
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের করা রিভিউ আবেদনের শুনানি আগামী রোববার (২০ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হবে।
দলটির আইনজীবী নেতারা বলছেন, অবসরের ১৬ মাস পর রায় লিখে এবং রায় পাল্টে দিয়ে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দেশে তিনটি জাতীয় নির্বাচন হয়। ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ সালে হওয়া এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পায় দেশে-বিদেশে। তবে ২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করা হয়। এই রায় দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক।
যদিও ১০ম এবং ১১তম সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে বলে সংক্ষিপ্ত রায়ে মত দিয়েছিলেন খায়রুল হক। অথচ অবসরের ১৮ মাস পর আগের পর্যবেক্ষণ বেমালুম ভুলে দুই মেয়াদের তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা উঠিয়ে দেন খায়রুল হক। হয়তো এর পুরস্কার হিসেবে টানা ৯ বছর আইন কমিশনের চেয়ারম্যান রাখা হয় তাকে।
৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা করতে সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এদিকে, রায় জালিয়াতির ঘটনায় তৎকালীন প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে থানায় মামলাও হয়। দেশের বিচারবিভাগ, গণতন্ত্র ধ্বংসের জন্য দায়ী করে খায়রুল হকের বিচার দাবি জানিয়েছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
বিএনপির আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আমগীরের করা রিভিউ আবেদনের ওপর রোববার শুনানি হবে। সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে জাতির সঙ্গে বিচারিক প্রতারণা করেছেন অসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল বিচার বিভাগীয় প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরবর্তীতে রায়টি দিয়েছিলেন খায়রুল হক। কিন্তু তিনি অবসরে ছিলেন। এই বিচারপতি গণতন্ত্র ধ্বংস করেছন। বহু মানুষের হত্যায় সহযোগিতা করেছেন। তার বিচার এই বাংলার মাটিতে হওয়া উচিত।’
এরআগে, গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে আনা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করা হয়। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ ব্যক্তি ৮০০ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনটি করেন।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের চেম্বার আদালতের অনুমতি নিয়ে আবেদনটি জমা দেয়া হয়।
রিভিউ আবেদনকারী আরও চারজন হলেন- তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজ উদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।