
অনলাইন ডেস্কঃ
বিএনপির চিকিৎসক সংগঠন ‘ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের’ (ড্যাব) নতুন নেতৃত্ব ঠিক করতে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে আজ। শনিবার (০৯ আগস্ট) রাজধানীর কাকরাইলে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজে এই কাউন্সিলে সরাসরি ভোটে চিকিৎসকরা তাদের নেতা নির্বাচন করবেন। ভোটগ্রহণ শুরু হবে দুপুর ১টায়, চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিজন কান্তি সরকার বলেন, কাউন্সিলের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। যথা সময়ে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। ড্যাবের নির্বাচনে পদসংখ্যা পাঁচটি: সভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি, মহাসচিব, কোষাধ্যক্ষ ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। এবারের নির্বাচনে ৩ হাজার ১৩১ জন ভোট দেবেন। হারুন-শাকিল প্যানেলের সভাপতি পদে অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, মহাসচিব পদে ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, সিনিয়র সহসভাপতি পদে ডা. আবুল কেনান, কোষাধ্যক্ষ পদে ডা. মো. মেহেদী হাসান এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদে ডা. এ কে এম খালেকুজ্জামান দিপু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
অন্যদিকে আজিজ-শাকুর প্যানেলের সভাপতি পদে অধ্যাপক ডা. এ কে এম আজিজুল হক, মহাসচিব পদে ডা. আব্দুস শাকুর খান, সিনিয়র সহসভাপতি পদে ডা. সাইফ উদ্দিন নিসার আহমেদ তুষার, কোষাধ্যক্ষ পদে ডা. তৌহিদ উল ইসলাম এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদে ডা. আবু মো. আহসান ফিরোজ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই দুই প্যানেল ছাড়া ডা. ওবায়দুল কবির সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বলে জানা গেছে। দুই প্যানেলের মধ্যে অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ ২০১৯ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ড্যাবের নেতৃত্বে ছিলেন। ডা. আজিজুল হক ২০০৫ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ড্যাবের সভাপতি ছিলেন।
ভোট নিয়ে অধ্যাপক হারুন আল রশীদ বলেন, আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি। বিগত সময়গুলোতে আমরাই মাঠে ছিলাম, আমাদের জয় হবেই। অধ্যাপক এ কে এম আজিজুল হক বলেন, আমি আশাবাদী, ইনশাআল্লাহ আমরা ভালো ফল করব। মাঠের অবস্থা ভালো। সর্বশেষ ড্যাবের ভোট হয়েছে ২০১৯ সালের ২৪ মে। সেই নির্বাচনে হারুন আল রশীদ সভাপতি ও আব্দুস সালাম মহাসচিব নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের ২৫ মে ড্যাবের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত ২৪ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করে বিএনপি।
হারুন-শাকিল প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা: নির্বাচন উপলক্ষে পরিচিতি অনুষ্ঠান ও ৩ স্তরের নির্বাচনী ইশতেহার এবং কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে ডা. হারুন-শাকিল নেতৃত্বাধীন প্যানেল। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন ড্যাবের এবার নির্বাচনে মহাসচিব প্রার্থী সদ্য সাবেক কোষাধ্যক্ষ ডা. মো. জহিরুল ইসলাম শাকিল।
তিনি বলেন, আমাদের প্যানেলের প্রার্থীরা প্রত্যেকেই গত ১৭ বছর খুনি হাসিনার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রাজপথে বিএনপির সহযোগী সংগঠন হিসেবে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি চিকিৎসকদের বিভিন্ন দাবি আদায়ে ও পেশাগত উৎকর্ষতায় ভূমিকা পালন করেছেন। দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে, করোনা মহামারি, ডেঙ্গু প্রতিরোধে ও বন্যায় জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সরকারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে আহতদের চিকিৎসায় রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের সর্বত্র আহত রোগীদের চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রেখেছেন। এ ছাড়া নিহতদের পরিবারকে বিভিন্ন সময় আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি আহত নেতাকর্মীদের চিকিৎসাসেবায় ডা. হারুন, ডা. সালাম ও ডা. শাকিলের নেতৃত্বে চিকিৎসকবৃন্দ সর্বদা সচেষ্ট ছিল। অনুষ্ঠানে হারুন-শাকিল প্যানেলের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডা. হারুন আল রশিদ বলেন, আমরা কাউকে সদস্য পদ থেকে বাদ দিইনি। এ নিয়ে একটা বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। যাদের সদস্যপদ বাতিল হয়েছে তারা ফ্যাসিবাদের সহযোগী। এ নিয়ে পরবর্তীতে ড্যাবের নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষ করেছেন। মৃত ব্যক্তিকে সদস্য রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর কোনো ভোটার তালিকা নির্ভুল নয়। আমাদের নেতা তারেক রহমান যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, সেভাবেই কাউন্সিল হতে যাচ্ছে, যারা বিগত আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে ছিলেন তাদের মাধ্যমে ড্যাব এগিয়ে যাবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ড্যাবের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ডা. এম এ সেলিম, সহসভাপতি ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, ড্যাবের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. সাঈদ মেহবুব উল কাদির, ডা. আদনান মাসুদ, ডা. রাকিবুল ইসলাম আকাশ প্রমুখ।