
অনলাইন ডেস্কঃ
দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ৬ মাসের মাথায় পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে পদ থেকে অপসারিত হলেন ইরানের অর্থমন্ত্রী আব্দুলনাসের হেম্মতি। ব্যাপক মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রার দরপতনের জেরে আয়োজিত ভোটাভোটিতে ২৭৩ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ১৮২ জন অর্থমন্ত্রীর বিপক্ষে অবস্থান নেয়।
রোববার (২ মার্চ) দেশটির স্পীকার মোহাম্মদ বাগের গালিবাফ এ কথা জানায়।
জানা যায়, ২০১৫ সালে ডলারের বিপরীতে ইরানি মুদ্রার মান ছিল ৩২ হাজার রিয়াল। কিন্তু মাস ছয়েক আগে মাসুদ পেজেস্কিয়ান ক্ষমতায় এলে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৬ লাখ ডলারে।
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সমস্যাসহ মধ্যেপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক অস্থিরতার জেরে রিয়ালের পতন ব্যাপকভাবে ঘটে। শেষ পর্যন্ত তা রাজধানী তেহেরানের মুদ্রা বিনিময়ের দোকানগুলোতে ১ ডলারের বিপরীতে ৯ লাখ ৫০ হাজার রিয়ালে গিয়ে ঠেকে। ফলে পণ্যদ্রব্যের দাম হু হু করে বেড়ে যায়। এমন পরস্থিতিতে ইরানিরা এ মাসেই উৎযাপন করতে যাচ্ছে নওরোজ উৎসব।
দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক এই গর্ভনরকে অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণের সময় পার্লামেন্টে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেস্কিয়ান। তিনি সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, আমরা শত্রুদের সঙ্গে পুরো মাত্রায় অর্থনৈতিক যুদ্ধের মধ্যে আছি। এখন আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক সমস্যা একজন ব্যক্তির সঙ্গে সর্ম্পকিত নয়। আমরা এর জন্য একজনকে দায়ী করতে পারি না।
অভিসংসন কার্যক্রম চলাকালে মুহাম্মাদ কাসিস ওসমানী নামে এক আইনপ্রণেতা হেম্মতিকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, বর্তমান মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রার দরপতনের জন্য অর্থমন্ত্রী দায়ী নয়। বর্তমান অবস্থার জন্য তিনি আগের ইব্রাহিম রইসি সরকারকে দায়ী করেন।
এদিকে, কট্টরপন্থী আইনপ্রণেতারা এ জন্য মাসুদ পেজেস্কিয়ানের সরকারকে তীব্রভাবে আক্রমণ করে বলেন, হেম্মেতি যতদিন ক্ষমতায় থাকবেন, অর্থনৈতিক সমস্যা থাকবে।
অপসারিত অর্থমন্ত্রী হেম্মেতি বর্তমান অবস্থা স্বীকার করে বলেন, এ জন্য তিনি দায়ী নয়। ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি ট্রাম্প বাতিল করার পর থেকে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। বর্তমান মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনায় সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে ইরানের ধর্মীয় নেতা আলি খামেনি বলেন, ইরান যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের কাছে মাথা নত করবে না।