
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
দেশ শাসনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ট্র্যাক রেকর্ড অত্যন্ত দুর্বল। যেটি জুলাই বিপ্লব থেকে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। দেখা গেছে, সামরিক, বেসামরিক, গণতানি্ত্রক বা একনায়কতন্ত্র এমনকি যে দলই রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকুক না কেন সব ক্ষেত্রেই অত্যন্ত নম্নি মানের শাসন বৈশষ্ট্যি হিসাবে দেখা গেছে। দেশ শাসন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে ধারাবাহিকভাবে নিচের দিকে রয়েছে দেশ। যা নিচের দিকের ২০ শতাংশ দেশের মধ্যে স্থান পেয়েছে। বাংলাদেশে জিয়াউর রহমান, শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া যেই ক্ষমতায় থাকুক না কেন সবার রাজনৈতিক সংস্কৃতি একই।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) পাবলিক লেকচারে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। ‘পুনঃপর্যালোচনা পিতৃতন্ত্র : লিঙ্গ, সংস্থা এবং বাংলাদেশ প্যারাডাক্স’ শীর্ষক এই পাবলিক লেকচারে বক্তব্য দেন লন্ডন স্কুল অব ইকোনামিক্সের প্রফেসর নায়লা কবীর।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিআইডিএস সন্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত পাবলিক লেকচার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্থার মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন।
লেকচারে নায়লা কবীর বলেন, বাংলাদেশ দারিদ্র নিরসন, মাতৃমৃতু্য ও শিশু মৃতু্য হার কমানো, জন্ম নিয়ন্ত্রণ রোধসহ বিভিন্ন সামাজিক ক্ষেত্রে উন্নতি করেছে। বিশেষ করে ৮০’র দশকে এই উন্নতির যাত্রা শুরু হয়। এই সামাজিক উন্নতির পেছনে ব্যাপক অবদান রয়েছে নারী সমাজের।
তিনি আরও বলেন, খুব সংক্ষপ্তি সময়ে বাংলাদেশ অনেক বড় পথ পাড়ি দিয়েছে। কিন্তু এই অগ্রগতির ক্ষেত্রে পুরুষতন্ত্রকে নির্বাসনে দেওয়া হয়নি। এই পিতৃতনে্ত্রর সঙ্গে নারীদের বোঝাপড়ার মাধ্যমেই অর্জনগুলো হয়েছে। কিন্তু এখনো রয়েছে অনেক চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশ বৈষম্য দূর করার ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। এ ক্ষেত্রে আয় বৈষম্য দূর করার জন্য ধনীদের কাছ থেকে কর নিতে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থতা রয়েছে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ছিল বিশ্বের দ্বিতীয় দরিদ্রতম দেশ। সেখান থেকে ধীরে ধীরে এদেশ অনেকটাই এগিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এদেশের উন্নয়নগুলো কতটা টেকসই। দেশে অন্যতম অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে বৈষম্য বৃদ্ধি, বিদেশে অভিবাসনের ক্ষেত্রে ঝুঁকি আছে, অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিপুল কর্মসংস্থান এবং বিশেষ করে নারীদের কর্মের ক্ষেত্র বেশিরভাগই অপ্রাতিষ্ঠানিক ইত্যাদি।
সভাপতির বক্তব্যে ড. বিনায়ক সেন বলেন, বাংলাদেশ প্যারাডক্স শব্দটির সঙ্গে আমরা আগে থেকেই পরিচিত ছিলাম। কিন্তু নায়লা কবীর তার লিখিত একটি বইতে প্যারাডক্সের বিষয়টি তুলে ধরার পাশাপাশি দেখিয়েছেন এই প্যারাডক্স অর্জনের পেছনে নারীরা কিভাগে ভূমিকা রেখেছে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।