
অনলাইন ডেস্কঃ
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের আমলে ভারতীয় কোম্পানিকে অবৈধভাবে পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি অনুসন্ধান দল।
রোববার দুপুরে সংস্থাটির একটি দল এ-সংক্রান্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে আসে। অভিযান পরিচালনাকারী দলে ছিলেন দুদকের সহকারী পরিচালক তাপস ভট্টাচার্য, উপসহকারী পরিচালক রোকনুজ্জামান।
দুদকের উপসহকারী পরিচালক রোকনুজ্জামান বলেন, আওয়ামী সরকারের আমলে কিছু দুর্নীতি নিয়ে আমরা এনসিটিবিতে তথ্য যাচাই করতে এসেছি। চেয়ারম্যানসহ যারা আছেন, তাদের বেশিরভাগ সম্প্রতি নিয়োগ পেয়েছেন। যেসব নথি প্রয়োজন, সেগুলোর তেমন কিছু পাইনি।
তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কোম্পানি অনিয়ম খতিয়ে দেখতে এনসিটিবি বরাবর একটি আবেদন করেছে। এনসিটিবি আমাদের সেই আবেদনের কপি প্রদান করেছে। এটা নিয়ে আমাদের অনুসন্ধান সম্পন্ন হবে না। আমাদের সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু নথি দেখার প্রয়োজন। কাজ চলমান থাকবে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ আমলে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানকে অবৈধভাবে দুই কোটি পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। ভারতকে কাজ দিতে গিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করা হয় বলেও অভিযোগ জমা পড়ে। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই অভিযান চালায় দুদক।
২০১৭ শিক্ষাবর্ষের ওই সব পাঠ্যবই ছাপার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ান কোম্পানি টিপিএস টেন্ডারে অংশ নিয়ে মোট ১৭টির সর্বনিম্ন দরদাতা হয়। কিন্তু প্রায় ৫০ কোটি টাকার ছাপার কাজ তাদের না দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার উচ্চমহলের ইশারায় সে কাজ দেয় ভারতের একটি কোম্পানিকে।
দুদক বলছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভারতকে পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর কাজ দিয়ে কী পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ক্ষতি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। একই সঙ্গে গত সরকারের আমলে পাঠ্যপুস্তকের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির নথিপত্রও সংগ্রহ করছে সংস্থাটি।
জানতে চাইলে এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক রিয়াজুল হাসান বলেন, দুদকের টিম আমাদের কাছে তথ্য ও নথি দেখতে চেয়েছেন, আমরা কিছু দেখিয়েছি। তারা প্রয়োজন অনুযায়ী নথিগুলো প্রিন্ট করে নিয়েছে। আরও কিছু নথি আমরা তাদের জোগাড় করে দেবো। আমরা চাই, বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান হোক, সত্যটা বেরিয়ে আসুক।