
অনলাইন ডেস্কঃ
জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে তোপের মুখে পড়েছেন খুলনার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোঃ সাইফুল ইসলাম।অভিযোগ উঠেছে, তিনি প্রকৃত জুলাই যোদ্ধা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বাদ দিয়ে ‘বিতর্কিত ও আওয়ামী লীগের দোসরদের’ নিয়ে এই অনুষ্ঠান করেছেন।
সোমবার দুপুরে খুলনা নগরীর কালেক্টর মসজিদে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ সরকার।
অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন কর্মী দোয়া মাহফিলে এসে তীব্র প্রতিবাদ শুরু করেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “জেলা প্রশাসক আওয়ামী লীগের দোসর ও বিভিন্ন গুপ্ত সংগঠনের ছাত্রদের নিয়ে এই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছেন। এই আন্দোলনে যারা প্রকৃতপক্ষে আহত হয়েছেন, যারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের কাউকেই এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
তিনি আরও বলেন, “খুলনা জেলা ও মহানগরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বা সহ-সমন্বয়ক কাউকেই এই অনুষ্ঠানে ডাকা হয়নি। জেলা প্রশাসক এখানে একপেশে আচরণ এবং চরম স্বেচ্ছাচারিতা করছেন।”
জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের এই ক্ষোভ নতুন নয়। সূত্র জানায়, এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ৩৬ দিনের কর্মসূচি পালনের অনুমতি ও সহযোগিতার জন্য জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের দপ্তরে গেলে তিনি তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সে সময় তার অফিসের ভেতরেই অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন এবং পরে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তুলে ধরেছিলেন।
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।সাবেক ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া।জুলাই যোদ্ধা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সাথে কোনো প্রকার সম্পর্ক না রাখা ও তাদের উপেক্ষা করা।শিক্ষার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ করা।ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
যেখানে একটি দোয়া মাহফিল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের উপলক্ষ হওয়ার কথা, সেখানে এমন একটি অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে বিভেদ ও উত্তেজনা খুলনার সার্বিক পরিস্থিতিতে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।