
অনলাইন ডেস্কঃ
২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ১৫৫ জন ভারতীয় নাগরিক, ১৪ হাজার ৩৩৬ জন মিয়ানমারের নাগরিক ও ২ হাজার ৬৭৮ জন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। অভিযানে ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও ২ হাজার ৮৮ জনকে আটক করা হয়েছে। আটক সর্বমোট ১৯ হাজার ২৫৭ জনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। একই সময়ে সীমান্ত এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে মোট ২ হাজার ১৮৪ কোটি ২৮ লাখ ৫২ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।
রোববার (১২ জানুয়ারি) বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, অভিযানে ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ২ হাজার ৮৮ জনকে এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ২ হাজার ৬৭৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক, ১৫৫ জন ভারতীয় নাগরিক এবং ১৪ হাজার ৩৩৬ জন মিয়ানমারের নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
জব্দ চোরাচালান পণ্যের মধ্যে রয়েছে- ১৩১ কেজি ৪২৪ গ্রাম স্বর্ণ, ১৩৭ কেজি ২৮৯ গ্রাম রৌপ্য, ২ লাখ ১৪ হাজার ৮০৫টি শাড়ি, ২ লাখ ১০ হাজার ৬৩টি থ্রিপিস, লেহেঙ্গা, তৈরি পোশাক, ৩৩ লাখ ২২ হাজার ৩৬১টি কসমেটিকস সামগ্রী, ৭০ লাখ ১৫ হাজার ৮২৪ কেজি চিনি, ৫৮ হাজার ২৭৪ কেজি চা পাতা, ২ লাখ ৩৫ হাজার ৪৪৬ কেজি পেঁয়াজ, ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৪৯৭ কেজি রসুন, ৬৫ হাজার ২৯৮ কেজি জিরা, ৮৯ হাজার ৩৬৫ কেজি মাছ, ৪ লাখ ৩১ হাজার ৪০৭ কেজি সুপারি, ৪৮ হাজার ৫৯৮ ঘনফুট কাঠ, ৬ হাজার ৫৩ ঘনফুট পাথর, ৭ লাখ ৩৭ হাজার ১৮০ কেজি কয়লা, ৬১ হাজার ১৪৪টি ইমিটেশন গহনা, ১৭টি কষ্টিপাথরের মূর্তি, ১৪ কেজি ৮১ গ্রাম সাপের বিষ, ৮ কেজি ৩৯৮ গ্রাম তিমির বমি (অ্যাম্বারগ্রিস), ৩৩ হাজার ১৩২ কেজি কারেন্ট জাল, ১২ লাখ ৬৭ হাজার ১৪৮ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ২৫ হাজার ৬২৪ কেজি সার, ১২ হাজার ২৬২ লিটার ডিজেল, পেট্রোল, অকটেন, ৯ হাজার ৯০৭টি মোবাইল, ১ লাখ ৫টি মোবাইল ডিসপ্লে, ৩ লাখ ৬০ হাজার ২৮৮ পিস চশমা, ১০ লাখ ৩২ হাজার ৯৪ পিস চকলেট, ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৫৩ প্যাকেট বিস্কুট, ২ হাজার ১৮০ প্যাকেট কীটনাশক, ৩৮ কেজি ৪০০ গ্রাম কচ্ছপের হাড়, ২ কোটি ৫১ লাখ ৬৪ হাজার ৫০৭ পিস আতশবাজি, ২০৭টি ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান, ৮টি বাস, ৪৭টি প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস, ৯১টি পিকআপ, ৩৮৩টি সিএনজি ও ইজিবাইক, ৮৭৩টি মোটরসাইকেল এবং ২৩৫টি বাই-সাইকেল।
একই সময়ে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- ৩৮টি পিস্তল, ৫টি এসএমজি, ১৮টি গ্রেনেড, ৮টি রাইফেল, ৬টি রিভলভার, ৫২টি বিভিন্ন ধরনের বন্দুক, ৮ হাজার ৮৫৯ রাউন্ড গোলাবারুদ, ৪৫টি ম্যাগাজিন, ৪টি মর্টার শেল, ৪১টি ককটেল, ১০.৪৪ কেজি গান পাউডার এবং ২৩৩টি ব্লাংক কার্টিজ। এ ছাড়া গত বছর বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যও জব্দ করেছে বিজিবি। ৯২ লাখ ১৬ হাজার ৮৭৮ পিস ইয়াবা, ৮৪ কেজি ৭৯১ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ, ৩১ কেজি আফিম, ২ লাখ ১৪ হাজার ২৮ বোতল ফেনসিডিল, ২ হাজার ৩৯ হাজার ৩৭২ বোতল বিদেশি মদ, ৭ হাজার ৭৭৯ লিটার বাংলা মদ, ১ লাখ ৮৪ হাজার ২৮০টি মদ তৈরির ট্যাবলেট, ১৩ হাজার ২৬৬ ক্যান বিয়ার, ১৫ হাজার ৭৮২ কেজি গাঁজা, ২৬৪ কেজি ৮৪ গ্রাম হেরোইন, ৬ হাজার ২৪ কেজি ৩৫৩ গ্রাম কোকেন, ১৪৭ বোতল এলএসডি, ৮৯ লাখ ৭ হাজার ৩৪৩টি অ্যানেগ্রা ও সেনেগ্রা ট্যাবলেট, ৩৬ হাজার ১৭৩টি ইস্কাফ সিরাপ, ১১১ লাখ ১০ হাজার ৫৪৮টি বিভিন্ন প্রকার ওষুধ, ১২ হাজার ৫১০ বোতল এমকেডিল ও কফিডিল, ১২ লাখ ৭৩ হাজার ৪১২টি নেশা জাতীয় ও উত্তেজক ইনজেকশন এবং ৫৭ লাখ ৭০ হাজার ৭৫৭টি অন্যান্য ট্যাবলেট জব্দ করা হয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে ১২০ একর জমির পপি ক্ষেত।