
অনলাইন ডেস্কঃ
কক্সবাজারে লবণের ব্যাপক দরপতন হয়েছে। ফলে উৎপাদিত লবণ বিক্রি করে খরচ উঠছে না চাষিদের। উলটো মণপ্রতি ২০০ টাকা কম দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা লবণ। এতে বিপাকে পড়েছেন পেকুয়া কুতুবদিয়ার প্রায় ১৩ হাজারসহ জেলার ৪০ হাজার চাষি।
তারা বলছেন, মাঠপর্যায়ে প্রতিমণ কাঁচা লবণ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উৎপাদন খরচ পড়ছে প্রায় সাড়ে ৪০০ টাকা। মণপ্রতি ২০০ টাকা কম দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা লবণ। গেল বছর প্রতি কেজি কাঁচা লবণের মাঠপর্যায়ে দাম ছিল ১২-১৩ টাকা অর্থাৎ মণপ্রতি ৫০০-৫৫০ টাকা। চাষিরা জানান, প্রতি কেজি প্যাকেটজাত লবণ ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু সেখানে কাঁচা লবণ মাঠপর্যায়ে কৃষক দাম পাচ্ছে প্রতি কেজি চার থেকে পাঁচ টাকা। এ মুহূর্তে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে হাজার হাজার চাষি পথে বসে যাবেন।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটিরশিল্প করপোরেশন (বিসিক) কক্সবাজার তথ্যমতে, পেকুয়া উপজেলায় ১০ হাজার ২৩৫ একর এবং কুতুবদিয়া উপজেলায় ৬ হাজার ৭৫৮.৪৮ একর জমিতে লবণ চাষ হচ্ছে। তবে সারা দেশে চলতি লবণ মৌসুমে প্রায় ৬৮ হাজার ৫০৫ একর জমিতে লবণ উৎপাদন হচ্ছে। গেল অর্থবছরে লবণের জাতীয় চাহিদা ছিল প্রায় ২৬ লাখ ১০ হাজার টন। এছাড়া লবণ উৎপাদন কাজে সরাসরি জড়িত চাষি ৪০ হাজার ৬৯৫ জন। পরিবহনসহ এই খাতে জড়িত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার।
উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের লবণচাষি আমান উল্লাহ বলেন, চলতি লবণ মৌসুমে প্রতি কেজি লবণ বিক্রি হচ্ছে চার থেকে পাঁচ টাকায়। প্রতিমণ কাঁচা লবণের মূল্য ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গত অর্থবছরে প্রতিমণ কাঁচা লবণ ৫০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সে হিসেবে গত বছরের চেয়ে এ বছর দরের পতন অর্ধেকের চেয়ে বেশি। তিনি বলেন, গত বছর চল্লিশ শতক জমির আগাম মূল্য ছিল ৪০-৫০ হাজার টাকা। শ্রমিকের মজুরিও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ছিল। এ বছর এ দুটোই বেড়েছে। এ বছর প্রতি কানি (বিঘা) জমির আগাম বাবদ ২০-৩০ হাজার টাকা বেড়েছে। বেড়েছে সেচ ও পানির দামও। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লবণ উৎপাদনে উপকরণ পলিথিনের দাম। সবকিছুর দাম বাড়লেও চরমভাবে হ্রাস পেয়েছে কাঁচা লবণের দাম।
এ ব্যাপারে রাজাখালী চরিপাড়ার লবণচাষি ফরিদুল আলম বলেন, এমনিতে ঘন কুয়াশাসহ বৈরী আবহাওয়ার কারণে কম লবণ উৎপাদন হচ্ছে। তার ওপর লবণের ন্যায্য দাম নেই। এ অবস্থা চলতে থাকলে পুঁজি হারিয়ে পথে বসতে হবে। এ ব্যাপারে লবণ শিল্পের উন্নয়ন কার্যালয় কক্সবাজারের উপমহাব্যবস্থাপক মো. জাফর ইকবাল ভুঁইয়া বলেন, নভেম্বর মাসের শুরুর দিকে লবণ উৎপাদন শুরু হয়েছে। জেলার কিছু উপজেলায় চাষিরা আগাম মাঠে নেমেছেন। কিছু এলাকায় মাঠ প্রস্তুতি চলছে। তিনি বলেন, বিসিক লবণের দর নির্ধারণ করে না। চাষি এবং ব্যবসায়ীদের ওপর নির্ভর করে লবণের মূল্য।
সূত্রঃ ইত্তেফাক