
অনলাইন ডেস্কঃ
ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে হলেও রাজধানী এখনও অনেকটা ফাঁকা। ধীরে ধীরে কর্মব্যস্ত মানুষ ফিরছে ব্যস্ত নগরি ঢাকাতে। এরমধ্যে ঈদের আমেজ কাটিয়ে নগরবাসী এখন বাজারমুখী হলেও অধিকাংশ দোকানপাট এখনও পুরোপুরি খোলেনি। বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ থাকায় পণ্যের সরবরাহও কম। ফলে বাজারে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন এক চিত্র। মুরগি ও গরুর মাংসের দাম কমেছে, তবে কিছু সবজি ও মাছের দাম বেড়েছে।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সকালে বাড্ডা, রামপুরা ও বনশ্রী এলাকার বাজার, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও তালতলা বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের পর চাহিদা কম থাকায় মুরগি ও গরুর মাংসের দাম কমেছে। অন্যদিকে মাছ ও সবজির সরবরাহ কম থাকায় সেগুলোর দাম চড়া।
বিক্রেতারা জানান, ঈদের ছুটির কারণে এখনও অনেক মানুষ ঢাকায় ফেরেননি। এ কারণে বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কম, যা বেচাকেনায় প্রভাব ফেলেছে। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে দেখা গেছে, অধিকাংশ মুদিদোকান বন্ধ, মাছ ও মাংসের বাজারেও অনেক দোকান খোলা হয়নি। তবে সবজির দোকানগুলো ছিল বেশ খোলা।
ঈদের আগে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৪০ টাকায়, যা বর্তমানে ২০০-২১০ টাকায় নেমে এসেছে। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩১০ টাকায়, যা আগে ছিল ৩২০-৩৩০ টাকা। গরুর মাংসের দাম এখন ৭০০-৭৫০ টাকা, যেখানে ঈদের আগে ছিল ৭৫০-৮৫০ টাকা।
মুরগির ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম জানান, ঈদের পর চাহিদা কম থাকায় আমাদেরও দাম কমিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে। মাংসের প্রতি মানুষের আগ্রহ কম, ফলে বেচাকেনাও কম।
মাংসের বিকল্প হিসেবে মাছের চাহিদা বাড়ায় এর প্রভাব পড়েছে দামে। বাজারে পাঙাশ ও তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়, রুই ৩০০-৪০০ টাকায় এবং কাতল মাছ ৩০০-৩৫০ টাকায়। তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে চিংড়ির দাম। চাষের চিংড়ি ৬৫০-৭৫০ টাকা, আর নদীর চিংড়ি ৮০০-১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বিক্রেতারা জানান, সরবরাহ কম থাকলেও সীমিত লাভে বিক্রি করছেন তারা, কারণ ক্রেতা সংখ্যা কম। বিক্রেতা শ্যামল রাজবংশী বলেন, ঈদের পর মানুষ মাংসের বদলে মাছ খোঁজে, কিন্তু সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়ে গেছে।
ঈদের পর টমেটো, শসা, কাঁচামরিচ, লেবুসহ সব কিছুর দামই কিছুটা বেড়েছে। কাঁচামরিচ ১২০ টাকা, শসা ৬০–৭০, টমেটো ৫০–৬০ এবং প্রতিটি লেবু ৮–১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজি বিক্রেতা নূর হোসেন বলেন, চাষিরা মাঠে যাননি, পরিবহনও ছিল সীমিত। তাই সরবরাহ কম। তবে কয়েক দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
বাজার করতে আসা সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী জিল্লুর রহমান বলেন, মাংসের দাম কমে ভালো লাগছে, কিন্তু সবজির বাজার দেখে ভয়ই লাগে। বাজার সংশ্লিষ্টদের আশা, কয়েক দিনের মধ্যেই সরবরাহ স্বাভাবিক হলে মাছ ও সবজির দামও কিছুটা কমে আসবে।