
বিনোদন ডেস্কঃ
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনে মমতাময়ী মায়ের চরিত্রে বারবার হৃদয়ে স্থান করে নেওয়া কিংবদন্তি অভিনেত্রী আনোয়ারা বেগম কথা বলতে গিয়ে আবেগে ভেসে গেলেন। দীর্ঘ অভিনয়জীবনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। চোখের জলে একে একে শোনান নিজের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের গল্প।
সোমবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এমনই এক আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়। অনুষ্ঠান শুরুতেই গুণী এই শিল্পীকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয় বাচসাসের পক্ষ থেকে। তখনই কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসে তার-চোখ ভিজে ওঠে আবেগের জলে।
আনোয়ারা বলেন, ‘বাচসাস আমার অনেক আপন। বহুদিনের সম্পর্ক। আমি বাচসাসকে ভালোবাসি, শ্রদ্ধা করি। আজকের এই চোখের জল গ্লিসারিনের নয়, এটি সম্মান ও ভালোবাসার প্রতিফলন। এই যে সম্মান পেয়েছি, তা আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মনে রাখবো।’
মগবাজারস্থ বাচসাস কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় এই আয়োজনে ‘মিট দ্য প্রেস’-এর প্রথম পর্ব, যা সহায়তা করে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম দোয়েল। সভাপতিত্ব করেন বাচসাস সভাপতি কামরুল হাসান দর্পণ। তিনি বলেন, “বাচসাস এবারই প্রথমবারের মতো ‘মিট দ্য প্রেস’-এর আয়োজন করলো। আর এই যাত্রার শুরুটা আনোয়ারার মতো এক জীবন্ত কিংবদন্তিকে দিয়ে করতে পারা আমাদের জন্য গর্বের। নিয়মিতই চলচ্চিত্র, টিভি ও সংগীতের তারকাদের নিয়ে এই আয়োজন করা হবে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাচসাস সম্পাদক রাহাত সাইফুল। তিনি বলেন, ‘আনোয়ারা মা শুধু একজন অভিনেত্রী নন, তিনি আমাদের চলচ্চিত্র ইতিহাসের এক জীবন্ত অধ্যায়। তার চোখের জল ছিল আমাদের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মানের বহিঃপ্রকাশ। এই আবেগই আমাদের ভবিষ্যৎ পথচলার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আনোয়ারার কন্যা, জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা রুমানা ইসলাম মুক্তি। পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বাচসাস সহ-সভাপতি লিটন রহমান, সালাম মাহমুদ, অর্থ সম্পাদক রুহুল সাখাওয়াত, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা মতিহার, দপ্তর সম্পাদক রুহুল আমিন ভূঁইয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য হাফিজ রহমান, পান্থ আফজাল, নিয়াজ মোর্শেদ শুভ এবং দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন আনোয়ারা বেগম। তুলে ধরেন তার মঞ্চ, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের দীর্ঘ অভিনয়-অভিজ্ঞতার কথা; জানান ব্যক্তিজীবনের নানা আলো-অন্ধকারের গল্প।
উল্লেখ্য, ৬০০-এরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করা এই গুণী শিল্পী চারবার বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেছেন। **‘মা’ (১৯৭৭), ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ (১৯৭৮), ‘কসাই’ (১৯৮০)** এবং ‘লাল কাজল’ (১৯৮২)—এই ছবিগুলোর জন্য তিনি সম্মানিত হন।