
অনলাইন ডেস্কঃ
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫) নিহতের ঘটনায় গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না আত্মীয়স্বজন-এলাকাবাসী কেউই। এখন তার মরদেহ একনজর দেখার অপেক্ষায় আছেন সকলেই।
নিহত শাহরিয়ার আলম সাম্য সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নের সড়াতৈল গ্রামের ফরহাদ সরদারের ছেলে। ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের মাস্টার্সের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন তিনি।
বুধবার (১৪ মে) খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিহত শাহরিয়ার আলম সাম্য উল্লাপাড়ার মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়। সেখান থেকে এসএসসি পাশ করেন তিনি। মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত সাম্য পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির সুযোগ পান। তার মা কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট। পরিবারের সবাই ঢাকায় বসবাস করেন।
নিহত সাম্যের চাচা কাউসার আলম বলেন, চার সন্তান নিয়ে তার ভাই ঢাকাতেই বসবাস করেন। সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বাকি তিন ভাতিজা বিভিন্ন কর্মে নিয়োজিত রয়েছেন। সাম্যদের পরিবারের সবাই ঈদ ও বিশেষ কোনো আয়োজনে গ্রামে আসতো। গত মঙ্গলবার (১৩ মে) রাত ১টার দিকে জানতে পারি সাম্যকে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাকে হত্যা করা হয়েছে। জানি না কোন অপরাধে আমার ভাতিজাকে খুন করা হলো। এই মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর আত্মীয় স্বজন অনেকেই ঢাকায় চলে গেছে।
এ সময় মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে, পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, শাহরিয়ার আলম সাম্য ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। তিনি উল্লাপাড়া মোমোনা আলী বিজ্ঞান স্কুলে পড়ালেখা করত। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়। সেখানে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথেও জড়িত ছিল।
তিনি আরও জানান, সড়াতৈল জান্নাতুল বাকী কবরস্থানে শাহরিয়ার আলমের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে। মরদেহ আসলে জানাজা শেষে সেখানেই দাফন করা হবে।
অপরদিকে, শাহারিয়ার আলম সাম্য হত্যার প্রতিবাদে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারসহ ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা।
পরিবারের বরাদ দিয়ে বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকেরিয়া হোসেন বলেন, ঢাকায় জানাজা শেষে নিজ গ্রামের বাড়িতে আনা হচ্ছে। মরদেহ আসলে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মুক্তমঞ্চের পাশ দিয়ে মোটরসাইকেল যাওয়ার সময় আরেকটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় সাম্যকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে রাত ১২টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।