
অনলাইন ডেস্ক:
গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে লীজ নিয়ে দাকোপের চুনকুড়ি মধ্যপাড়া ডাকাতিয়া খালে মাছ চাষ করছিলেন উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক প্রসেনজিৎ রায়ের ভাই দীপ্ত রায়। গত ১২ মে এসি ল্যান্ড কার্যালয়ে উপজেলার সবগুলো খালের নতুন করে ইজারা দেওয়া হয়। ছাত্রদল নেতার ইজারা নেওয়া খালটি সর্বোচ্চ দর হেকে লীজ নেন ছাত্রলীগ নেতা হানিফ শেখ ও আওয়ামী লীগ নেতা শাওন মোল্লা শমসের। আর নিলাম ডাকের সময় এসি ল্যান্ড কার্যালয়ে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকে খাল নিলাম পেতে সহায়তা করলেন চালনা পৌর বিএনপির আহবায়ক (সদ্য বহিস্কৃত) শেখ মোজাফফর হোসেন।
তবে খাল লীজ নিয়েই খ্যান্ত হননি আওয়ামী লীগ নেতারা। ১৩ মে রাতে ওই খালে বিষ প্রয়োগ করে ছাত্রদল আহবায়কের চাষ করা সমস্ত মাছ মেরে ফেলে। এতে মাছের পোনা ক্রয়, মাছের খাবার, পরিচর্যা ও কর্মচারীর বেতন সহ প্রায় ১৬ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করা হয়। সর্বশান্ত ছাত্রদল নেতা প্রসেনজিতের ভাই দীপ্ত রায় রোববার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, চুনকড়ি মধ্যপাড়ায় সরকারি খাস খাল এক বছরের জন্য ১ লক্ষ ৮২ হাজার ৫০০ টাকায় ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করছিলাম। আমার ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই উপজেলা প্রশাসন ইজারার ডাক আহবান করে। ছাত্রদলের সম্মেলন থাকার কারণে আমার ভাই সেখানে ব্যস্ত থাকায় তার প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য শেখ হেলাল কাঞ্চন, চালনা পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আইয়ুব কাজী, চালনা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আবু তাহের শেখ ও সদস্য সচিব বাপ্পী কাজী অংশগ্রহণ করেন।
অপর দিকে ইজারা ডাকে অংশ নেওয়া বাজুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা হানিফ শেখ ও আওয়ামীলীগ নেতা শমসের মোল্লার পক্ষে অবস্থান নেন পৌর বিএনপির আহবায়ক শেখ মোজাফফর হোসেন। পাশাপাশি দাকোপ থানা অফিসে বসে থেকে পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দেন দাকোপ উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক সদস্য সচিব আব্দুল মান্নান খান। ১২ মে সোমবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের কক্ষে ডাক শুরু হলে ১ লক্ষ ৮২ হাজার ৫০০ টাকার ডাকাতিয়ার খাস খাল ৪ লক্ষ এক হাজার টাকায় ইজারা নেন বাজুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ হানিফ শেখ ও আওয়ামী নেতা শমসের মোল্লা। ইজারায় অংশ নেয়ায় উপজেলা প্রশাসনের কক্ষ থেকে বের হয়েই আমাদের প্রতিনিধি শেখ হেলাল কাঞ্চন, আইয়ুব কাজী, আবু তাহের শেখ ও বাপ্পী কাজীকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করে। একই দিন রাতের আঁধারে আমার ঘেরের কর্মচারী মুসা শেখকে ঘেরের বাসা থেকে বের করে দিয়ে দখল নেয়। এবং রাতেই ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ ধরে নিয়ে যায় ও অবশিষ্ট গুলো পচে ভেসে ওঠে। এখন আমি ও আমার পরিবার নিঃস্ব হয়ে পথে বসতে চলেছি।
তিনি অভিযোগ করেন, হিন্দু পরিবারের সন্তান প্রসেনজিৎ রায় ছাত্রদলের আহবায়ক হয়েছে এটা বিএনপির একটি পক্ষ মেনে নিতে পারেনি। এ বিষয়ে দাকোপ থানায় অভিযোগ দিলেও অদৃশ্য কারনে মামলা আমলে নেয়নি।
দাকোপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, তারা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। সেখানে কারো নাম উল্লেখ করেনি। খালের একপাশ দিয়ে তারা মাছ মারছিল। অন্যপাশে মাছ মরে ভেসে ওঠে। তাতে ধারণা করে কেউ বিষ দিয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে একজন দারোগা পাঠিয়েছি। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।