
অনলাইন ডেস্কঃ
ভোটের আনুপাতিক হারে উচ্চকক্ষে আসন বণ্টনের ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত্যের আহবান জানিয়েছেন দেশের বিভিন্ন পেশার ৬০ নাগরিক। এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান তারা।
নাগরিকরা মনে করেন, ভোটের পিআর বা উচ্চ কক্ষের ধারণায় ঐকমত্যে আসা প্রয়োজন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষ আগামী দিনের সংসদীয় পদ্ধতিকে অধিকতর জবাবদিহিতামূলক করবে এবং ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে ভূমিকা রাখবে। উচ্চকক্ষে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে উচ্চকক্ষের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও বিশেষজ্ঞ সদস্যদের দ্বারা গঠনমূলক আলোচনা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে দেশের জনগণ উপকৃত হবে।
তারা বলেন, উচ্চকক্ষ সদস্য নির্বাচনের পদ্ধতি এবং এর কার্যপরিধি নিয়ে এখনো মতভেদ রয়েছে। আমরা মনে করি- উচ্চকক্ষ আসন বণ্টন যদি নিম্নকক্ষের আসন বণ্টনের পদ্ধিতিতেই হয় তাহলে দ্বিকক্ষ সংসদের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনায় কোনো গুণগত পরিবর্তন আসবে না।
অন্যদিকে, যদি উচ্চকক্ষে সদস্যরা নিম্নকক্ষে সাধারণ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে নির্বাচিত হন অর্থাৎ একটি আনুপাতিক ভোটের হারে গঠিত উচ্চকক্ষ গঠিত হয় তবে নতুন এই উচ্চকক্ষ সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ‘চেক অ্যান্ড ব্যালান্স’-এর ভূমিকা পালন করতে পারবে।
তারা আরো জানান, ভবিষ্যৎ যে কোনো নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল যদি নিম্নকক্ষে একচেটিয়া ও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতাও পায়, চজ ভিত্তিক উচ্চকক্ষে সেই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার সম্ভবনা ক্ষীণ এছাড়াও কিছু ছোট দল, যারা সারা দেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় ভোট পাওয়া সত্ত্বেও নিম্নকক্ষে কোনো আসন পাবে না, তাদেরও উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্ব থাকার সম্ভবনা তৈরী হবো এসকল কারণে ক্ষমতাসীনরা যদি জনবিরোধী ও অগণতান্ত্রিক কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার উদ্যোগ নেয়, সেক্ষেত্রে বিরোধীদলসমূহ তার কার্যকরী সংসদীয় প্রতিরোধ তৈরী করতে পারবে।
বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা এটিও মনে করি যে, উচ্চকক্ষের কার্যক্ষমতা এমন পর্যায়ে সীমিত হওয়া উচিত, যাতে রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাত্যহিক নির্বাহী কার্যক্রম ব্যাহত না হয়। বিশেষ করে, পিআর উচ্চকক্ষ যেন সংবিধান সংশোধন ও যুদ্ধ ঘোষণা সংক্রান্ত বিষয় ছাড়া অন্য কোনো আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে ভেটো প্রদান না করতে পারে। আমরা মনে করি পিআর উচ্চকক্ষ নিমককক্ষে উত্থাপিত বিভিন্ন বিল ও সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে পর্যালোচনা, নিরীক্ষা ও তদারকিমূলক কিছু ক্ষমতা পেতে পারে। আমরা জোরালোভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, উপরে বর্ণিত আনুপাতিক ভোটের (পিআর) উচ্চকক্ষ ধারণাটি গ্রহণ করার ব্যাপারে আপনারা ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন এবং এটি জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করুন।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন- আইরিন খান (মানবাধিকার কর্মী), শহিদুল আলম (আলোকচিত্রী), আসিফ মোহাম্মদ শাহান (শিক্ষক ও রাজনৈতিক গবেষক), মানজুর আল মতিন (আইনজীবী), ফাহিম মাশরুর (উদ্যোক্তা ও সংগঠক), (জ্যোতি রহমান (অর্থনীতিবিদ), জিয়া হাসান (অর্থনীতিবিদ), ফারাহ কবির (মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠক), ড. রুশাদ ফরীদি (শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), উমামা ফাতেমা (ছাত্রনেতৃত্ব), আশরাফ কায়সার (সাংবাদিক), ব্যারিস্টার মিতি ফারজানা (আইনজীবী), ড. অতনু রব্বানী (অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক), মাহরুখ মহিউদ্দীন (প্রকাশক), ড. ইমরান মতিন (উন্নয়ন গবেষক), ড. মির্জা হাসান (সমাজ বিশ্লেষক), ড. অনন্য রায়হান (অর্থনীতিবিদ ও নীতি গবেষক), জাফর সোবহান (সম্পাদক ও লেখক), সফিকুর রহমান (রাজনৈতিক বিশ্লেষক), রেজাউল করিম রনি (সম্পাদক, জবান), ড. রুমি আহমেদ (চিকিৎসক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক), আমিনুল ইসলাম ইমন (স্থপতি), শাহেদ ইকবাল (চিকিৎসক গবেষণাবিদ), এহতেশামুল হক (আইনজীবী), ব্যারিস্টার মুশতাক আহমেদ (আইনজীবী), সৈয়দ হাসিবউদ্দীন হোসেন (লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক), সুবাইল বিন আলম (লেখক ও প্রকৌশলী), ইসলামুল হক (উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ), সেলিনা আজিজ (গবেষক ও শিক্ষক), সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া (শিক্ষাবিদ ও গবেষক), আসিফ বিন আলী (গবেষক), রন্টি চৌধুরী (রাজনৈতিক বিশ্লেষক), সাইফ শাহ মোহাম্মদ (আইনজীবী), মাসুদ রানা (আইনজীবী), নাজিফা জান্নাত (ছাত্র সংগঠক), সাদিক মাহবুব ইসলাম (সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্ট), আহমদ ইসলাম মুকসিত (আইটি উদ্যোক্তা), আবদুল্লাহ আল মামুন (প্রকৌশলী), কায়সার চৌধুরী (উদ্যোক্তা), মিল্লাত হোসেন (আইনবিদ ও লেখক), মোহাম্মদ মিয়া রাদ (বিনিযোগ পরামশক), ক্যাপ্টেন এ কে এম মোতাহারুল ইসলাম (মেরিনার), রকিবুল হাসান (প্রযুক্তি বিষয়ক লেখক), রুবায়েত সারওয়ার (উন্নয়ন গবেষক), নাঈম মোহায়মেন (চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অধ্যাপক), প্রকাশ চৌধুরী (উদ্যোক্তা), গালিব ইবনে আনোয়ারুল আজীম (অর্থনীতিবিদ), দিদার ভূঁইয়া (উদ্যোক্তা), মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়াবিদ), মাহবুব সাদিক (উদ্যোক্তা), খালেদ শফিউল্লাহ (সংবিধান বিশেষজ্ঞ), তারিকুল ইসলাম অনিক (গবেষক, আইন ও সংবিধান), রনি মন্ডল (প্রকৌশলী), হাসান মাহমুদ (উদ্যোক্তা), সৈয়দ আমীন (উদ্যোক্তা), মাহমুদুল খান আপেল (প্রকৌশলী), সাইফুল ইসলাম সরকার (প্রকৌশলী), তারেক হোসেন (উদ্যোক্তা), হুমায়ুন কবির (অর্থনীতি গবেষক ও অ্যাক্টিভিস্ট)।