেওয়া হয়নি।