
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনুস সজ্জন ব্যক্তি, সারা দুনিয়ায় তার নাম, যশ, খ্যাতি আছে। তিনি চাইলেই একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দিতে পারেন। দেশ ও জাতি আশা করে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই রাষ্ট্র, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, ব্যাংক সেক্টর, জনপ্রশাস মন্ত্রণালয়, পুলিশ সংস্কার করে যত দ্রুত সম্ভব অবাধ, সুন্দর, নিরপেক্ষ নির্বাচন করে বিজয়ী সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে তিনি বিদায় নেবেন। এই কথাগুলি বলছিলেন ঢাকার বিশিষ্ট ম্যানপাওয়ার ব্যবসায়ী, সাবেক ছাত্রদল নেতা, বাগেরহাটের সন্তান শেখ মইন উদ্দিন আহমেদ।
৮০ র দশকে খুলনা বিএল কলেজের ছাত্র মইন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বিএল কলেজ শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক। তৎকালীন সময়ে তিনি দায়িত্ব পালনকালে এরশাদ বিরোধী আন্দলোনে রাজপথে সক্রিয় ভুমিকা পালন করেন। মাস্টার্স পাস মইন বাগেরহাট জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক, কৃষক দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন, এর পরে বিভিন্ন সময়ে পৌর ও জেলা বিএনপির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মইনকে এবার জেলার সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দেখতে আগ্রহী দলের নেতা-কর্মীরা।
বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী লে: কর্নেল অব: মোস্তাফিজুর রহমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ মইন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট্রের অবৈতনিক পরিচালক ছিলেন। সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান মইন বরাবরই সামাজিক, দলের প্রতি প্রচন্ড বিশ্বস্ত, ব্যক্তি জীবনে একজন দানবীর, বিনয়ী, কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে পরিচিত।
গত বছরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মইনের স্ত্রী খুব অল্প বয়সে, অসময়ে মারা যান, এই দম্পতির এক সন্তান রয়েছে। উত্তরা নিজের অফিসে অন লাইন নিউজ পোর্টাল প্রথম সময় নিউজ ডটকমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মইন চলমান রাজনীতি, দেশের অর্থনীতি, শেখ হাসিনা সরকারের পতন, ইউনুস সরকারের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মকাণ্ড, আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, দল ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক গন্তব্য নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন।
আলাপকালে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী মইন জানান, দেশের অর্থনীতি আজ বিধ্বস্ত, হাসিনা সরকার নজির বিহীন দুর্নীতি করে দেশকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছেন। দেশে মেগা উন্নয়নের নামে মেগা লুটপাট হয়েছে। শেখ হাসিনার পরিবার ও গুটিকয়েক ব্যবসায়ী ব্যাংকে সেক্টরকে শেষ করে দিয়ে গেছেন, লক্ষ হাজার কোটি টাকা তারা পাচার করেছে। ব্যাংকে আজ টাকা নেই, দেশের ডলার সংকট বিদ্যমান, এলসি খোলা যাচ্ছে না, মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে গিয়েছে।
সাবেক সরকারের আমলে গুটি কয়েক ব্যবসায়ীর হাতে দেশ অর্থনীতি- ব্যাংক সেক্টর জিম্মি ছিল। আওয়ামী লীগ বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন, সচিবালয়, ক্যান্টমেন্ট সব কিছুকেই দলীয়করন করে শেষ করে দিয়েছে।
দলের লাখ লাখ নেতাকর্মীদের নামে মামলা করে দেশকে দানবের রাষ্ট্রে পরিনত করেছিল। গুম- খুন করে হাজার হাজার পরিবারকে পথে বসিয়ে দিয়েছে। মইন আরো জানান, গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন এবং ছাত্র জনতার জুলাই আগস্টের আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এই সরকারের পতন হয়েছে। একপর্যায়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে।
আওয়ামী লীগ আর কোন দিন এই দেশে রাজনীতি করতে পারবে না। জনগণ তাদের ঘৃণার সাথে প্রত্যাখ্যান করেছে। মইন বলেন, তিন তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী, গনতান্ত্রিক আন্দোলনের আপোষহীন নেত্রী বেগম জিয়াকে দুই কোটি টাকার সাজানো, কল্পিত দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনা ক্ষমতার জোরে তাকে কারাবন্দী করে রেখেছিলেন, যে টাকা বেগম জিয়া কোন দিন টাচও করেননি। তাকে রীতিমত অসুস্থ বানিয়ে ফেলেছেন।
চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনার সরকার তাকে বিদেশ পর্যন্ত যেতে দেয়নি। মইন বলেন, তারেক রহমানের দিকনির্দেশনায় বিএনপি এই জাতিকে মুক্তির পথ দেখিয়েছে। জিয়া পরিবারের যোগ্য উত্তরসূরী তারেক রহমান এই প্রজন্মের জনপ্রিয় নেতা। মইন জানান, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি জনগনের রায় নিয়ে আবারও ক্ষমতায় আসবেন।