
অনলাইন ডেস্কঃ
কানাডার উপমুখ্যমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের হঠাৎ পদত্যাগের পর থেকেই দেশটির প্রশাসনে ক্রমশ তীব্র হচ্ছে অসন্তোষ। মন্ত্রিসভায় রদবদল করেও তা সামলাতে পারছেন না প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য ঘরে-বাইরে চাপ বাড়ছে তার ওপর।
কানাডার একাধিক সংবাদমাধ্যমের দাবি, অন্টারিও প্রদেশের অন্তত ৫১ জন এমপি ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করে ট্রুডোকে গদি থেকে সরানোর বিষয়টিতে একমত হয়েছেন। হাউস অব কমনসে অন্টারিওর সদস্য সংখ্যা ৭৫ জন, তাদের মধ্যে ৫১ জনের বেঁকে বসার খবরে রাজনীতিকদের মধ্যে শুরু হয়েছে চর্চা। অনেকেরই দাবি, ট্রুডোর ক্ষমতাচ্যুত হওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা।
গত ন’বছর ধরে ক্ষমতায় থাকার পরে ট্রুডোর জনপ্রিয়তা এখন তলানিতে। ২০২৩ সালের নির্বাচনী সমীক্ষায় দেখা গেছে, সে দেশের বাসিন্দারাও ট্রুডোকে তেমন আর পছন্দ করছেন না। উপমুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের পরে এমপিদের অনেকের ধারণা, ক্রিস্টিয়াই ফ্রিল্যান্ডই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্ডের পদত্যাগের অন্যতম কারণ ছিল ট্রুডো আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমদানি শুল্কের বার্তাটি যথোপযুক্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন না। তার ইস্তফার এক সপ্তাহের মধ্যে ট্রুডোর দল লিবারাল পার্টির ২১ জন এমপি তার পদত্যাগের দাবিতে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন। সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও দু’টি নাম। ব্রেনডন হ্যানলি এবং জেনিকা অ্যাটউইন।
হ্যানলি বলেছেন, ক্রিস্টিয়ার সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে তাতে জনসমক্ষে ট্রুডোর পদত্যাগ দাবি করে দলের কিছু এমপি মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছেন।
কেবেকের এমপি অ্যান্টনি হাউসফাদারের দাবি, প্রকাশ্যে না হলেও বেশির ভাগ এমপিই চাইছেন ট্রুডোর পদত্যাগ। ফ্রিল্যান্ডও তার পদত্যাগপত্রে লিখেছিলেন, আমাদের সামনে এখন অর্থনৈতিক বিপদ, অথচ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এর মোকাবিলা ও কানাডার উন্নতি সংক্রান্ত কোনো মতেরই মিল হচ্ছে না আমাদের। আমি মনে করি, ইস্তফা দেওয়াই আমার পক্ষে সৎ ও উপযুক্ত পদক্ষেপ।
ট্রাম্পের শুল্ক-সংক্রান্ত বার্তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত কানাডার, দাবি ক্রিস্টিয়ার। তার কথায়, ট্রুডো ‘রাজনৈতিক গিমিক’-এ বিশ্বাস রাখছেন। ক্রিস্টিয়াই প্রথম মন্ত্রী যিনি প্রকাশ্যে অসন্তোষ জানিয়ে পদত্যাগ করেছেন।
অসন্তোষের সুর শোনা গিয়েছে ট্রুডোর প্রাক্তন রাজনৈতিক সুহৃদ নিউ ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জগমিত সিংহের কথাতেও।
তিনি জানান, জানুয়ারিতে হাউস অব কমনস শুরু হলে সমর্থন সরিয়ে নেবেন। এর ফলে কানাডার নির্বাচন আরও এগিয়ে আসার সম্ভাবনা দেখা গেছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন