
বিশেষ প্রতিনিধি:
কক্সবাজারে সন্ত্রাসীদের গুলিতে হত্যাকাণ্ডের শিকার খুলনা ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গোলাম রব্বানী টিপু হত্যাকান্ডে আটক খুলনা ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শেখ হাসান ইফতেখার চালুর সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি র্যাব। কক্সবাজার সদর থানায় সাবেক কাউন্সিলর চালুকে ইতমধ্যেই হস্তান্তর করেছে র্যাব।
টিপু নিহত হবার পরে সাবেক কাউন্সিলর চালুকে হোটেল থেকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। আজ থানায় হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত চালু র্যাবের কাছেই ছিলো। র্যাব- ১৫ এর কমান্ডিং অফিসার অন লাইন জাতীয় পোর্টাল প্রথম সময় নিউজ ডটকমকে জানান, চালুকে জিজ্ঞাসাবাদে খুনের সাথে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় নি। এটা এখন পুলিশ তদন্ত করছে। কক্সবাজার সদর থানায় আমরা তাকে হস্তান্তর করেছি। এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে র্যাব- ১৫ এর কমান্ডিং অফিসার শনিবার রাতে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, চালু ও টিপুর ঘনিষ্ঠ আটক মেজবাউলকে আজ আদালতে হাজির করে অধিকতর তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। তবে আদালতে শুনানি হয় নি। ফলে তাদেরকে কারাগারে প্রেরন করা হয়েছে। কক্সবাজার মডেল থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন এই প্রতিবেদককে বলেছেন, পরবর্তীতে আদালত বসলে শুনানি সাপেক্ষে আমরা আবারও অধিকতর তদন্তের জন্য রিমান্ড চাইবো।
ওসি আরও জানান, সন্দেহভাজন আসামি সাবেক কাউন্সিলর চালু ও মেজবাউল হককে জিজ্ঞাসাবাদ না করা পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না, তারা আলোচিত এই খুনের সাথে সম্পৃক্ত কিনা।
এদিকে, নিহত সাবেক কাউন্সিলর টিপুর স্ত্রী সাবিহা আখতার গনমাধ্যমের কাছে এই হত্যাকান্ডের জন্য দৌলতপুরের সাবেক চরমপন্থী দলের নেতা গাজী কামরুলকে দায়ি করেছেন। তিনি জানান, গাজি কামরুল প্রায়ই মোবাইল ফোনে তার স্বামী টিপুকে হত্যার হুমকি দিতেন। আমার স্বামীকে সুকৌশলে কক্সবাজারে নিয়ে সন্ত্রাসীদের দিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে- এমন দাবি প্রয়াতের স্ত্রী সাবিহার। তার এমন বক্তব্য খুলনায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এটি এখন টক অব দ্য খুলনা
একাধিক সুত্র বলেছে, মঙ্গলবার ঢাকা থেকে কেসিসির সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রাব্বানী টিপু কেসিসির আরেক সাবেক কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হাসান ইফতেখার চালুকে সঙ্গে নিয়ে কক্সবাজারে গিয়েছিলেন। তাদের এই ট্রিপে আরও বেশ কয়েকজন খুলনার পলাতক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের নেতাদের যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু যে কোন কারনেই হোক পলাতক অন্য নেতারা পরে আর কক্সবাজার যাননি।
অন্যদিকে, আটককৃত সাবেক কাউন্সিলর চালুর স্ত্রী রোজিনা পারভিন ইরানির সন্তানসহ যাবার কথা ছিলো কিন্তু অত্যাধিক শীত ও ছেলের স্কুল থাকায় তিনি ঢাকাতে অবস্থান সত্বেও স্বামীর সাথে কক্সবাজার না গিয়ে খুলনাতে ফিরে যান। এই প্রতিবেদককে চালুর স্ত্রী রোজিনা জানান, ২৩ জানুয়ারি ছেলের জন্ম দিন এবার কক্সবাজারেই পালন করার কথা ছিলো। কিন্তু পরে তিনি কক্সবাজার না গিয়ে ঢাকা থেকে খুলনায় ব্যাক করেন।
এদিকে, নিহত কাউন্সিলর গোলাম রব্বানি টিপু জানাযা ১১ জানুয়ারি শনিবার দুপুরে দেয়ানা উত্তরপাড়া মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেয়। জানাযা শেষে তাকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর আগে শনিবার সকালে মরহুমের মরদেহ দেয়ানা বাড়িতে পৌঁছালে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। টিপুর লাশ দেখতে শত শত মানুষ তার বাড়িতে ভিড় জমায়। লাশ দেখে অনেকেই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা খুনীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানান।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে সাবেক কাউন্সিলর টিপু ও চালু কক্সবাজারে পৌঁছে একটি হোটেলে ছিলেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা সেই হোটেলে সময় কাটান। রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন হোটেল সী গালের সামনের ফুটপাতে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন এক সময়ের ছাত্র মৈত্রী নেতা গোলাম রব্বানী টিপু।
আগামীকাল: রুমে বান্ধবী আনার কারনেই কাউন্সিলর চালু রাগ করে টিপুর রুম ছেড়ে দিয়ে বিকেলে এক ফ্লোর নিচে রুম শিফট করেন