
অনলাইন ডেস্কঃ
বাংলাদেশের পণ্য আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘পাল্টা শুল্ক’ শেষ পর্যন্ত ২০ শতাংশ নির্ধারণ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটনে তৃতীয় দফার আলোচনার শেষ দিনে এবং ট্রাম্পের শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগ মুহূর্তে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছে বাণিজ্য চুক্তি করে। নতুন শুল্ক ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও প্রস্তুতির জন্য আগামী ৭ আগস্ট পর্যন্ত সময় নেওয়া হয়েছে।
শুল্ক চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানির কাছ থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার অর্ডার দিয়েছে। অন্যদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয় ৫ বছরে ৩৫ লাখ টন গম কেনার সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে।
এ ব্যাপারে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, আমাদের বাণিজ্য আলোচনার সময় মনে হয়নি- বাংলাদেশের ২৫টি বোয়িং কেনার ব্যাপারটি যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। এটিকে তারা একবারের জন্যও আলোচনার মধ্যে আনেনি। বোয়িং আমার জানামতে গত বছর মাত্র ১২টি প্লেন বানিয়েছে। সেখানে এই চুক্তি অনুযায়ী তারা প্রথম বিমান হয়তো সরবরাহ করতে পারবে ২০৩৭ সালে। এতো দ্রুত সরবরাহে তাদের সেই সক্ষমতা নেই। তারা যে ততোটা আগ্রহী ছিল তা না।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাণিজ্য উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
শেখ বশিরউদ্দিন আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ এটা ছিল যে- বাংলাদেশ খাদ্যপণ্যের প্রায় ১৫-২০ বিলিয়ন ডলারের খাদ্যপণ্য বহির্বিশ্ব থেকে আমদানি করে। যুক্তরাষ্ট্র কৃষিপণ্যের একটি অন্যতম বৃহৎ দেশ। আমরা যদি প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে আমাদের কৃষিপণ্যের সংস্থান করতে পারি তাহলে আমরা আমাদের ভোক্তাদের যৌক্তিক মূল্যে পণ্য দিতে পারবো। বাজার স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে এটি সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারবে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যেরও প্রসার ঘটবে। মূলত, জ্বালানি পণ্য ও কৃষিপণ্যের ওপর নির্ভর করে আমরা চেষ্টা করেছি বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে।
তিনি আরও বলেন, বোয়িং তো আমাদের এমনিতেই আমদানি করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সার্বিকভাবে গত বছর ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি আমদানি করেছি। সেখানে আমরা বৈশ্বিক বাজার থেকে খাদ্যপণ্য ২০ বিলিয়ন ডলার আমদানি করি। সেখানে আমাদের ঘাটতি ৬ বিলিয়ন ডলার। আমরা যদি এখানে ২ বিলিয়ন ডলারের আমদানি বৃদ্ধি করতে পারি তাহলে একটা তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সেটা তুলা হোক, সয়াবিন হোক, ভুট্টা হোক, গম হোক। এখানে বোয়িং প্লেন খুব গুরুত্বপূর্ণ না। বোয়িং প্লেন তো আপনি প্রতিদিন কেনেন না।
বোয়িং কি বাংলাদেশের কেনা দরকার ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিমানের যে পরিচালন সক্ষমতা ও ব্যবসায়িক অবস্থা এই পরিস্থিতিতে আমাদের বিমানবন্দর দিয়ে গত বছর প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রী যাতায়াত করেছে। তার মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সম্ভবত লাখ বিশেক যাত্রী বহন করেছে। তার মানে আমাদের কোটি খানেক যাত্রীর বাজার আমাদের রয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের সক্ষমতা না থাকার কারণে সেটি বৃদ্ধি করতে পারছি না। সুতরাং ২৫টি বিমান ওই বিবেচনায় কিছুই না। আমাদের এর থেকে আরও বেশি কিছু দরকার।
এসময় তিনি বিমানের সক্ষমতা বৃদ্ধি হচ্ছে বলেও জানান। এ ব্যাপারে কাজ চলছে বলেও তিনি জানান।