
অনলাইন ডেস্কঃ
গত বছরের ১৫ জুলাইয়ের কথা আজও স্পষ্ট মনে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিদ্যা বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্রী সিনথিয়া মেহরিন সকালের। সেদিন ঢাকায় সরকারি চাকরিতে বিতর্কিত কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে হাজারও শিক্ষার্থীর সঙ্গে রাস্তায় নেমেছিলেন তিনি নিজেও। সেই মিছিলে মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান তিনি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠনের একজন কর্মী তাকে আঘাতটি করেছিলেন। তার মাথায় ১০টি সেলাই পড়ে এবং কিছু সময়ের জন্য স্মৃতিভ্রষ্টও হয়ে যান তিনি।
পরদিন ১৬ জুলাই, রাজধানী থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ করছিলেন ২৩ বছর বয়সী আরেক শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি। ভিডিওতে দেখা যায়, হাত প্রসারিত করে পুলিশের গুলির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন সাঈদ। এ ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে গেল তীব্র আন্দোলনে যেন আগুনে ঘি পড়ে। আবু সাঈদের মৃত্যুতে আন্দোলন এক নতুন মোড় নেয়।
পরবর্তী কয়েক সপ্তাহজুড়ে বাংলাদেশের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসে। ভয়াবহ দমনপীড়ন উপেক্ষা করেও তরুণেরা মাঠ ছাড়েনি। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে যুক্ত হন অভিভাবক, শিক্ষক ও সাধারণ মানুষ। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো-বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী- আন্দোলনে যোগ দিয়ে এক অপ্রত্যাশিত ঐক্য গড়ে তোলে।
সকাল বলেন, প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষার্থীরাও রাস্তায় নেমে এসেছিল। মনে হয়েছিল এবার সত্যিকারের পরিবর্তন আসতে চলেছে।
অবশেষে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট হাজার হাজার বিক্ষোভকারী শেখ হাসিনার বাসভবন ও দপ্তর ঘেরাও করে। ৭৭ বছর বয়সী এই নেত্রী সামরিক হেলিকপ্টারে করে প্রতিবেশী ও প্রধান মিত্র দেশ ভারতের উদ্দেশে পালিয়ে যান। সেখানে অবস্থান করেই তিনি এখনও বাংলাদেশের আদালতের মানবতাবিরোধী অপরাধসহ বিভিন্ন অভিযোগে হাজিরার নির্দেশ অমান্য করে যাচ্ছেন।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সরকারবিরোধী আন্দোলনে এক হাজার ৪০০ জনের বেশি নিহত হন। যাদের বেশিরভাগই সরকারি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান। আহত হন হাজার হাজার মানুষ।
হাসিনা পালানোর তিন দিন পর গত বছর ৮ আগস্ট বিক্ষোভকারীরা দেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনুসকে নেতৃত্বে রেখে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করে। চলতি বছরের মে মাসে এই সরকার আওয়ামী লীগকে সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করে এবং ২০২৪ সালের ওই অমানবিক হত্যাকাণ্ডের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটির কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। এর আগে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
তবে, শেখ হাসিনার পতনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ যখন দেশব্যাপী নানা আলোচনা হচ্ছে, তখন সকালের কণ্ঠে ছিল এক রাশ হতাশা।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া এই শিক্ষার্থী বলেন, তারা আমাদের বিপ্লবটাকে বিক্রি করে দিচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠী এখন ক্ষমতার জন্য লড়ছে। আমরা যে পরিবর্তনের জন্য রক্ত দিয়েছি, তা এখনো অধরা। এই সরকার এখন আর আমাদের আন্দোলনের প্রতিনিধিত্ব করছে না।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের নেতৃত্বে থাকা ৮৫ বছর বয়সী নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস একের পর এক রাজনৈতিক চাপে পড়ছেন। তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার যখন নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য ঐক্যমতের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তখন সেই আন্দোলনের শরীক পক্ষগুলো এখন একে অপরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। অথচ এই পক্ষগুলোই এক বছর আগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাস্তায় নেমেছিল।
