
অনলাইন ডেস্কঃ
চাঁদা না দেওয়ায় নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আহম্মদপুর বাজারের ১০টি দোকানঘরে তালা লাগিয়ে দখলে নেওয়ার অভিযোগে জামায়াত নেতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে বেদখল হওয়া দোকানঘরগুলোও দখলমুক্ত করে প্রকৃত মালিকদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনকে আজ মঙ্গলবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন জোয়াড়ী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি ও আহম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন (৪৫), তাঁর ভাই জামায়াত কর্মী আজিমুদ্দিন (৪০), স্থানীয় বিএনপি কর্মী হায়দার আলী (৪৫) ও তাঁর বাবা মুজিবর রহমান (৭০)।
বড়াইগ্রাম থানা সূত্র জানায়, উপজেলার নওপাড়া গ্রামের কোরবান আলী, শাহ আলম ও মোতালেব হোসেন আহম্মদপুর বাজারে জমি কিনে ১০টি দোকানঘর নির্মাণ করেন। তাঁদের নামে এসএ এবং আরএস খতিয়ান আছে। প্রায় ৭০ বছর ধরে তাঁরা ওই জমি ভোগদখলে আছেন এবং নিয়মিত খাজনা দিয়ে আসছেন। গতকাল বেলা ১১টার দিকে রুহুল আমিন, আজিমুদ্দিন, হায়দার আলী, মুজিবর রহমানসহ ৪০-৫০ জন লাঠিসোঁটা নিয়ে বাজারে গিয়ে দোকানপ্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে চাঁদা দেওয়ার জন্য কোরবান আলীদের হুমকি দেন। তাঁরা রাজি না হওয়ায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ১০টি দোকানঘরে তালা লাগিয়ে দখলে নেন। দোকান না ছাড়লে ব্যবসায়ীদের প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা স্থানীয় সেনা ক্যাম্প ও বড়াইগ্রাম থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা যৌথভাবে সন্ধ্যায় বাজারে অভিযান চালান। এ সময় দোকানগুলোর তালা ভেঙে সেগুলো প্রকৃত মালিকদের জিম্মায় দেওয়া হয় এবং চার অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী মোতালেব হোসেন বলেন, ‘উপজেলার জোয়াড়ী ইউনিয়নের জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি আবদুল মালেক আমাদের প্রতি দোকান বাবদ মাসিক পাঁচ হাজার টাকা করে চাঁদা ধার্য করে দেন। আমরা তাতে রাজি হইনি। কারণ, আমরা এসব দোকানের জমি ৭০ বছর ধরে ভোগদখল করছি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁরা আমাদের দোকানগুলোতে তালা দিয়ে দেন। ঘটনাটি আমরা পুলিশ–সেনাসদস্যদের জানালে তাঁরা দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযান চালিয়ে আমাদের দোকানগুলো উদ্ধার করে দিয়েছেন। আমরা তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
তবে গ্রেপ্তারের আগে চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করে জামায়াত নেতা রুহুল আমিন বলেন, ‘দোকানের জমির মালিক আমরা। দীর্ঘদিন ওই জমি বেহাত ছিল। এখন আমরা দখলে গেছি। ভাড়া দাবি করেছি। তাই চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে।’ তবে দোকানে তালা লাগানো ঠিক হয়নি বলে তিনি স্বীকার করেন।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। মামলার চার আসামিকে সেনাসদস্যরা আটক করে থানায় হস্তান্তর করেছেন। তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।