
নায়ক রাজ বললেই রাজ্জাক ভাইকে বুঝায়, অভিনয়ের বাইরেও তিনি অনেক গুনে গুনান্বিত ছিলেন, টেলিফিল্ম দেবদাস বাননোর বেশ কিছুদিন পরে তার কাকরাইল অফিসে গিয়েছিলাম, অভিনেতা প্রবীর মিত্র পরিচয় করিয়ে দিতেই তিনি অবলীলায় নির্মাতা শহিদুল ইসলাম মিন্টুর নাম মেনসন করে প্রশংসা করলেন, বললেন, তোমাদের দেবদাস অসম্ভব ভালো হয়েছে।
এমনকি নিজের ছেলে বাপ্পা দেবদাসে অভিনয় করা সত্বেও মাহফুজের প্রশংসা করলেন, পার্বতির চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তারিন, চুনিলাল চরিত্রে শহিদুজ্জামান সেলিমের অভিনয়ের প্রশংসা করলেন, আমি তো অবাক, পরে জানলাম, তিনি চ্যানেল আই তে দেবদাস প্রদর্শনের সময়ে টানা সময় ধরে দেখেছেন, শরত চন্দ্রের উপন্যাসের পরে তার আলাদা দুর্বলতা আছে।
আড্ডা দেবার সময়ে কথায় কথায় বললাম, তার কাছে অনেক টাকা পাই, কিছুটা অবাক হয়ে বললেন, কিসের? পরে বললাম ৭০ এর দশক থেকে আপনার শত শত ছবি টিকিট কেটে দেখেছি, উনি ফিল্মি অভিনয় স্টাইলে হো হো করে হাসলেন, বললেন, তোমাদের কারনেই আমি নায়ক রাজ, পরে মিষ্টি এনে নিজ হাতে খাইয়ে দিয়ে বললেন, টাকা শোধ হয়ে গেলো কিন্তু এবার।
এর কয়েক বছর পরে আমি আমার পরিবারসহ কক্সবাজার থেকে ইনানি যাচ্ছি, যাবার পথে ইজিবাইক ড্রাইভার পথেই থামিয়ে বলল, শ্যুটিং হচ্ছে ছবির, একটু নেমেই শুনলাম, ছবির কাস্টিং রাজ্জাক ভাই আর আলমগীর ভাই আছেন।
আলমগীর ভাই আমার এক টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন, সেই ভরসায় এগিয়ে গেলাম, আলমগীর ভাইয়ের সাথে হাত মেলালাম, বউ বাচ্চার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেই শট দিতে রাজ্জাক ভাই এসে হাজির, আলমগীর ভাইকে রাজ্জাক ভাই নিজেই বললেন, ও শাহীন, আমি ওকে চিনি, ও খুব ভালো ভালো কাজ করে।
অনেক দিন পরে রাজ্জাক ভাইয়ের সাথে দেখা, উনি আমার নাম মনে রেখেছেন, এটা আমার কাছে বিস্ময়কর ছিলো, বুকটা গর্বে ভরে গেল। এতো বড় বড় হিরোরা আমায় চিনে ফলে বউয়ের কাছেও দাম বেড়ে গেলো অটমেটিক, পরপারে ভালো থাকবেন রাজ্জাক ভাই, মৃত্যুবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা, আল্লাহ আপনাকে জান্নাত বাসি করুক।
লেখক: শাহীন রহমান, সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্ট,
সম্পাদক- প্রকাশক: প্রথম সময় নিউজ ডটকম