
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
আওয়ামী লীগ ও বর্তমান সরকারের আমলে পদন্নোতি পাওয়া পিজি হাসপাতালের আলোচিত ও নানা কারনে বিতর্কিত ডাক্তার ওমর সাদিক খানের পরকিয়া প্রেমের কাহিনী এখন তুঙ্গে। ডাক্তার- নার্স সহ কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে প্রেম কাহিনী নিয়ে সমানে আলোচনা চলমান। ওমর সাদিক এই বিষয় নিয়ে কথা বলতে চানি নি। দফায় দফায় এই প্রতিবেদক তার সাথে কথা বলে বক্তব্য চাইলেও তিনি কথা বলতে রাজি হন নি।
জানা গেছে, জুনিয়র এক নারী ডাক্তারের সাথে তার পরকিয়া চলছে। ওটিতে সহকারী হিসাবে ওমর সাদিক তাকে সব সময়েই বগল দাবা করে নিয়ে চলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ওয়ার্ড বয়, নার্স তাদের প্রেমের কথা জানিয়ে বলেছেন, এটা তো হাসপাতালের সবাই জানে। একেবারে ওপেন সিক্রেট ঘটনা।
রাজধানীর উত্তরাতে প্রাইভেট হাসপাতালে কল পেলে রাত বিরাতে তাকে নিয়ে ওটিতে বের হয়ে পড়েন। যাওয়া আসার পথে লং ড্রাইভেও বের হন। অতি সম্প্রতি তাদেরকে কাটাবনে একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট দেখা গেছে। হাতিরঝিল ও উত্তরার অভিজাত রেস্টুরেন্টেও ঘনিষ্ঠভাবে দেখা গেছে। ৩০০ ফিট রাস্তায় মধ্য রাতেও তারা ঘুরাফেরা করেন।
সুত্র বলছে, বয়সের বিস্তর ব্যবধান থাকলেও অনেকটা সুগার ড্যাডি প্রেমে তারা মত্ত। মেয়ে ডাক্তারের নাম ফারাহ ফেরদৌস। তার আপন বোনও ডাক্তার। ফারাহ পিতার বয়সী ডাক্তার ওমরকে হাত করে নিজের ক্যারিয়ারের স্বার্থে পরকিয়া সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
তাদের পরকিয়া- অনৈতিক সম্পর্ক এখন সবার মুখে মুখে। দুই পরিবারের সবাই কম বেশি অবগত। এই নিয়ে ডাক্তার ওমর সাদিকের সাথে তার স্ত্রীর অনেক সময়ই ঝামেলা হয়েছে। ফারার পরিবারও অবগত।
ফারাহর বক্তব্য নিতে ফোন দিলে ফোন রিসিভ করেন নি তিনি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করলে তিনি এই প্রতিবেদককে চিনেন না বলে জানান। একই সাথে বলেন টেক্সট করতে। কি নিয়ে কথা বলবো সেটা লিখে পাঠাতে বলেন। পরে এই প্রতিবেদক প্রশ্ন লিখে পাঠালে ফারাহ হোয়াটসঅ্যাপে আর সাড়া দেন নি। অতি সম্প্রতি ফারাহকে ডাক্তার ওমর সাদিকের টিম থেকে সরিয়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ফারাহর মা প্রথম সময়কে বলেছেন, তার মেয়ে একটি বাচ্চা মেয়ে, ওমর সাদিক বয়স্ক মানুষ। তার ঘরে সুন্দরী স্ত্রী, দুই ছেলে মেয়ে আছে। তার মেয়ের সাথে ডাক্তার ওমরের পিতা কন্যার সম্পর্ক। ফারাহ পরকিয়াতে জড়াতে পারেন না, এমন দাবি তার।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে ডাক্তার ওমর মেডিকেল অফিসার হিসাবে চাকুরীতে যোগ দেন। তখন বিএনপির শাসন আমল ছিলো। ডাক্তার ওমরের পিতা সরকারের একজন সচিব ছিলেন। সচিব কোটায় তিনি চাকরিতে যোগ দেন। বিএনপি ঘরানার এই ডাক্তার ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে রাতারাতি তিনি আওয়ামী লীগার বনে যান।
আওয়ামী লীগের সাথে তাল মিলিয়ে চলে ২০১৮ তে সহকারি অধ্যাপক হিসাবে পদন্নোতি পান। শেখ হাসিনার পতন পর্যন্ত তিনি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের ব্যানারে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পরে ২০০৩ সালে বিএনপি আমলে যোগদানের সময়কে রেফারেন্স হিসাবে রেখে নিজেকে আওয়ামী লীগের আমলে নির্যাতিত ও পদবঞ্চিত ধরে তার সাথে বৈষম্য করা হয়েছে এমন ভাবে নিজেকে আবারও উপস্থাপন করে পদন্নোতি বাগিয়ে নেন।
এই ঘটনা ডাক্তারদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া বিদ্যমনা। কেউই বিষয়টি ভালোভাবে মেনে নিতে পারেন নি। ডাক্তাররা ইতিমধ্যেই জাতীয় নাগরিক কমিটির সাথে যোগাযোগ করে তাদের ক্ষোভের কথা, পদন্নোতি নিয়ে বৈষম্যের কথা জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগের দোসর হিসাবে গত সরকারের সুবিধাভোগী এই সরকার আমলেও কিভাবে পদন্নোতি পায়, সেই প্রশ্নই এখন সবার মুখে মুখে।
প্রাপ্ত সুত্র বলছে, ২০০৩-০৬ সালের মধ্যে নিয়োগপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার থেকে আওয়ামীলীগ আমলে সুবিধা নিয়ে ২০১৮ সালে সহকারি অধ্যাপক হওয়া ও ২০২৪ এর ৫ই আগস্টের পর সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া একমাত্র সৌভাগ্যবান ব্যক্তি হচ্ছেন ডাক্তার ওমর সাদিক। বিষয়টি একেবারেই নজিরবিহীন। আলোচিত, বিতর্কিত ডাক্তার ওমর তার পদন্নোতি ও পরকিয়ার কারনে এখন টক অব দ্য পিজি।
পরবর্তী পর্ব: ডাক্তার ওমর ও ডাক্তার ফারাহর ভুলের কারনে দুই দুটি অমুল্য জীবন হারিয়ে গেছে, ভুক্তভোগীরা মামলা করতে ইচ্ছুক