আজ মঙ্গলবার ড. ইউনূসের পক্ষ থেকে একটি জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষিত হওয়ার কথা রয়েছে, যা শেখ হাসিনার পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে প্রকাশিত হবে। এতে থাকবে সরকারকাঙ্ক্ষিত সংস্কারগুলোর রূপরেখা ও বাস্তবায়নের পরিকল্পনা। তবে জনগণের অনেকেই এখন এটি নিয়ে আশাবাদী নন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঢাকার চানখাঁরপুল এলাকায় এক শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের গুলিতে নিহত ১৭ বছর বয়সী আনাস। তার মা সানজিদা খান দীপ্তি বলেন, আমাদের সন্তানরা রাস্তায় নেমেছিল একটি গণতান্ত্রিক ও সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্য। কিন্তু সেটাই তো আমরা পাচ্ছি না।
চোখেমুখে একরাশ হতাশা নিয়ে ৩৬ বছর বয়সী দীপ্তি বলেন, আমরা আশা করেছিলাম জুলাইয়ের হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে, সংস্কার হবে- কিন্তু তা সঠিকভাবে হচ্ছে না। যদি সেই ন্যায়ের দেশ না দেখি, তাহলে আমার সন্তানের আত্মত্যাগ কেন?ְ
তবে অনেকেই এখনো অন্তর্বর্তী সরকারে আস্থা রাখছেন।
নারায়ণগঞ্জে পুলিশের গুলিতে চেহারার বড় অংশ হারানো খোকন চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘কোনো অনুশোচনা নেই। আমি গর্বিত যে আমার আত্মত্যাগ একটি বৈষম্যমূলক শাসনের পতনে সাহায্য করেছে।’
বর্মণের মতে, দেশ এখন ভালো চলছে। তিনি বলেন, ‘পুরোনো দানবেরা রাতারাতি চলে যাবে না, কিন্তু আমরা আশাবাদী।’
উত্তরার বাসিন্দা ২১ বছর বয়সী টিকটকার আতিকুল গাজী। গত বছরের ৫ আগস্ট খুব কাছ থেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি বাম হাত হারান। কিন্তু এরপরও হার মানেননি। তিনি বলেন, আমার একটা হাত হারিয়েছি ঠিকই, কিন্তু জীবনটা আবার উৎসর্গ করতে প্রস্তুত। গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর তার একটি সেলফি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে একহাতে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে থাকা গাজী দেশের তরুণদের কাছে প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে ওঠেন।
তবে অনেকে এখন হতাশ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী বলেন, ওটা ছিল অভূতপূর্ব এক ঐক্যের মুহূর্ত। নতুন সরকারের প্রথম কাজ হওয়া উচিত ছিল সেই ঐক্য রক্ষা করা। কিন্তু তারা সেটা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
গত বছরের ২৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মিছিলে একটি কবিতা আবৃত্তি করেছিলেন তিনি। গত মাসে এক স্মরণসভায় তিনি বলেন, ঐক্য ছিল আন্দোলনের প্রাণ- আর আজ সেটাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে। যেসব ছাত্র, পেশাজীবী ও কর্মীজোট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পথ তৈরি করেছিল, সেই ঐক্য ভেঙে পড়তে শুরু করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই।
আওয়ামী লীগবিরোধী বিপুল জনমতকে কাজে লাগাতে চেয়ে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি দ্রুত নির্বাচন চেয়ে আসছে সরকারের পতনের দিন থেকেই। অন্যদিকে, ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের গড়া জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মতো দলগুলো বলছে, ভোটের আগে গভীর কাঠামোগত সংস্কার জরুরি।
এই বিপরীতমুখী দাবিগুলো এক ছাতার নিচে আনতে, চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি ইউনূস প্রশাসন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে। এই কমিশনের কাজ হলো বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ প্যানেলের দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবগুলো একত্র করে একটি অভিন্ন রাজনৈতিক রূপরেখা তৈরি করা। পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী যেকোনো দল বা জোটকে এই নীতিমালার প্রতি আনুষ্ঠানিক অঙ্গীকার করতে হবে।
