
অনলাইন ডেস্কঃ
বিশ্বব্যাপী পরিবেশ রক্ষা ও খাদ্য নিরাপত্তায় মৌমাছির ভূমিকা বিবেচনায় ২০ মে বিশ্ব মৌমাছি দিবস হিসেবে পালিত হয়। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ বিকিপারস এসোসিয়েশন (BBKA) গত ২০ মে ২০২৫, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজন করে এক বিশেষ আলোচনা সভার।
সভায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ এবাদুল্লাহ আফজাল বলেন, “মৌচাষ শুধু মধু উৎপাদনের জন্য নয়; এটি একটি পূর্ণাঙ্গ শিল্প, যার মাধ্যমে পোপোলিশ, মৌবিষ, রয়েল জেলি, পোলেন, মোমসহ বিভিন্ন মূল্যবান উপকরণ বাজারজাত করা সম্ভব। এই খাতকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি নিরাপত্তা, উন্নত প্রশিক্ষণ ও বাজার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার যদি মৌচাষিদের প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি ও আর্থিক সহায়তা দেয়, তাহলে গ্রামীণ অর্থনীতিতে মৌচাষ একটি বড় অবদান রাখতে পারে। এটি পরিবেশবান্ধব, কৃষিবান্ধব এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহ-সভাপতি চান মিয়া সরকার, এবং সঞ্চালনা করেন প্রচার সম্পাদক জনাব নুরুল হুদা।
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় রেজিস্ট্রেশন, টি-শার্ট বিতরণ এবং পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে। তিলাওয়াত করেন হাফেজ মোঃ নাঈম।
স্বাগত বক্তব্যে মোঃ এবাদুল্লাহ আফজাল মৌচাষের বর্তমান অবস্থা, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জি এম বিসিক-এর জেসমিন নাহার। তিনি বলেন, “মৌচাষকে রাষ্ট্রীয় নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। পরিবেশ, কৃষি ও স্বাস্থ্য—তিন ক্ষেত্রেই এর সুফল রয়েছে।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মোল্লা শামসুর রহমান, সভাপতি, ফোয়াব ও পরিচালক, এনএসডিএ এবং খন্দকার আমিনুজ্জামান, সাবেক প্রকল্প পরিচালক, বিসিক মৌচাষ প্রকল্প।
প্রধান বক্তা বাবু জগদীশ চন্দ্র সাহা, সাবেক জি এম, বিসিক, একটি তথ্যবহুল প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে মৌমাছির প্রজাতি, তাদের কাজ, এবং মৌচাষের বৈজ্ঞানিক দিকগুলো তুলে ধরেন।
নাস্তা ও নামাজের বিরতির পর শুরু হয় উন্মুক্ত আলোচনা পর্ব। সেখানে চাষিরা তাঁদের বাস্তব অভিজ্ঞতা, সমস্যা ও চাহিদা তুলে ধরেন, এবং প্রশিক্ষণ ও বাজার ব্যবস্থাপনার অভাব নিয়ে খোলামেলা মতামত দেন।
উপস্থিত নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন: সহ-সভাপতি মোঃ হাসানুল বান্না, গবেষণা ও বৈদেশিক বিষয়ক সম্পাদক মোঃ মইনুল আনোয়ার, খুলনা বিভাগের প্রধান মাহবুব বিল্লাহ, ময়মনসিংহ বিভাগের প্রধান আনিসুর রহমান, রাজশাহী বিভাগের প্রধান আকমুল মাহমুদ, কার্যনির্বাহী সদস্য মোশারফ জামিল, মোঃ রিয়াজুল হাসান, গৌরাঙ্গ সুতারধর এবং অন্যান্য সাধারণ সদস্যবৃন্দ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও ফটোসেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে আলোচকরা বলেন, “মৌচাষ শুধু একটি পেশা নয়, এটি টেকসই কৃষি ও পরিবেশ রক্ষার একটি কার্যকর পন্থা। এটি সম্প্রসারণের মাধ্যমে পরিবেশ, স্বাস্থ্য এবং অর্থনীতির মাঝে একটি সেতুবন্ধন গড়ে তোলা সম্ভব।”