
বিশেষ প্রতিনিধি:
সাত মাস ধরে খুলনা জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি নেই। জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের সাথে সাথে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ খুলনা জেলা ও নগর শাখা এক অজ্ঞাত কারনে বিলুপ্ত করে দেয়। সেই থেকেই সংগঠনের কার্যক্রম কমিটি বিহীন অবস্থায় রয়েছে।
ফলে বিভাগীয় শহর খুলনাতে বিপুল সংখ্যক নেতা- কর্মীদের মধ্যে হতাশা- ক্ষোভ বিরাজ করছে। কমিটি বিহীন থাকায় সাবেক কমিটির নেতৃবৃন্দসহ আগামীতে নেতৃত্ব প্রত্যাশি নেতারা রীতিমতো বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করে একাধিক নেতা বিলুপ্তবিহীন অবস্থাকে রীতিমতো অপমানজনক বলে মন্তব্য করেছেন। তারা বলেছেন, দুই চার জনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য আমরা শত শত নেতা- কর্মীরা পদ বঞ্চিত হয়ে একরকম হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছি।
সুত্র বলছে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে দলের নেতারা যাতে পদ- পদবী ব্যবহার করে চাঁদাবাজি- জমি দখলসহ অন্যান্য অসামাজিক
/ অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত না হতে পারে, এমন সম্ভাবনা মাথায় রেখে কেন্দ্র থেকে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। জেলা ও নগরসহ আওতাধীন সকল ইউনিট কমিটিও বিলুপ্ত করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সম্ভাব্য নেতৃত্ব প্রত্যাশী একাধিক ছাত্রনেতা অন লাইন নিউজ পোর্টাল প্রথম সময়কে বলেছেন, রেগুলার স্টুডেন্ট আছেন এমন নেতারা দলের দায়িত্বে আসার প্রত্যাশা সবার। এই বিষয়ে সবাই একমত। তারা আরও বলেছেন, খুলনাতে একটি বিশ্ববিদ্যালয়, তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এবং ১৪ টি কলেজ রয়েছে যেখানে ছাত্রদলের নিয়মিত কার্যক্রম আছে। সেই প্রেক্ষাপটে রেগুলার ছাত্রদের নিয়ে কমিটি করা উচিৎ।
অভিযোগ আছে, ছাত্রত্ব নেই এমন কেউ কেউ কমিটিতে আসতে তৎপর। কমিটিতে আসতে বিশাল বাজেট নিয়ে উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পড়েছেন এমন একজন ছাত্রনেতা ইতিমধ্যেই মাঠে নেমেছেন। নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের অনেকেই এই ছাত্রনেতার শেল্টারে আছেন, এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট।
নেতা-কর্মীদের মন্তব্য, উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুইটি সার্টিফিকেট
নিয়ে তিনি ঘুরছেন? সেটা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। এইচএসসি পাশের পরে তিনি কোথায় পড়েছেন বা আদৌ পড়েছেন কিনা, সেটাও কেউ জানে না, বলতে পারেন নি কেউ। তার নিয়মিত ছাত্রত্ব দৃশ্যমান রয় এমন দাবি ছাত্রদলের মাঠ পর্যায়ের শিক্ষার্থী নেতা-কর্মীদের।
আজম খান কমার্স কলেজের মাস্টার ডিগ্রী পড়ুয়া একজন শিক্ষার্থী যিনি একই সাথে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত, তিনি এই প্রতিবেদককে বলেছেন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি- এইচএসসি পাশের দাবিদার এখন ছাত্রনেতা কিভাবে আমাদের মত মাস্টার্স শিক্ষার্থীদের সামনে কথা বলবেন বা ডমিনেট করবে?
তিনি বলেছেন, আমরা এই কারনে রীতিমতো মানসিক টর্চারে আছি, বলা যায় এক ধরনের ট্রমায় আছি। যদি এমনটা হয়, তবে আমার মতো শিক্ষার্থীদের অনেকেই ছাত্রদল করা ছেড়ে দেবে। রেগুলার ছাত্রত্ব আছে এমব কাউকে নেতা হিসাবে দেখতে আগ্রহী কর্মীরা। এই নিয়ে শিক্ষার্থী ছাত্রদলের শত শত নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ- ক্ষোভ বিরাজমান।