
অনলাইন ডেস্কঃ
অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক। আর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা হয়েছে সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে, প্রায় সাড়ে চারশো’ কোটি টাকার প্রকল্পে দুর্নীতির খোঁজে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে অভিযান চালি দুদক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর এসকে সুরকে গ্রেফতারের পর বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকা তার লকার থেকে উদ্ধার হয় ১ কেজি স্বর্ণ, ১.৬৯ লাখ ডলার ও ৫৫ হাজার পাউন্ড বিদেশী মুদ্রাসহ বিপুল টাকা। এরপরই সামনে আসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের লকার প্রসঙ্গ।
আদালতে আবেদনের পর লকার অনুসন্ধানের অনুমতি পায় দুদক। অনুসন্ধানের প্রথম দিনে পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানের নেতৃত্বে দুদকের একটি দল অভিযানে নেমেও কিছু মেলেনি। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই সংক্রান্ত তদন্ত থেকে সরিয়ে দেয়া হয় পরিচালক সায়েমুজ্জামানকে।
প্রত্যাহার করার পর দপ্তর থেকেই বদলি করা হয়েছে। তার স্থলে পরিচালক মোহাম্মদ মোরশেদ আলমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই পরিবর্তনের কারণে কাজের কোনো ব্যঘাত ঘটবে না জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন সংস্থার (দুদক) মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
কামাল মজুমদার-তার ছেলের নামে মামলা
এদিকে, সোয়া ১৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ২৯৬ কোটি টাকার সন্দেহভাজন লেনদেনের অভিযোগে সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার এবং তার ছেলের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ের সামনে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, কামাল আহমেদ মজুমদার ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন ১২ কোটি ৯৫ লাখ ৫৮ হাজার ৫৯০ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া নিজ নামে ও প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে পরিচালিত ১০টি হিসাবে মোট ২৯৬ কোটি ৩ লাখ ৫ হাজার ৯৬৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দ্বিতীয় মামলায় তার ছেলে শাহেদ আহমেদ মজুমদার ও বাবা কামাল আহমেদ মজুমদারকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রভাব ও আর্থিক সহায়তায় জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২ কোটি ৩৯ লাখ ৭৩ হাজার ৭৩৬ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এছাড়া কামাল আহমেদের স্ত্রী শাহিদা কামালের নামে কোনোন আয়কর নথি ও ব্যাংক হিসাব পাওয়া যায়নি। তথাপি তার নামে বেনামে সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৬(১) ধারায় সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারি করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরে অভিযান
সারাদেশে পৌর সভার প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরে অভিযান চালিয়েছে দুদক। মঙ্গলবার সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আল আমিনের নেতৃত্বে একটি দল আগারগাঁও এলজিইডি ভবনে এই অভিযান চালায়।
দুদকের তথ্য বলছে, ২০১৮ সালের শুরু হওয়া ৫ বছরের জন্য ২৮৫ পৌর সভার রাস্তা, কালভার্ট ও ব্রিজ উন্নয়ন প্রকল্পে প্রথম বরাদ্দ পায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। পরবর্তীতে আরও এক হাজার কোটি টাকার বাড়ানো হয় প্রকল্পের বরাদ্দ।
তবে, প্রকল্পের কাজ পেতে কমিশন প্রদান ও ত্রুটিপূর্ণ কাজসহ বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। এসব নথিপত্র সংগ্রহ করে পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই করে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন অভিযানকারী দল।