
অনলাইন ডেস্কঃ
ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জন্মতিথি ও শুভ জন্মাষ্টমী আজ শনিবার (১৬ আগস্ট)। যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবের মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করবেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
হিন্দু পুরাণ মতে, ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, বিশ্বাস পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটে।
তাদের আরও বিশ্বাস— দুষ্টের দমনে এভাবেই যুগে যুগে ভগবান মানুষের মাঝে নেমে আসেন এবং সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠা করেন।
এ উপলক্ষে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও ইসকনসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শনিবার সরকারি ছুটি। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনসহ বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলে সম্প্রচারিত হবে বিশেষ অনুষ্ঠান।
শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে— সকাল ৮টায় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় গীতাযজ্ঞ ও দুপুর ২টায় ঐতিহাসিক জন্মাষ্টমী মিছিল ও রাতে শ্রীকৃষ্ণ পূজা।
প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা
শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দেওয়া এক বাণীতে এ শুভেচ্ছা জানান তিনি। তথ্য অধিদফতরের এক বিবরণীতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ধর্মাবতার শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। সমাজে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় শ্রীকৃষ্ণ আজীবন ন্যায়, মানবপ্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। যেখানেই অন্যায়-অবিচার দেখেছেন, সেখানেই অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন শ্রীকৃষ্ণ। সৃষ্টিকর্তার বন্দনা ও সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় শ্রীকৃষ্ণের দর্শন ও মূল্যবোধ সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সবাইকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে।
তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির অনন্য বৈশিষ্ট্য। আবহমানকাল থেকে এ দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রীতির এ বন্ধনকে অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর। তিনি সমাজে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ভরপুর বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।