
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
খুলনার প্রগতিশীল সাবেক ছাত্রনেতা কে এম শামীম আকতার অপহরণের তদন্ত শুরু হয়েছে। গুম সম্পর্কিত তদন্ত কমিশন তার অপহরণের বিষয়টি তদন্ত করছে। ইতোমধ্যে তদন্তের জন্য তারা বিভিন্ন নথিপত্র সংগ্রহ করেছে। প্রাথমিক তদন্তে র্যাবের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি উঠে এসেছে। ২০১১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পুরানা পল্টন লাইনের বাসার নিচ থেকে অপহরণ হন। তবে আজও পর্যন্ত তার সন্ধান মেলেনি। তিনি খুলনা জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি ছিলেন।
সাবেক এই ছাত্রনেতা খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আরাজি ডুমুরিয়া গ্রামের সন্তান। ডাক্তার মোবারক আলী খান তার পিতা এবং জোহরা আকতার তার মা। উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াকালীন সময়ে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। স্থানীয় সংকট সমস্যা বিশেষ করে খাস জমি নিয়ে আন্দোলন করতে যেয়ে প্রভাবশালীদের চক্ষুশূল হন। নানা অভিযোগে বিভিন্ন সময়ে তাকে কারাবরণ করতে হয়েছে। একটি হত্যা মামলার আসামিও ছিলেন। ২০০২ সালে ডুমুরিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। ছাত্রজীবন শেষে ঢাকায় বসবাস শুরু করে। এক পর্যায়ে তিনি অপহরণ হন। অপহরণের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দিকে অভিযোগ তোলেন তার মা।
তখন তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমার ছেলে কে এম শামীম আকতার গত ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল সোয়া ৮টার দিকে পুরানা পল্টন লাইনের বাসার নিচে দোকানে কিছু কেনা কাটার জন্য বের হয়। দুপুর ১২ টা পর্যন্ত বাসায় না ফেরায় আমি এবং আমার পরিবারের অন্য সদস্যরা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ খবর নিয়ে তার কোন হদিস পায়নি। পরে বাসার কাছের দোকানদারদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তাকে ৭/৮ জন অপরিচিত লোক জোর করে ধরে নিয়ে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গেছে। পরবর্তীতে পল্টন থানা ও র্যাব-৩ এর কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে তার কোন সন্ধান পায়নি। এ ব্যাপারে পল্টন থানায় একটি জিডি করি। জিডি নং- ১৮৩৯, তারিখ-২৯-০৯-১১। বিষয়টি র্যাব- ৩ এর কর্মকর্তাদেরকেও জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান। ছেলের সন্ধানের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। ছেলের নামে ৬/৭টি রাজনৈতিক হয়রানিমুলক মামলা ছিল।
গুম সম্পর্কিত তদন্ত কমিশনের সদস্য মো. নূর খান লিটন জানান, প্রাথমিক তদন্তের কাজ শেষ হয়েছে। অপহৃতের আপনজনদের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকেও তথ্য নেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী র্যাবের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি উঠে এসেছে।