
যতোটুকু শুনেছি জেনেছি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় পার্টি নেতা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সবেক গভর্নর বর্তমান অর্থ উপদেষ্টা সালাহউদ্দিন আহমেদ, তারা ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী এবং ঘনিষ্ট বন্ধু। রাজনীতির বাইরেও তাদের একটা পারিবারিক ও ব্যক্তিজীবন রয়েছে। মাঝেমাঝে তারা পারিবারিক আড্ডাদেন। খুনসুটি করেন। এসব খুনসুটিতে তাদের অতীত বর্তমান দেশ বিদেশ পরিবার ব্যক্তিজীবন নানা কিছু নিয়েই আলোচনা হতে পারে। তারা যতো বড়ই হোন তাদেরও ব্যক্তিজীবন আছে, পারিবারিক জীবন আছে। কারণ তারাও মানুষ। এমন পারিবারিক আড্ডা বন্ধুত্বের আড্ডা সবারই হয়। সেখানে দল মত থাকে না। আমি আপনিও এমন আড্ডা দিই।
আমেরিকায় সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করেন বাংলাদেশের সাবেক একজন মাঝারি রেঙ্কের সেনাকর্মকর্তা, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও সালাউদ্দিন আহমেদের একটা ভিডিও পোস্ট করেছেন সামাজিক মাধ্যমে। তিনি দাবি করেছেন, তারা ষড়যন্ত্র করছেন। আর এই শ্রেণির সেনাকর্মকর্তারা যা যা ভাবেন, মাথায় যা ধরে তাই রঙচঙ লাগিয়ে প্রচার করছেন। মানে গুজব আর গালগল্প বলতে যা বুঝায় আর কি!
অথচ খোঁজ নিয়ে জেনেছি এই ভিডিওটি কয়েক বছর আগের। তাদের সহপাঠীদের এক আড্ডা ও পারিবারিক গেট টুগেদারের।
আমেরিকা, প্যারিস থেকে কিছু তথাকথিত অ্যাক্টিভিস্ট ইউটিউবার এমনসব গুজব ছড়াচ্ছে যা খুবই লজ্জাজনক ও বিপজ্জনক। এরা সবজান্তা, পাণ্ডিত্যের ভাব ধরে এমন আলোচনা করে মনে হয় বাংলাদেশে যারা বসবাস করে সব বোকাচোদা। কেউ কিচ্ছু জানে না, পড়াশোনা করে না।
এরা মানুষের চরিত্র হনন করে। হিংসা ছড়ায়,ঘৃণা ছড়ায়, সাম্প্রদায়িকতা ছড়ায়। মানুষকে ফাঁদে ফেলে চাঁদাবাজি করে। ভিউ বাণিজ্য করে।
এরা দেশে কোনো না কোনো অপরাধে বা দুর্নীতিতে জড়িয়ে দেশ ছেড়েছে। বিদেশে গিয়ে কেউ সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করে,কেউ টেক্সি চালায়,কেউ রেস্টুরেন্টে কাজ করে। দুনিয়ায় কোনো কাজই ছোট না। কিন্তু বিদেশে গিয়ে কাজকর্ম না করে চাঁপাবাজি করতে কে বলেছে? বিদেশ গেছো ডলার ইনকাম করতে,সেটা করো। সেখানে নিম্নমানের কাজ করলেও নিজ দেশে তা করবে না। এখানে সাহেব হয়ে থাকতে হবে,অফিসার হয়ে থাকতে হবে। আর বিদেশে সাহেবের বাথরুম পরিস্কার করে, কুকুর দেখাশোনা করার চাকরি করে আর দেশে এসে ভাব নেয়। এতো দ্বৈত চরিত্রের এরা।
আলোচিত এই সেনা কর্মকর্তা সম্পর্কে যা জানা গেলো তিনি, চাকরিতে থাকাকালে ক্যান্টনমেন্টে বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ি ভাঙ্গার নেতৃত্বে ছিলেন। আমেরিকায় গিয়ে তিনি এখন রাজনীতি বিশেষজ্ঞ, সামরিক বিশেষজ্ঞ, মহাপণ্ডিত। সত্য মিথ্যা গুজব চালিয়ে দেয় ইউটিউব আর ফেইসবুকে। উন্মুক্ত প্লাটফর্ম। কথা বলতে টাকা লাগে না। এদের আবার অনুসারীও আছে। যতো বেশি অনুসারী ততো বেশি ডলার এটা অনুসারীরা হয়তো বুঝে না। উগ্র আর নিম্নমানের কথাবার্তার দর্শক বেশি আমাদের দেশে। সেফুদার গালাগালি মুহুর্তে হাজার হাজার মানুষ রিচ করে। হিরো আলমের মিলিয়ন ভিউয়ার। নোংরা কথা লিখেন দেখবেন রিচ বেশি। শিক্ষামূলক কিছু লিখেন রিচ কম। এটাই আমাদের রুচি ও স্ট্যান্ডার্ড।
লেখক: শংকর মৈত্রের ফেস বুক পেজ থেকে নেয়া, সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্ট
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই লেখা একান্তই তার নিজস্ব, এর সাথে পত্রিকার সম্পাদকীয় পলিসির কোন মিল নেই