
অনলাইন ডেস্কঃ
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের বিরুদ্ধে পদোন্নতি প্রদানে অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একইসঙ্গে শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে চার্জশিটের অনুমোদন দেয় সংস্থাটি। গতকাল রোববার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। তিনি জানান, দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালকের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।
শিগগিরই তা আদালতে দাখিল করা হবে। এর আগে গত ৫ই ফেব্রুয়ারি পদোন্নতি প্রদানে অনিয়মের অভিযোগে মামলা দায়ের করে দুদক। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করে পারস্পরিক যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তিনি শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক থেকে পরিচালক পদের পদোন্নতি দেয়ার ক্ষেত্রে ডিপিসি’র সুপারিশ করা গ্রেডেশন তালিকার ৩ নম্বর ক্রমিকে থাকা শামীমা সুলতানা বারীকে বাদ দিয়ে ডিপিসি’র সুপারিশের বাইরে ১৬ নম্বর ক্রমিকে থাকা মিজানুর রহমানকে পদোন্নতি দিয়েছেন। অপরদিকে, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক থেকে উপ-মহাপরিদর্শক পদে পদোন্নতি দেয়ার ক্ষেত্রে ডিপিসি’র পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করা যোগ্য প্রার্থী জোবেদা খাতুনকে বাদ দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে গ্রেডেশন তালিকার ৪৮ নম্বর ক্রমিকে থাকা আবদুল্লাহ আল সাকিব মুবাররাতকে পদোন্নতি দিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যে হাসিনা ঘনিষ্ঠদের সম্পদ বিক্রি ঠেকবে দুদক: দুর্নীতির তদন্ত চলাকালেই যুক্তরাজ্যে সম্পদ বিক্রির চেষ্টা করছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটি বলছে, জব্দের আদেশ কার্যকর হওয়ার আগেই যারা সম্পদ বিক্রির চেষ্টা করছেন, তাদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে সেই বিক্রি ঠেকাতে উদ্যোগ নেয়া হবে। ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনার সরকারের মন্ত্রী-এমপি, সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীসহ দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে দুদক। মামলার পাশাপাশি দেশে-বিদেশে থাকা হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে সংস্থাটি। এমন সময় বৃটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান গত শনিবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গার্ডিয়ান ও দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের যৌথ অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বলছে, শেখ হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা যুক্তরাজ্যে তাদের মালিকানাধীন সম্পদ বিক্রি, বন্ধক বা হস্তান্তর করছেন। দেশটির জমি নিবন্ধন প্রতিষ্ঠানের তথ্যমতে, গত বছর সম্পদ বিক্রির অন্তত ২০টি আবেদন জমা পড়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা যুক্তরাজ্যে তাদের মালিকানাধীন সম্পত্তি লেনদেন করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যখন দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চলছে, তখন যুক্তরাজ্যে তাদের সম্পদ বিক্রি, বন্ধক কিংবা হস্তান্তর করা হচ্ছে। বৃটেনের জমি নিবন্ধন প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে কেবল গত এক বছরে বাংলাদেশের সাবেক সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পদ লেনদেনের অন্তত ২০টি আবেদন জমা পড়েছে। এ বিষয়ে দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেছেন, সুনির্দিষ্টভাবে তথ্য পেলে ওইসব সম্পদ বিক্রি বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হবে।