
অনলাইন ডেস্কঃ
গুমের নির্দেশ অমান্য করায় কিংবা ভুক্তভোগীকে সহায়তা, এমন নানা কারণে অনেক কর্মকর্তাকে সমস্যায় পড়তে হয়েছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়। সম্প্রতি গুম কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক কর্মকর্তা নিরূপায় হয়ে বাধ্য হন গুমে অংশ নিতে। ওপর মহলকে খুশি করতে সাজানো জঙ্গি নাটকের তথ্যও পেয়েছে গুম কমিশন।
ওপর মহলকে খুশি করতে আওয়ামী লীগ আমলে সাজানো হয় বহু জঙ্গি নাটক। এসব করেই পদোন্নতি বাগিয়ে নেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক কর্মকর্তা।
অন্যদিকে গুম-খুন সমর্থন না করলেও সর্বোচ্চ মহলের নির্দেশের বাইরেও যেতে পারেননি অনেকে। যারা চেষ্টা করেছেন, পড়েছিলেন রোষানলে। গত দেড় দশকের গুমের ঘটনা নিয়ে কমিশনের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বাহিনীর ভেতরে এমন দ্বন্দ্ব, যন্ত্রণা ও মতবিরোধ।
গুমের শিকার ব্যক্তিদের গুলি করে হত্যার পর ক্রসফায়ারে নিহতের দাবি করতো বাহিনী। আলামত নষ্ট করতে নদীতে ফেলা হয় অনেক মরদেহ। গুম বিষয়ক কমিশনের দ্বিতীয় প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব ভয়াবহ তথ্য।
গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, জুনিয়র কিছু অফিসারদের মধ্যেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেশ ক্ষোভ ছিল, তারা এটা মেনে নিতে পারছিলেন না। কিন্তু তারা নিরুপায় ছিলেন। তাদেরকে বাধ্য করা হতো। তারা বাধ্য হয়েছেন কারণ তাদের চাকরির ব্যাপার আছে, জীবনের নিরাপত্তা আছে, পারিবারিক নিরাপত্তার বিষয়গুলোও রয়েছে। আমাদের এই রিপোর্টে এগুলো বিস্তারিতভাবে উঠে এসেছে।
গুম কমিশনের প্রতিবেদনে কুশীলব হিসেবে বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার ২৭ জনের নাম উঠে এসেছে। অন্যদিকে ওপর মহলের নির্দেশ অমান্য করায় কিংবা ভুক্তভোগীকে সহায়তা করায় অনেক কর্মকর্তাকেও পড়তে হয় সমস্যায়। প্রতিবেদন বলছে, অনেক অফিসার নিরূপায় ছিলেন কারণ তাদেরকে বাধ্য করা হয়।
গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্য নূর খান বলেন, পুলিশ-র্যাব-ডিজিএফআই এদের অনেক কর্মকর্তা, অনেক সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং সেগুলো যাচাই-বাচাই পর্যায়ে রয়েছে।
কমিশন এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৫০টি অভিযোগ থেকে ১ হাজার ৩৫০টি অভিযোগ যাচাই বাছাই শেষে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে।