
অনলাইন ডেস্কঃ
বিশেষ প্রতিনিধি, খুলনা থেকে ফিরে:
সদ্য সমাপ্ত খুলনা মহানগর বিএনপির সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ২ ভোটের মালিক কাজি মাহমুদ কি করবেন? তার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান কি হবে? এই প্রশ্ন দলের নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে। এটা এখন টক অব দ্য খুলনা বিএনপি।
২৪ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে শফিকুল আলম তুহিন ২৮৮ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর। তার প্রাপ্ত ভোট ২০৩। অন্যদিকে, আলোচিত কাজী মাহমুদ আলী পেয়েছেন মাত্র ২ ভোট। সেদিনের নির্বাচনে ৬টি ভোট বাতিল হয়েছে। সম্মেলনে ৫০৫ জন কাউন্সিলর তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
সুত্র বলছে, দলের তাত্ত্বিক নেতা হিসেবে কাজি মাহমুদের সুনাম রয়েছে। তিনি সুবক্তা, আলাপচারিতায় বিনয়ী। নিয়মিত লেখাপড়া করেন। খুলনা- ঢাকায় দলের প্রভাবশালী নেতাদের গুডবুকে আছেন। ঢাকায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভায় যোগ দিতে এসে ২০১৭ সালে গ্রেফতার হয়েছিলেন। সেই সময়ে কাজি মাহমুদ কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রায় তিন মাস আটক ছিলেন। শেখ হাসিনার আমলে একাধিকবার কারাবন্দী হয়েছেন।
জানা গেছে, একই সময়ে কেন্দ্রীয় কারাগারে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মানুন বন্দী ছিলেন। সেই সময়ে গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের সাথে তার সখ্যতা হয়, যা আজও চলমান। বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী শিমুল বিশ্বাসের সাথেও তার সম্পর্ক ভালো। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমদের সাথেও কাজি মাহমুদ নিয়মিত সম্পর্ক মেইনটেইন করে চলেন।
খুলনা বিএনপির রাজনৈতিক দুই অভিভাবক রকিবুল ইসলাম বকুল ও আজিজুল বারি হেলালের সাথেও ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক সম্পর্ক ভালো। নানা সমীকরনে উত্তির্ন বিদগ্ধ কাজি মাহমুদের শেষ বয়সে বেহাল দশায় সবাই যারপরনাই বিস্মিত- মর্মাহত- বিব্রত। সুত্র বলছে, সম্মেলনের আগে হঠাৎ করেই কাজি মাহমুদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।
কাজি মাহমুদের স্ত্রী জানান, খাবারে অরুচি ও নিদ্রাহীনতা কাজি মাহমুদকে দুর্বল করে ফেলে। এর পাশাপাশি প্রেসার ও ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণহীনতার কারনে কাজি মাহমুদ আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। সম্মেলনের আগের দুদিন তো কাজি মাহমুদ সোজা হয়ে দাড়াতেই পারেন নি।
একটি অসমর্থিত সূত্র বলছে, সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে ভোটাভুটির আগে কাজি মাহমুদ নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছেন, এমন প্রচারণা ছড়িয়ে পড়ে। গুরুতর অসুস্থ কাজি মাহমুদ সেই মুহুর্তে সেটা রুখে দিতে ব্যর্থ হন। ফলে কাউন্সিলররা ধরেই নিয়েছিলেন, কাজি মাহমুদ আর প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেই। এভাবেই ভোটের মাঠে বড় ধরনের পরাজয় প্রকাশ হয়ে পড়ে। বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যান কাজি মাহমুদ।