তবে এ পর্যন্ত কমিশনের সভাগুলোতে মতপার্থক্য ও বিরোধের ছাপ স্পষ্ট। বিশেষত, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠন, উভয় কক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালু এবং সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগপ্রক্রিয়া থেকে প্রধানমন্ত্রীর একক ক্ষমতা হ্রাস নিয়ে দ্বিমত দেখা গেছে।
‘ইনকিলাব মঞ্চ’- এর মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী সতর্ক করে বলেন, সংস্কার ও ন্যায়বিচার ছাড়া নির্বাচন হলে দেশ আবারও স্বৈরতন্ত্রের মুখে পড়বে।
একদিকে পুলিশ বাহিনী এখনো গণদমন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বিতর্কিত, অন্যদিকে রাস্তায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী- যাদের হাতে গ্রেপ্তার, আটকে রাখা, এবং চরম পরিস্থিতিতে গুলি চালানোর মত বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত রাজনৈতিক সহিংসতায় অন্তত ৭২ জন নিহত ও ১ হাজার ৬৭৭ জন আহত হয়েছেন। একই সময়ে পুলিশের পাশাপাশি র্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীর বিরুদ্ধে ৮টি কথিত বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগও নথিভুক্ত হয়েছে।
বাংলাদেশে অন্যান্য অপরাধও উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত দেশে খুনের ঘটনা ঘটেছে এক হাজার ৫৮৭টি, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি। ডাকাতির ঘটনা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ৩১৮টিতে। আর নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে সহিংসতার মামলা ৯ হাজার ছাড়িয়েছে। অপহরণ এবং সশস্ত্র ছিনতাইয়ের মতো অপরাধেও উল্লেখযোগ্য ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে।
আল জাজিরা মাঠপর্যায়ের যেসব পুলিশ সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছে, তারা আরেকটি বড় সংকটের দিকে ইঙ্গিত করেছেন- গ্রামাঞ্চলে অনানুষ্ঠানিক রাজনৈতিক কাঠামোর ভেঙে পড়া।
কুড়িগ্রামের ভারত-সীমান্তবর্তী রৌমারী থানার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে, স্থানীয় বিরোধ নিষ্পত্তিতে পুলিশ প্রায়ই দলীয় নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করত। তারা একধরনের স্থানীয় রাজনৈতিক শৃঙ্খলা বজায় রাখত। সেই কাঠামো এখন নেই।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এখন বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন পক্ষ বাজার, পরিবহন কেন্দ্র এবং সরকারি ঠিকাদারিতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার তালেবুর রহমান বলেন, প্রতিদিনই আমাদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজপথে বিক্ষোভ সামাল দেওয়া। মনে হয় ঢাকা এখন একেবারে বিক্ষোভের শহর হয়ে গেছে। মানুষ সরকারি দপ্তরে ঢুকে পড়ে কেবল তাদের দাবি জানাতে।
তবে তিনি দাবি করেন, ২০২৪ সালের গণ-আন্দোলনের পরপর সময়ের তুলনায় এখন ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।
ইউনূস সরকারের মুখপাত্র শফিকুল আলমও ১৫ জুলাই সময় টেলিভিশনের এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সামগ্রিক পরিসংখ্যানের দিক থেকে যদি দেখা হয়, তাহলে বলা যায় পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, বহু মানুষ যারা আগে বছরের পর বছর বিচার পায়নি; এমনকি ২০২৪ সালের আন্দোলনের সময়ও নয়—তারা এখন মামলা করতে এগিয়ে আসছে। এই বিষয়ে অনেকেরই একমত হওয়ার মতো জায়গা আছে।
দেশটিতে কমেছে মুদ্রাস্ফীতিও। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে যেখানে এটি ছিল ১১ দশমিক ৭ শতাংশ, ২০২৫ সালের জুনে তা নেমে এসেছে ৮ দশমিক ৫ শতাংশে।
তবুও বেকারত্বের চিত্র উদ্বেগজনক। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্যমতে, বাংলাদেশের প্রায় ৩০ শতাংশ তরুণ এখন না চাকরিতে, না পড়াশোনায় যুক্ত।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ২০ শতাংশ শুল্ক বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাতের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। এতে আরও বড় সংকট তৈরি করতে পারে। এই খাতে কাজ করছে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক, যাদের জীবিকা এখন ঝুঁকির মুখে।