
অনলাইন ডেস্কঃ
ব্যাংকের পাশাপাশি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও চরম লুটপাট হয়েছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। ঋণের নামে লোপাট হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। যা এখন খেলাপি। এসব প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখে বেকায়দায় পড়েছেন গ্রাহকেরা। জমানো টাকা ফেরত দিতে পারছে না এসব প্রতিষ্ঠান।
এই অবস্থায় চরম সংকটে থাকা ৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, এফএএস ফাইন্যান্স, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, বিআইএসফি, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, পিপলস্ লিজিং, আভিভা ফাইন্যান্স, প্রাইম ফাইন্যান্স, প্রিমিয়ার লিজিং ও জিএসপি ফাইন্যান্স।
তালিকায় থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ৬০ থেকে ৯৯ শতাংশ। বছরের পর বছর এসব প্রতিষ্ঠানকে গুণতে হচ্ছে লোকসান।
যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতিষ্ঠান বন্ধ কোনও সমাধান নয়। এর ফলে নতুন করে জটিলতা তৈরি হতে পারে।
অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমদ বলেছেন, অবসানের বিকল্প…. আমি তো অবসান পছন্দই করি না। একীভূতকরণ, এতে আমি শতভাগ সমর্থন করি। অবসান কোনও সমাধান না। এটা আমেরিকায় আছে, ব্যাংক বন্ধ হয়ে যায়। ইউরোপে থাকতে পারে, ব্যাংক বন্ধ। কিন্তু এসব দেশে এটা চলবে না। এটা করলে লোক রাস্তায় নেমে যাবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মালিক পক্ষের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণেই সংকটে পড়েছে এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান। তাই প্রতিষ্ঠান বন্ধের আগে পরিচালনায় সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সাথে আমানতকারী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কী হবে সে বিষয়টি পরিস্কার করতে হবে।
সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ বলেছেন, যারা মালিকপক্ষ, যারা এটার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা করলো? দেখলাম না তো তাদের সম্পদগুলো টেকওভার করে তা বন্টন করে দিলো। অবসানের কথা বললে বলতে হবে হবে দুইটা জিনিস, একটা হলো আমানতকারীরা কতদিনের টাকা পাবে, উৎস পেমেন্ট করবো নাকি প্রিন্সিপালটা দিবো, প্রশ্ন কিন্তু এগুলো আসবে। দ্বিতীয় হলো যারা কর্মী আছে তাদের কী অবস্থায় আনা হবে?
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, যেসব প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়, তাদেরকেই বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখনও বন্ধের পদ্ধতি চূড়ান্ত হয়নি। তবে আমানতকারীদের স্বার্থের বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনায় নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বললেন, সিদ্ধান্ত হয়েছে যে থাকবে না। এদেরকে টিকিয়ে রাখার কোনও পন্থা এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে নাই। যেটা ব্যাংকের ক্ষেত্রে আছে। অতএব না থাকলে কোন কোন পদ্ধতি অনুসরণ করে অবসান করা হবে এবং আমানতকারী ও চাকরিজীবীদের কী হবে ওই ব্যাপারে তো এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ওটা প্রসেসের মধ্যেই অন্তর্ভূক্ত হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক কিন্তু বলেছে, আমানতকারীদের স্বার্থেই প্রতিষ্ঠানগুলো অবলুপ্ত করা প্রয়োজন।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়টি সরকারের ইচ্ছা এবং তহবিল যোগান দেয়ার ওপর নির্ভর করছে বলেও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।