
অনলাইন ডেস্কঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ইলিয়াস মিয়াকে (৪০) কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী যুবলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
শনিবার (৭ জুন) বিকেল ৪টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইলিয়াস মিয়া। এর আগে, শুক্রবার (৬ জুন) রাত সাড়ে ১২টার দিকে সর্বানন্দ ইউনিয়নের রামভদ্র খানাবাড়ি এলাকায় হামলার শিকার হন তিনি। হামলার ঘটনার পর ইলিয়াস মিয়া তার ওপর কারা কীভাবে হামলা করেছে তা নিজেই বলেছেন। মোবাইলে ধারণ করা সেই বক্তব্যের ভিডিও ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
নিহত ইলিয়াস মিয়া উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের রামভদ্র খানাবাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুল ব্যাপারীর ছেলে। তিনি সর্বানন্দ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানায়, রাতে নিজের মৎস্য খামার থেকে বাড়ি ফেরার পথে বিলের রাস্তায় ইলিয়াসকে পথরোধ করে নিষিদ্ধ যুবলীগের সুমন মিয়া, জুবায়ের ও সাজু মিয়াসহ ৮ থেকে ১০ জন। এ সময় লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ইলিয়াসের হাত ও পা ভেঙে দেয় তারা। পরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে রক্তাক্ত জখম করা হয়।
ঘটনাটি টের পেয়ে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ইলিয়াসকে রাস্তার কাদামাটিতে ফেলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নিহত ইলিয়াসের বড় ভাই মোজাম্মেল হকের অভিযোগ, নিষিদ্ধ আওয়ামী যুবলীগ নেতা সুমন মিয়ার নেতৃত্বে ইলিয়াসের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। হাত ও পা ভেঙে যাওয়াসহ কুপিয়ে ইলিয়াসকে রক্তাক্ত জখম করা হয়। হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মারা যায় ইলিয়াস।
দীর্ঘদিন ধরেই ইলিয়াসের সাথে রাজনৈতিক বিরোধ ছিল সুমন মিয়াসহ স্থানীয় যুবলীগ নেতাকর্মীদের। আ.লীগের পতনের পর নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে থাকলেও সুমন মিয়া ইলিয়াসকে হুমকি দিয়ে আসছিল।
হামলাকারী সুমন মিয়াসহ সকলের বাড়ি একই গ্রাম রামভদ্র খানাবাড়ি। অভিযোগ রেয়েছে, তারা সর্বানন্দ ইউনিয়ন যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকায় নানা অপকর্ম করে আসছে।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কমকতা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ জানান, আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ইলিয়াস মিয়া। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ সময় নিহতের বাড়িতে গিয়ে তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলা হয়। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়াও অভিযুক্তদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।