
অনলাইন ডেস্কঃ
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে কয়েক দিন ধরে হামলা-পাল্টা হামলা চলছে। দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনার মধ্যে ইরানের সঙ্গে সব ধরনের আকাশ ও স্থলপথ বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান।
সোমবার (১৬ জুন) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান প্রতিবেশী ইরানের সঙ্গে সব ধরনের আকাশ ও স্থলপথ বন্ধ করে দিয়েছে। রোববার থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। সোমবার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের এ সিদ্ধান্তের ফলে সীমান্তের উভয় পাশে শত শত মানুষ আটকা পড়েছেন।
স্থানীয়দের আশঙ্কা, এমন পদক্ষেপের ফলে পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশের কয়েকটি জেলায় খাদ্য ও তেলের সংকট দেখা দিতে পারে। এই অঞ্চল ইরানের সঙ্গে সীমান্তবর্তী এবং খাদ্য সরবরাহ ও চোরাই তেলের জন্য ইরানের ওপর নির্ভরশীল। পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে বেশ কয়েকটি স্থলপথের সংযোগ রয়েছে, যার মধ্যে চাগি জেলার তাফতান সীমান্ত এবং গোয়াদর জেলার গাবদ-রিমদান সীমান্ত উল্লেখযোগ্য।
বেলুচিস্তান প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র শহিদ রিন্দ তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে জানিয়েছেন, ইরানের পক্ষ থেকে সীমান্ত বন্ধের উদ্যোগ নেওয়ার পর পাকিস্তানও সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, ইরানের উদ্যোগের পর দুই দেশের মধ্যে সব সীমান্ত ক্রসিং বাণিজ্য এবং পথচারী চলাচলের জন্য বন্ধ করা হয়েছে।
তিনি জানান, ইরানে আটকা পড়া পাকিস্তানি নাগরিকদের ফিরে আসার জন্য সীমান্ত খোলা রাখা হবে। এছাড়া পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইরানে নতুন কোনো প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।
পাকিস্তানের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের একজন মুখপাত্র জানান, পাকিস্তান থেকে ইরানের বিভিন্ন শহর এবং ইরাকে চলাচলকারী বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন্স ইতোমধ্যে আঞ্চলিক উত্তেজনার কারণে তাদের নিয়মিত ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে।
ইরানের সঙ্গে বেলুচিস্তানের সীমান্তবর্তী জেলাগুলো যেমন- তুর্বত, গোয়াদর, পাঞ্জগুর, চাগি, ওয়াশুক এবং মাশকাইল- তাজা শাকসবজি ও ফলমূলসহ বেশিরভাগ খাদ্য সরবরাহ ইরান থেকে পায়। সীমান্ত বন্ধের ফলে দিনমজুর শ্রমিক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা, যারা জীবিকা ও পারিবারিক সাক্ষাতের জন্য নিয়মিত সীমান্ত পারাপারের ওপর নির্ভরশীল, মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
গোয়াদরের বাসিন্দা বাশাম বালোচ আনাদোলুকে ফোনে বলেন, দাম বাড়তে শুরু করেছে, তবে এখনো পরিস্থিতি খুব গুরুতর নয়, কারণ এটি বন্ধের মাত্র দ্বিতীয় দিন। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি সীমান্ত আরও কয়েক দিন বা সপ্তাহ বন্ধ থাকে, তাহলে সীমান্তবর্তী সব জেলায় তেল ও খাদ্যের সংকট দেখা দিতে পারে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে ৯০৯ কিলোমিটার (৫৬৫ মাইল) দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এ সীমান্ত পথ বেলুচিস্তানকে ইরানের সিস্তান-বালুচেস্তান প্রদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে।