
অনলাইন ডেস্কঃ
মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন অধ্যাদেশের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, এ বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কিডনি অকেজো হয়, চোখে দেখতে পান না। কর্নিয়া সংযোজন হলে চোখের অন্ধত্ব দূর করা যায়। আরো অনেকগুলো বিষয় আছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের আইন অনেকদিন ধরে হালনাগাদ হয়নি। যা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ অঙ্গ প্রতিস্থাপন নিয়ে কাজ করা হাসপাতাল এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছেন, এ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইন দেখেছেন। সে অনুযায়ী নতুন অধ্যাদেশ জারি হয়েছে। ফলে বাংলাদেশে অঙ্গ প্রতিস্থাপনটা খুব সহজ হবে।
তিনি বলেন, আগে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য নিকটাত্মীয় ভাই-বোন-বাবা-সন্তানদের থেকে নিতে পারতেন। এখন এটাকে আরও বর্ধিত করা হয়েছে। ফলে বাংলাদেশের অনেকেই কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে যেতে হবে না। কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অবৈধভাবে কাউকে বিদেশেও নিতে হবে না। বাংলাদেশের হাসপাতালগুলো এ সেবা দিতে পারবে। আইনটিকে বাংলাদেশের জন্য যুগান্তকারী বলে মনে করে সরকার।
শফিকুল আলম বলেন, অনেকেই দেহদান করে যান। দেহদান করলে লাশ থেকে অঙ্গগুলো আইনগতভাবে ব্যবহার করা যাবে। সে বিষয়গুলো আইনে আছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আইনের কপি নিতে পারবেন। নতুন আইনের ফলে কারা কারা অঙ্গ দান করতে পারবেন এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, বিষয়টি আইনে বিস্তারিত দেওয়া আছে। আগে ভাতিজা-ভাগিনারা দিতে পারত না, এখানে তাদেরও যুক্ত করা হচ্ছে। পরিধি বাড়ানো হয়েছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, এটার ফলে বিনিয়োগ বোর্ডের বাইর থেকেও কিছু অতিরিক্ত নিয়োগ করা যাবে।
এর আগে তিনি জানান ভোটার তালিকা (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার এক মাস আগ পর্যন্ত ১৮ বছর বয়স হওয়া তরুণদের ভোটার তালিকায় যুক্ত করার বিধান রাখা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে ডিসেম্বরে ১৮ বছর বয়স হলে তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হতো। এ ছাড়াও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সংশোধন) অধ্যাদেশ এবং মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন অধ্যাদেশের খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ তিনটি অধ্যাদেশের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনটি অধ্যাদেশ অনুমোদনের কথা জানানো হয়। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর, সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি ও নাঈম আলী।
ফয়েজ আহম্মদ বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান নিয়মে ডিসেম্বরে যাদের বয়স ১৮ হয়, পরের বছরের জানুয়ারিতে ভোটার তালিকা হালনাগাদে ভোটার হতে পারেন। প্রতিবছর ২ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেন এবং দুই মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করে। ফলে দেখা যায় পরবর্তী যে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়, সেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার আগে যে নাগরিকদের বয়স ১৮ বছর হয়, তারা ওই ভোটে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পান না। তাদের পরবর্তী নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।
তিনি বলেন, এই বাস্তবতা নির্বাচন কমিশন মনে করে ভোটের শিডিউল ঘোষণার আগেই যেহেতু একটি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রস্তুত রাখতে হয়। সেক্ষেত্রে শিডিউল ঘোষণার আগে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে এই যারা ভোটার হবার উপযোগী হন তাদেরকে ভোটার তালিকায় নিয়ে আসা।
উদহারণ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব বলেন, ফেব্রুয়ারিতে কোন নির্বাচন হলে তার সর্বোচ্চ দুই মাস আগেই শিডিউল দেওয়া হয়। সেটা হবে সর্বোচ্চ নভেম্বর। এর অর্থ হচ্ছে নভেম্বর পর্যন্ত ভোটাধিকারের উপযোগীরা ভোট দিতে পারেন না। বরং তার আগের ডিসেম্বর পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ হয় তারাই ভোট দিতে পারেন। নতুন অধ্যাদেশ অনুমোদনের ফলে শিডিউল ঘোষণার এক মাস আগ পর্যন্ত যেসব ব্যক্তির বয়স ১৮ হবেন, তারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার আগের মাস পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ হবে, তারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে।