
অনলাইন ডেস্কঃ
নির্বাচনকালীন একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত। তবে এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা কে হবেন বা কীভাবে নিয়োগ পাবেন, তা নিয়ে দলগুলো এখনো একমত হতে পারেনি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনায় এ–সংক্রান্ত একাধিক প্রস্তাব উঠে এসেছে।
একসময় সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিধান ছিল, যা পরে আদালতের রায়ে এবং পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাতিল করা হয়। তবে হাইকোর্ট সম্প্রতি সংশোধনীটির দুটি ধারা সাংবিধানিক নয় বলে ঘোষণা দেয়, যার বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন চলছে।
সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারব্যবস্থা সংবিধানে যুক্ত করার সুপারিশ করেছে। প্রথম দফার আলোচনায় দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইলেও এর সুনির্দিষ্ট রূপরেখা এখনো উপস্থাপিত হয়নি। মূল দ্বিধা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে।
সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুসারে, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে প্রধান উপদেষ্টা করার বিধান ছিল। তবে বর্তমানে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বেশির ভাগ দল বিচার বিভাগ ও রাষ্ট্রপতির ভূমিকা সীমিত রাখতে চায়। বিএনপি প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতিকে বিকল্প হিসেবে মানতে পারে বলে জানায়।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে এনসিসি (জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল) থেকে সরে এসে নতুন একটি নিয়োগ কমিটির কথা বলা হয়, যা এখন আলোচনায় রয়েছে না।
এনসিপির প্রস্তাব অনুযায়ী, সংসদ ভাঙার আগে ১১ সদস্যের সর্বদলীয় কমিটি গঠিত হবে। দলগুলো ৯ জন নির্দলীয় প্রার্থীর নাম দেবে, যেখান থেকে ভোটে একজনকে চূড়ান্ত করা হবে। প্রয়োজনে ‘র্যাঙ্কড চয়েস ভোটিং’ হবে।
নাগরিক কোয়ালিশনের প্রস্তাবেও রয়েছে সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটি ও ভোটাভুটি। এ ছাড়া স্পিকার-নেতা-প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে অনুসন্ধান কমিটির প্রস্তাবও এসেছে।
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে সব দল একমত হলেও প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনপ্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা এখনো চলছে, তবে দলগুলো অনেক কাছাকাছি এসেছে।’