
অনলাইন ডেস্কঃ
শ্রাবণের ঘনঘোর অমাবস্যায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি গতকাল গভীর নিম্নচাপে রূপ নিয়ে বাংলাদেশের উপকূল ছুঁয়ে যাওয়ার পর একটানা বাতাস, জোয়ার ও প্রবল বৃষ্টিতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১৬টি জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, নোয়াখালী, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ একাধিক জেলা তলিয়ে গেছে জলোচ্ছ্বাসে। কোথাও কোথাও ৩ ফুট পর্যন্ত পানি প্রবেশ করেছে লোকালয়ে। চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে ১ থেকে ৩ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস।
নৌ-চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ পরিবেশে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, নিম্নচাপটি শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করে বর্তমানে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুও সক্রিয় রয়েছে এবং এর প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। সমুদ্র উপকূলে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৬০ কিমি বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় বসতবাড়ি, ফসলি জমি, মাছের ঘের ও পুকুরে পানি ঢুকে পড়েছে।
আবহাওয়াবিদ ড. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, নিম্নচাপটি আরও দুর্বল হলেও জলোচ্ছ্বাস ও বৃষ্টির কারণে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়ে গেছে। অপর আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, আগামী সোমবার পর্যন্ত দেশের বেশিরভাগ জেলায় বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। তাই সমুদ্রে মাছ ধরতে নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় নদীগুলোতে স্বাভাবিক জোয়ার থাকলেও নিম্নচাপ ও অমাবস্যার কারণে ১ থেকে ৩ ফুটের অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। বিশেষ করে ফেনীর মুহুরি ও সেলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।
বরিশাল অফিস জানায়, কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নগরীর সদর রোডসহ বহু এলাকা ডুবে গেছে। বরিশাল আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, ঘণ্টায় ১০ কিমি বেগে বাতাস এবং ২১ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। স্থানীয় নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ সমুদ্রগামী ট্রলার ও নৌকাগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে।
কলকাতা আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, নিম্নচাপের প্রভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে ভারতের দক্ষিণবঙ্গে। পরিস্থিতি আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।