
অনলাইন ডেস্কঃ
২৭ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার। মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৬০ শতাংশ আসে এই বাজার থেকে। গত বছর আওয়ামী লীগে সরকারের পতনের পর এ শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষসহ নানা অনিশ্চয়তার মধ্যে ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেশ কমেছিল। রপ্তানিকারকদের কপালে পড়েছিল চিন্তার ভাঁজ। তবে নতুন বছরের শুরুতেই দেখা যায় আশার আলো। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে পোশাক রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। রপ্তানি ৬০.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১.৯১ বিলিয়ন ইউরোতে পৌঁছেছে। ২০২৪ সালের একই সময়ে যা ছিল ১.১৯ বিলিয়ন ইউরো।
পরিমাণের দিক থেকে, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ২৭ দেশের অর্থনৈতিক জোট ইইউ অঞ্চলে বাংলাদেশের প্রস্তুতকৃত তৈরি পোশাক রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। আলোচিত সময়ে ১২৬.৮৬ মিলিয়ন কিলোগ্রাম পোশাক রপ্তানি হয়েছে এই গন্তব্যে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যা ছিল ৮০.২৫ মিলিয়ন কিলোগ্রাম। অর্থাৎ, এ বছর একই সময়ে পরিমাণের দিক দিয়ে রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৮.১ শতাংশ।
এই প্রবৃদ্ধি ইউরোপীয় বাজারে অন্যতম প্রধান পোশাক রপ্তানিকারক হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করেছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নির্ধারণ, ইবিএ (এভরিথিং বাট আর্মস) বাণিজ্য সুবিধা এবং উৎপাদন সক্ষমতার উন্নতির কারণে।
ইউরোস্ট্যাটের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ইইউভুক্ত দেশগুলোর পোশাক আমদানি ২৫ দশমিক ১২ শতাংশ বেড়ে ৮ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
জানুয়ারিতে ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯৭ কোটি ডলারে। যা ২০২৪ সালের জানুয়ারির চেয়ে ৬৮ কোটি ডলার বেশি। গত বছরের জানুয়ারিতে এর পরিমাণ ছিল ১২৯ কোটি ডলার। সে হিসাবে ইউরোপের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ৫২ দশমিক ৫৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে।
মূল্য সংযোজিত পোশাক উৎপাদন, চীনের সঙ্গে শুল্ক যুদ্ধের সুবিধা, শুল্কমুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার, সুরক্ষার মান মেনে চলা এবং নির্মাতা ও শ্রমিকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ-এর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল। তিনি বলেন, এ প্রবৃদ্ধি ক্রেতাদের আস্থা বাড়িয়েছে, রপ্তানি বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করেছে।
ইউরোস্ট্যাটের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ইউরোপে পোশাক রপ্তানিতে চীন ৩৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এছাড়া ভারত, পাকিস্তান ও কম্বোডিয়ার প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ৩৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ, ২৫ দশমিক ১২ শতাংশ এবং ৬৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ।