
অনলাইন ডেস্কঃ
ইরানের রাজধানী তেহরানের আকাশপথে ‘পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ’ প্রতিষ্ঠার দাবি করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এক ব্রিফিংয়ে দেশটির এক সামরিক মুখপাত্র বলেন, তেহরানের আকাশের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এখন ইসরায়েলের হাতে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন বলেন, আমরা তেহরানের আকাশে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছি। পাশাপাশি ইরানি সরকারের এক-তৃতীয়াংশ ভূমি থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার স্থান ধ্বংস করেছি।
তিনি আরও জানান, ইসরাইলি যুদ্ধবিমান ও ড্রোন বর্তমানে কোনো বাধা ছাড়াই তেহরান পর্যন্ত পৌঁছাতে পারছে এবং ইরানের সামরিক সক্ষমতা চূড়ান্তভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে এ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই ইরানের পশ্চিমাঞ্চলে নতুন করে ইসরাইলি হামলার খবর পাওয়া গেছে। ইরানি সংবাদমাধ্যম তাসনিম জানিয়েছে, ইরাক সীমান্তবর্তী ইলাম প্রদেশের মুসিয়ান শহরের পৌরসভার ফায়ার সার্ভিস ভবনে বর্বর হামলা চালানো হয়েছে।
অন্যদিকে ফার্স নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ওই অঞ্চলের একটি হাসপাতালেও বোমাবর্ষণ করা হয়েছে। দু’টি সংবাদমাধ্যমই ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী -এর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, ইসরাইলের বেশ কয়েকটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে ইরানি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
তবে তেহরানের আকাশপথে ইসরায়েলের ‘নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা’র এ দাবির বিষয়ে এখন পর্যন্ত ইরানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি।
এদিকে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র আবারও ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’ ভেদ করে প্রবেশ করেছে। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া পাল্টাপাল্টি হামলায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে।
ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহর থেকে বিবিসির সাংবাদিক হুগো বাচেগা জানান, বহু ইসরায়েলি এতদিন আয়রন ডোমকে অপ্রতিরোধ্য মনে করতেন কিন্তু এখন সেই বিশ্বাসে ফাটল ধরেছে।
অন্যদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় দেশটিতে অন্তত ২২৪ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সেনা কর্মকর্তা ও বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন।
তবে দেশটির সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও বিদেশি সাংবাদিকদের ওপর কঠোর বিধিনিষেধের কারণে ইরানের ভেতরের সঠিক অবস্থা যাচাই করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
টানা কয়েকদিনের এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতে দুই দেশের ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র স্পষ্ট না হলেও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উদ্বেগ বেড়েই চলেছে। পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, এখন সেদিকেই নজর আন্তর্জাতিক মহলের।
ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলায় সংঘাত আরও চরমে উঠছে। তেহরান ও পশ্চিম ইরানজুড়ে বোমা হামলা এবং ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতে নাগরিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।