
অনলাইন ডেস্কঃ
আইনজীবী সায়ন ব্যানার্জীর করা মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের গুরুত্বপূর্ণ রায় এসেছে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই)। ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়া অবধি ক্যাম্পাসের ইউনিয়ন রুমগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ এবং নির্বাচনের ঘোষণা সম্পর্কে সরকারকে হলফনামা জমা করার নির্দেশিকা দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
বাম ছাত্র সংগঠন এ আই এস এফ, এসএফআই, পি এস ইউ, ছাত্র ব্লক, ডি এস ও, আইসার দীর্ঘদিনের দাবি ছিল অবিলম্বে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন করতে হবে। সেই দাবির স্বপক্ষে গড়ে তোলা লড়াই আইনি মান্যতা পেলো। এই অবৈধ ইউনিয়নের ঘরগুলো থেকেই পরিচালিত হতো ক্যাম্পাসে তৃণমূলের ক্রাইম সিন্ডিকেট। বামপন্হী ছাত্র সংগঠনগুলির লাগাতার আন্দোলনে এরকম বেশ কিছু ইউনিয়ন রুমে ইতিমধ্যেই তালা ঝোলানো গেছে ৷ আইনি নির্দেশিকায় বাকি কাজটাও যাতে দ্রুত হয় সেটা দেখা দরকার। বিশেষ করে এই ক্রাইম সিন্ডিকেটের মধ্যে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় জড়িয়ে থাকে ক্যাম্পাস কর্তৃপক্ষও। তাই আইনি নির্দেশিকা সত্ত্বেও তা কার্যকর করবার ক্ষেত্রে গভর্নিং বডিতে থাকা তৃণমূলের মাতব্বরা প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করবেই। কর্তৃপক্ষ তালা না ঝোলালে ছাত্রছাত্রীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই কাজ করবে। ক্যাম্পাসে তৃণমূলের লালন পালনে গড়ে ওঠা ঘৃণ্য অপরাধচক্রের মৌচাকে প্রথম ঢিল!
অবৈধ ইউনিয়ন চিহ্নিত হওয়ার পরের কথাই হওয়া উচিত বৈধ ইউনিয়ন গড়ে তোলা। এই কথায় ফাঁকি থেকে গেলে সরকারের অভিসন্ধি হবে ছাত্র ইউনিয়নের কাঠামোটাই তুলে দেওয়া। নির্বাচনের তারিখ সম্পর্কে হলফনামার নির্দেশ এর আগেও হাইকোর্টের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকবার আলাদা আলাদা বেশ কয়েকটি মামলায়। অথচ বারংবার এই নির্দেশ যাওয়া সত্ত্বেও সরকার কোনো হলফনামা জমা করেনি। ক্রিমিনাল প্রোডাকশন ইউনিট এই সরকার ক্যাম্পাস দখলে রাখার জন্য ক্রমাগত বিলম্ব করে গেছে এব্যাপারে। ইমিডিয়েট হলফনামা জারি করে নির্বাচনের তারিখ জানাতে হবে সরকারকে। ক্যাম্পাস নিরাপত্তা ফেরাতে চাই ক্যাম্পাসে গণতন্ত্র, কথা বলার পরিবেশ। সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গড়তে হবে বৈধ ছাত্র ইউনিয়ন।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশিকা অনুযায়ী এটা স্পষ্ট যে গত সাত-আট বছর ধরে ক্যাম্পাসে চলতে থাকা ইউনিয়নগুলোর কোনো আইনি বৈধতা নেই। তাহলে এই সময়কালে যে বিপুল অঙ্কের টাকা ইউনিয়ন ফি’র নামে কার্যত লুট করেছে তৃণমূল সেই টাকার হিসেব কোথায়? অডিট রিপোর্ট কোথায়? অবৈধভাবে তোলা এই কয়েক লাখ কোটি টাকা ফেরত করাতে হবে ছাত্রছাত্রীদের কাছে।
অপরাধমুক্ত ক্যাম্পাস গড়তে চাই তৃণমূলমুক্ত ক্যাম্পাস। আর তৃণমূলমুক্ত ক্যাম্পাস গড়তে চাই ইমিডিয়েট ছাত্রভোট।